ভোট দিয়ে যা বললেন ট্রাম্প
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে নিজের ভোট দিয়েছেন প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প।
মঙ্গলবার (৫ নভেম্বর) ফ্লোরিডার পাম সৈকতের নির্ধারিত ভোটকেন্দ্রে ভোট দেন তিনি।
এরপর সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন সাবেক প্রেসিডেন্ট। ট্রাম্প দাবি করেন এবারের নির্বাচনে বড় ব্যবধানে জিতবেন তিনি।
ট্রাম্প বলেন, আমি খুবই আত্মবিশ্বাসী। দেখে যা মনে হচ্ছে অসংখ্য রিপাবলিকান ভোট দিচ্ছেন। ভোটারদের লম্বা লাইন দেখে আমি গর্বিত। আমি শুনেছি আমরা খুবই ভালো করছি। এই নির্বাচনে কোনো হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হবে না ।
এবারের নির্বাচনে রিপাবলিকানদের হয়ে লড়ছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। অপরদিকে ডেমোক্র্যাটিকদের প্রতিনিধিত্ব করছেন কমালা হ্যারিস।
আরটিভি/এএএ
মন্তব্য করুন
প্রবল শক্তি নিয়ে ধেয়ে আসছে ঘূর্ণিঝড় ‘মিল্টন’, আঘাত হানবে যখন
মেক্সিকো উপকূলে অবস্থান করা ঘূর্ণিঝড় ‘মিল্টন’ আরও শক্তি সঞ্চয় করেছে। গ্রীষ্মমণ্ডলীয় ঘূর্ণিঝড়টি এখন ক্যাটাগরি ৫ এ পৌঁছানোর কাছাকাছি রয়েছে।
সোমবার (৮ অক্টোবর) এক প্রতিবেদনে আবহাওয়াবিদদের বরাত দিয়ে এ খবর জানিয়েছে মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ফ্লোরিডার উপসাগরীয় উপকূলে বুধবার (৯ অক্টোবর) রাতে আঘাত হানবে ঘূর্ণিঝড়টি। এরই মধ্যে ফ্লোরিডার মানুষকে সতর্ক করেছে কর্তৃপক্ষ।
আমেরিকার ন্যাশনাল হারিকেন সেন্টার জানিয়েছে, ঘূর্ণিঝড় ‘মিল্টন’ ঘন্টায় ১৫৫ মাইল বেগে অগ্রসর হচ্ছে। আর ২ মাইল অতিক্রম করলে এটি হারিকেন ক্যাটাগরি ৫এ পৌঁছাবে। চলতি বছরে ‘বেরিল’ এর পর এটি হবে দ্বিতীয় হারিকেনের আঘাত।
ফ্লোরিডার গভর্নর আসে রন ডিসান্টিস টাম্পা উপকূলে হারিকেন মিল্টনের আঘাত হানার আগে উপসাগরীয় এলাকার বাসিন্দাদের নিরাপদ আশ্রয়ে যাওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।
প্রসঙ্গত, সেপ্টেম্বরের শেষের দিকে আঘাত হানা মারাত্মক ও ধ্বংসাত্মক হারিকেন হেলেনের তাণ্ডব এবং ক্ষয়ক্ষতি এখনও কাটিয়ে উঠতে পারেনি দক্ষিণ-পূর্ব যুক্তরাষ্ট্রের রাজ্য ফ্লোরিডা। হারিকেন হেলেনের বাতাসের গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় ১৪০ মাইল। এরই মধ্যে আরেক হারিকেন মিল্টন এগিয়ে আসছে রাজ্যটির দিকে।
আরটিভি/এসএপি
১০০ বছরের সবচেয়ে বিধ্বংসী ঘূর্ণিঝড় হতে পারে ‘মিল্টন’
গত ১০০ বছরের মধ্যে সবচেয়ে বিধ্বংসী ঝড় হতে পারে ঘূর্ণিঝড় ‘মিল্টন’। এটি স্থানীয় সময় বুধবার (৯ অক্টোবর) রাতে যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডায় আঘাত হানতে পারে।
এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে বিবিসি।
প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, বর্তমানে ‘মিল্টন’ অঙ্গরাজ্যটির টম্পা থেকে ৫২০ মাইল দক্ষিণ-পশ্চিমে অবস্থান করছে। এরই মধ্যে এটি ক্যাটাগরি ৫ মাত্রায় ঘূর্ণিঝড়ে রুপ নিয়েছে। মানুষ যেন এটির শক্তি বুঝতে পারে এ জন্য বিভিন্ন সতর্কতা দেওয়া হচ্ছে।
যুক্তরাষ্ট্রের আবহাওয়া অফিসের বরাত দিয়ে বিবিসি জানিয়েছে, মিল্টনের প্রভাবে উপকূলীয় এলাকায় ১০ থেকে ১৫ ফুট উঁচু ঢেউয়ের সৃষ্টি হতে পারে। এর প্রভাবে ফ্লোরিডার মধ্যাঞ্চলে ব্যাপক বৃষ্টিপাত ও আকস্মিক বন্যা দেখা দিতে পারে। সর্বশেষ এটি ক্যাটাগরি ৫ এ পৌঁছেছে। ঝড়টি মেক্সিকো উপসাগর হয়ে ফ্লোরিডায় আঘাত হানবে। যদি ঝড়টির গতিপথ একই রকম থাকে, এটি হবে গত ১০০ বছরের মধ্যে সবচেয়ে বিধ্বংসী। মিল্টন এখনো ফ্লোরিডা উপকূলের জন্য বিপর্যয়কর ঝুঁকি হিসেবে অবস্থান করছে।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন মানুষকে সতর্ক করে বলেছেন, ‘মিল্টন গত ১০০ বছরে যুক্তরাষ্ট্রে আঘাত হানা সবচেয়ে ভয়াবহ ঝড় হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘আমি ফ্লোরিডাবাসীদের বাড়িঘর ছেড়ে নিরাপদ স্থানে যাওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি। এটি এখন জীবন-মৃত্যুর বিষয়।’
এদিকে ফ্লোরিডার টম্পার মেয়র জেন ক্যাস্টর পশ্চিম উপকূলের সব মানুষকে বাধ্যতামূলকভাবে সরে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছে। এর ফলে রাস্তায় ব্যাপক যানজট দেখা দেয়।
এরপরও যারা যাচ্ছেন না তাদেরকে মেয়র জেন ক্যাস্টর বলেছেন, ‘আপনারা যদি নির্দেশনা অনুযায়ী সরে না যান, তাহলে আপনারা নিশ্চিতভাবে মারা যাবেন। মানুষকে সরে যেতে হবে। সত্যি বলতে, আমি আমার জীবনে এমন কিছু আগে কখনো দেখিনি।’
আরটিভি/এসএপি
ভারতে বসে শেখ হাসিনার কর্মকাণ্ড প্রসঙ্গে যা জানাল যুক্তরাষ্ট্র
ভারতের সাথে প্রায়ই বাংলাদেশ ইস্যু আলোচনায় থাকে বলে জানিয়েছেন মার্কিন স্টেট ডিপার্টমেন্টের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার।
স্থানীয় সময় মঙ্গলবার (৮ অক্টোবর) নিয়মিত সংবাদ সম্মেলনে এক সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে এ বিষয়ে কথা বলেন তিনি।
বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এখন ভারতে বসে বাংলাদেশকে অস্থিতিশীল করতে চাইছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এ বিষয়ে ভারতের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের কোন আলোচনা হয়েছে কিনা?
সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার বলেন, ‘আমি আপনাকে বলতে পারি, ভারত সরকারের কর্মকর্তাদের সঙ্গে আমাদের বৈঠক চলাকালে আঞ্চলিক ইস্যুতে কথা বলার সময় প্রায়শই বাংলাদেশ প্রসঙ্গ উঠে আসে। এর বাইরে এই ইস্যুতে সুনির্দিষ্টভাবে বলার মতো কিছু আমার কাছে নেই।’
বাংলাদেশের সঙ্গে বাইডেন প্রশাসন দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ককে কীভাবে এগিয়ে নিতে চাচ্ছে সে বিষয়ে মিলারের কাছে জানতে চান ওই সাংবাদিক।
জবাবে ম্যাথিউ মিলার বলেন, ‘অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা, গণতন্ত্র, নিরাপত্তা ও রোহিঙ্গা শরণার্থীর মতো চ্যালেঞ্জগুলোকে সামনে রেখে আমরা বাংলাদেশ সরকারের সাথে কাজ চালিয়ে যাচ্ছি। পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিংকেন বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূসের সাথে একটি ফলপ্রসূ বৈঠক করেছেন এবং এই সমস্ত বিষয়ে অগ্রগতি অব্যাহত রাখার জন্য আমরা উন্মুখ।’
আরটিভি/এসএপি-টি
যেভাবে নির্বাচিত হন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট
আর মাত্র এক সপ্তাহ বাকি। এরপর যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন। আগামী চার বছরের জন্য নিজেদের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন করবেন মার্কিন জনগণ। এই ভোট আর তার ফলের দিকে নজর থাকবে সারাবিশ্বের।
মার্কিন রাজনীতিতে সবচেয়ে প্রভাবশালী দল মাত্র দুটি–রিপাবলিকান ও ডেমোক্রেটিক পার্টি। সাধারণত এই দুই দলের যেকোনো একটি দল থেকে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন। অবশ্য ছোট ছোট কিছু রাজনৈতিক দল যেমন লিবার্টারিয়ান, গ্রিন, ইন্ডিপেনডেন্ট পার্টি–তারাও কখনো কখনো প্রেসিডেন্ট পদে প্রার্থী মনোনয়ন ঘোষণা করে। রিপাবলিকান পার্টি একটি রক্ষণশীল দল হিসেবে পরিচিত। এ দলের মধ্যে উল্লেখযোগ্য সাবেক প্রেসিডেন্ট ছিলেন আব্রাহাম লিঙ্কন, জর্জ ডাব্লিও বুশ ও ডোনাল্ড ট্রাম্প। অপরদিকে ডেমোক্রেটিক দল তুলনামূলকভাবে উদারনৈতিক রাজনৈতিক দল। দলটি থেকে উল্লেখযোগ্য সাবেক প্রেসিডেন্ট ছিলেন জন এফ কেনেডি, বিল ক্লিনটন, বারাক ওবামা এবং বর্তমান প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন।
বর্তমানে ডেমোক্রেটিক দলের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের বয়স ৮০ বছর। বয়স কোনো ফ্যাক্টর নয় বলে ২০২৪ সালে পুনর্নির্বাচনী প্রস্তুতিও তিনি শুরু করেছিলেন। কিন্তু গত জুলাইয়ে বাইডেন নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়িয়ে ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিসকে সমর্থন দেন। মূলত এরপর থেকেই উভয় শিবিরে জোর প্রচার শুরু হয়।
তবে প্রেসিডেন্ট কে হবেন, সেটি নির্ধারণ হবে আগামী ৫ নভেম্বরের নির্বাচনে। কীভাবে এই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়, তা নিয়ে কিছু প্রশ্নের উত্তর থাকছে এই লেখায়।
কারা প্রার্থী হতে পারেন
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রার্থী হতে সংবিধান অনুযায়ী তিনটি শর্ত পূরণ করতে হবে। প্রার্থীকে জন্মসূত্রে যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক হতে হবে, বয়স হতে হবে অন্তত ৩৫ বছর এবং ১৪ বছর যুক্তরাষ্ট্রে বসবাস করতে হবে। তবে মার্কিন সেনাবাহিনীর সদস্যদের জন্য শেষ শর্তটির ব্যতিক্রম রয়েছে।
প্রার্থীদের যোগ্যতা
ইলিনয় স্টেটের ডেপল বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ওয়েন স্টেগার ডয়চে ভেলেকে বলেন, প্রাপ্তবয়স্ক যেকোনো নাগরিক প্রেসিডেন্ট প্রার্থী হতে পারেন। এমনকি অপরাধী সাব্যস্ত হওয়া ব্যক্তিরও প্রার্থী হতে বাধা নেই। স্টেগার জানান, যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধানে প্রকৃতপক্ষে আলাদা বিধান রয়েছে। যাতে রাজনৈতিক বন্দীরা প্রার্থী হওয়া থেকে বঞ্চিত না হন।
যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধানের ১৪তম সংশোধনীতে রাজনৈতিক পদে থাকা ব্যক্তি দেশের বিরুদ্ধে বিদ্রোহে যুক্ত হলে বা শত্রুদের সহায়তা করলে তিনি প্রেসিডেন্ট প্রার্থী হতে পারবেন না। কিন্তু আসন্ন নির্বাচনে এই ধারার প্রভাবের সম্ভাবনা তেমন দেখছেন না স্টেগার।
প্রাইমারি ও ককাস কী?
নির্বাচনে লড়াইয়ের ময়দান উন্মুক্ত থাকলেও প্রাইমারি ও ককাসের মাধ্যমে মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতায় প্রার্থীর সংখ্যা কমিয়ে আনা হয়। এই দুই পদ্ধতির মাধ্যমে দলগুলো তাদের প্রার্থী বাছাই করে। নির্বাচনী বছরের বসন্তের শুরুর দিকে অঙ্গরাজ্য পর্যায়ে এই প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়। স্বাধীনভাবে কেউ প্রার্থী না হলে কোনো একটি রাজনৈতিক দলের অধীনে তাঁকে নিজ অঙ্গরাজ্যে নিবন্ধন করতে হয়।
প্রাইমারিতে গোপন ব্যালটের মাধ্যমে দলের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। ককাস প্রক্রিয়াটি আরও জটিল। এ জন্য অঙ্গরাজ্যগুলোতে রাজনৈতিক দলের সদস্যরা একত্র হন। সেখানে তারা ভোটাভুটির মাধ্যমে নিজেদের প্রার্থী বাছাই করেন।
অঙ্গরাজ্য ও দলভেদে প্রাইমারি ও ককাসের ভিন্নতা থাকলেও মূল লক্ষ্য একই। প্রার্থীর সমর্থন নির্ধারণ ও সাধারণ নির্বাচনের জন্য একজন প্রার্থী বাছাই করা।
নির্বাচনে কী ঘটে
জাতীয় কনভেনশনের পরই নির্বাচনের উত্তাপ শুরু হয়। নির্বাচনের দিনে দেশজুড়ে কয়েক হাজার শহরে ভোট গ্রহণ চলে। নিবন্ধিত যেকোনো মার্কিন নাগরিক এই নির্বাচনে ভোট দিতে পারেন।
জাতীয় কনভেনশনের ভূমিকা
রাজ্য পর্যায়ে প্রাইমারি ও ককাস শেষ হলে রাজনৈতিক দলগুলো জাতীয় কনভেনশনের (সম্মেলন) মাধ্যমে আনুষ্ঠানিকভাবে প্রেসিডেন্ট প্রার্থী ও তার রানিংমেট বা ভাইস প্রেসিডেন্ট প্রার্থী বাছাই করে।
কনভেনশনে যুক্তরাষ্ট্রের ৫০টি রাজ্য থেকে আসা ডেলিগেটরা (প্রতিনিধি) প্রেসিডেন্ট প্রার্থী বাছাইয়ে ভোট দেন। একজন প্রার্থীকে মনোনয়ন পেতে সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোট পেতে হয়।
ডেলিগেটদের মধ্যেও দুটি ভাগ রয়েছে। ডেমোক্র্যাটদের ক্ষেত্রে বলা হয় প্লেজড বা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ এবং আনপ্লেজড বা অপ্রতিশ্রুতিবদ্ধ। রিপাবলিকানদের ক্ষেত্রে বাউন্ড বা বাধ্যতামূলক এবং আনবাউন্ড বা বাধ্যতামূলক নন। প্রতিশ্রুতিবদ্ধ/বাধ্যতামূলক ডেলিগেটরা অঙ্গরাজ্য পর্যায়ে প্রাইমারিতে জিতে আসা প্রার্থীদেরই শুধু ভোট দিতে পারেন।
অন্যদিকে অপ্রতিশ্রুতিবদ্ধ/বাধ্যতামূলক নন এমন ডেলিগেটরা নিজেদের পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিতে পারেন। ডেমোক্র্যাট কনভেনশনে অপ্রতিশ্রুতিবদ্ধ ডেলিগেটরা দ্বিতীয় রাউন্ড থেকেই শুধু ভোট দিতে পারেন।
চলতি বছরের জুলাইতে বর্তমান প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন নির্বাচনে নিজের প্রার্থিতা প্রত্যাহার করে ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিসকে সমর্থন দেন। সে সময় যেসব ডেমোক্র্যাট ডেলিগেট আগে বাইডেনকে ভোট দিয়েছিলেন, তারা ন্যাশনাল কনভেনশনের প্রার্থীদের যে কাউকে বেছে নেওয়ার সুযোগ পান। কেননা প্রাইমারি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে যে প্রার্থীকে তারা বেছে নিয়েছিলেন, তিনি আর নির্বাচনে লড়ছেন না। এ ক্ষেত্রে বেশির ভাগই হ্যারিসের পক্ষে ভোট দিয়েছেন, যে কারণে তিনিই ডেমোক্র্যাট প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে লড়ছেন।
ইলেকটোরাল কলেজ
সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোট নয়, বরং মার্কিন প্রেসিডেন্ট কে হবেন, তা নির্ধারণ করে ‘ইলেকটোরাল কলেজ’। ইলেকটোরাল কলেজ নামের ব্যবস্থায় ৫৩৮ জন ইলেকটর নির্বাচিত হন। তারাই শেষমেশ নির্ধারণ করবেন, যুক্তরাষ্ট্রের পরবর্তী প্রেসিডেন্ট কে হবেন।
ইলেকটোরাল কলেজে ৫০টি অঙ্গরাজ্যের নির্দিষ্টসংখ্যক প্রতিনিধি থাকবেন। যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেসের উভয় কক্ষ মিলিয়ে রাজ্যটির যত প্রতিনিধি, সেটাই হলো তার ইলেকটরদের সংখ্যা।
হাউস অব রিপ্রেজেনটেটিভসে (কংগ্রেসের নিম্নকক্ষ প্রতিনিধি পরিষদ) একটি রাজ্যের প্রতিনিধি সংখ্যা নির্ভর করে রাজ্যটির জনসংখ্যার ওপর। অপর দিকে সিনেটে প্রতি রাজ্যের দুটি করে আসন থাকে। সব মিলিয়ে ৫০টি রাজ্যের ৪৩৫ জন রিপ্রেজেন্টেটেটিভ ও সেই সঙ্গে ১০০ জন সিনেটর। এ ছাড়া ডিস্ট্রিক্ট অব কলম্বিয়ার তিনজন ইলেকটর। সব মিলিয়ে ৫৩৮টি ইলেকটোরাল কলেজ ভোট। জনসংখ্যার দিক থেকে ক্যালিফোর্নিয়ায় সবচেয়ে বেশি ৫৪টি ইলেকটোরাল ভোট রয়েছে। অপর দিকে ভারমন্টের সর্বসাকল্য তিনটি ইলেকটোরাল ভোট রয়েছে।
নির্বাচনে জিততে হলে কোনো প্রেসিডেন্ট প্রার্থীকে সংখ্যাগরিষ্ঠ বা অন্তত ২৭০টি ইলেকটোরাল ভোট পেতে হবে। মেইন আর নেব্রাস্কা ছাড়া বাকি অঙ্গরাজ্যগুলোতে ‘উইনার টেকস অল’ ভিত্তিতে ইলেকটোরাল ভোট নির্ধারিত হয়। অর্থাৎ কোনো প্রেসিডেন্ট প্রার্থী যে রাজ্যে এগিয়ে থাকবেন, তিনি সেই রাজ্যের সব কজন ইলেকটরের সমর্থন পাবেন।
আরটিভি/একে
নির্বাচিত হলে বিদেশে যুদ্ধে লড়বে না যুক্তরাষ্ট্র, প্রতিশ্রুতি ট্রাম্পের
সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ঘোষণা করেছেন, আসন্ন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে বিজয়ী হলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বিদেশে কোনো যুদ্ধ করবে না এবং কোনো মার্কিন সেনাকে বিদেশে পাঠানো হবে না।
তিনি বলেছেন, বর্তমান প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের শাসনামলে যতগুলো আন্তর্জাতিক সংকটে জড়িয়েছে যুক্তরাষ্ট্র, সেসবের প্রত্যেকটির সমাধান করবেন তিনি এবং এ ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার দেবেন ইউক্রেন ও গাজা সংঘাতকে।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ‘ব্যাটলগ্রাউন্ড’ হিসেবে পরিচিত পেনসিলভানিয়ার এক সমাবেশে স্থানীয় সময় শনিবার (২৬ অক্টোবর) বক্তৃতা দেওয়ার সময় এসব কথা বলেন ট্রাম্প।
তিনি বলেন, যদি কমালা হ্যারিস নির্বাচনে জয়ী হয়ে আগামী চার বছরের জন্য ক্ষমতা গ্রহণ করেন, তাহলে মধ্যপ্রাচ্য অন্তত আগামী চার দশক পর্যন্ত জ্বলবে এবং আমাদের যেসব সন্তানদের মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন সেনাঘাঁটিতে পাঠানো হয়েছে, তারা বেঘোরে মারা পড়বে।
‘তাই কমালাকে ক্ষমতায় পাঠানোর অর্থ হলো লাখ লাখ মার্কিন তরুণ-তরুণীর জীবন কে ঝুঁকিতে ফেলা। আমাদের ছেলে-মেয়েরা এমন সব দেশে যুদ্ধ করতে গেয়ে মারা যাচ্ছে, যেসব দেশের নামই হয়তো অনেক মার্কিন নাগরিক শোনেননি।’
ট্রাম্প প্রতিশ্রুতি দিয়ে বলেন, আমাকে নির্বাচিত করলে, কোনো অপ্রয়োজনীয় ও দীর্ঘস্থায়ী যুদ্ধে মার্কিন সেনাদের পাঠানো হবে না। আপনারা আপনাদের সন্তানদের কাছেই রাখবেন, তাদের দূর দেশে জীবন হারানোর জন্য পাঠানো হবে না।
নির্বাচনী প্রচারণা সভায় তিনি আরও বলেন, আমি আরও প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি, বাইডেন শাসনামলের চার বছরে যতগুলো আন্তর্জাতিক সংকটে যুক্তরাষ্ট্র জড়িয়েছে, প্রতিটি থেকে আমি এই দেশকে বের করে আনব। সবার আগে গুরুত্ব দেওয়া হবে ইউক্রেন এবং গাজা সংঘাতের ওপর।
আগামী নভেম্বরে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন হবে। সেই নির্বাচনে রিপাবলিকান পার্টির প্রার্থী হয়েছেন ট্রাম্প। অন্যদিকে ক্ষমতাসীন ডেমোক্রেটির পার্টির প্রার্থী দেশটির বর্তমান ভাইস প্রেসিডেন্ট কমালা হ্যারিস। সূত্র : আরটি
আরটিভি/একে-টি
ছাত্রলীগ নিষিদ্ধ ও ২৫২ এসআই বহিষ্কার প্রসঙ্গে যা বললো যুক্তরাষ্ট্র
বাংলাদেশের জনগণের মত প্রকাশ ও সমাবেশের স্বাধীনতার মতো মৌলিক স্বাধীনতা চর্চায় বিশ্বাস করে যুক্তরাষ্ট্র। ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করে বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের প্রজ্ঞাপন জারির প্রসঙ্গে করা এক প্রশ্নে এমনই জবাব দেন মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার।
স্থানীয় সময় সোমবার (২৮ অক্টোবর) নিয়মিত সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের এ পদক্ষেপের পাশাপাশি সম্প্রতি ২৫২ জন ক্যাডেট এসআইকে বহিষ্কারের বিষয়েও প্রতিক্রিয়া জানতে চাওয়া হয় ম্যাথিউ মিলারের কাছে।
সংবাদ সম্মেলনে এক সাংবাদিক প্রশ্ন রাখেন, বাংলাদেশে সন্ত্রাসবিরোধী আইন ব্যবহার করে ছাত্রলীগ ও ছাত্রলীগের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের গ্রেপ্তার করা হচ্ছে। বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার সম্প্রতি এই সংগঠনকে নিষিদ্ধ করেছে। বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক স্বাধীনতা ও রাজনৈতিক মত প্রকাশের ওপর এমন নিষেধাজ্ঞার প্রভাবকে যুক্তরাষ্ট্র কীভাবে দেখে? বাংলাদেশে ন্যায্য রাজনৈতিক প্রক্রিয়া ও নাগরিক স্বাধীনতাকে সমর্থন করার জন্য কী পদক্ষেপ নেবে যুক্তরাষ্ট্র?
এর জবাবে ম্যাথিউ মিলার বলেন, আমরা বাংলাদেশের জনগণের মত প্রকাশ, সমাবেশের স্বাধীনতার মতো মৌলিক স্বাধীনতা চর্চায় বিশ্বাস করি। বাংলাদেশে ক্ষমতাসীন দল যেই থাকুক না কেন, আমাদের বিশ্বাস এটিই এবং আমরা এই মঞ্চ থেকে তা বহুবার স্পষ্ট করেছি।
এরপর মিলারের সামনে প্রশ্ন রাখা হয়, বাংলাদেশে ২৫২ জন ট্রেইনি পুলিশ সাব-ইন্সপেক্টরকে (এসআই) চূড়ান্ত নিয়োগ থেকে বরখাস্ত করা হয়েছে। অভিযোগ রয়েছে, তাদের মধ্যে যত হিন্দু ট্রেইনি এসআই ছিলেন, তাদের সবাইকে বাদ দেওয়া হয়েছে। বাংলাদেশের নিয়োগ প্রক্রিয়ায় ধর্মীয় বৈষম্যের বিষয়ে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের কোনো প্রতিক্রিয়া আছে কি না।
জবাবে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র বলেন, আমি এই বিষয়ক প্রতিবেদনটি দেখিনি। তবে, আমরা বাংলাদেশে বা বিশ্বের যে কোনো জায়গায় যে কোনো ধর্মীয় বৈষম্যের বিরোধিতা করবো।
তাকে আবারও প্রশ্ন করা হয়, স্টেট ডিপার্টমেন্ট কীভাবে বাংলাদেশের সরকারি চাকরিতে অন্তর্ভুক্তিমূলক ও বৈষম্যহীন নিয়োগের অনুশীলন সমর্থন করার জন্য বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কাজ করছে?
মিলার বলেন, এ প্রসঙ্গে আমি আগে যা বলেছি, তার সঙ্গে যুক্ত করার জন্য নতুন কিছু নেই।
এ ধরনের ঘটনা যুক্তরাষ্ট্র-বাংলাদেশ সম্পর্ককে প্রভাবিত করবে কি না- এমন প্রশ্নের জবাবে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র প্রশ্নকর্তাকে বলেন, আপনি আমাকে এমন একটি প্রতিবেদন সম্পর্কে অনুমানমূলক উত্তর দিতে বলছেন, যা আমি দেখিনি। আমি এমনটা করতে অস্বীকৃতি জানাচ্ছি।
এরপর প্রশ্নকারী জানতে চান, চলতি মাসের শেষ সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্র সফরে আসেন বাংলাদেশের পররাষ্ট্র সচিব। তিনি ডেপুটি সেক্রেটারি ভার্মা, আন্ডার সেক্রেটারি জন বাস ও অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি ডোনাল্ড লু ছাড়াও এনএসসি ও গ্লোবাল অ্যান্টি-করাপশন কমিশনের প্রতিনিধিদের সঙ্গে মতবিনিময় করেছিলেন। এই গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক ও বাংলাদেশের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্র তার সম্পর্ক কীভাবে পুনর্মূল্যায়ন করছে, সে সম্পর্কে আপনার কাছে কি কোনো তথ্য আছে?
মিলার জবাব দেন, এ বিষয়ে আমার কিছু বলার নেই।
আরটিভি/এসএইচএম
যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচন: কে এগিয়ে, ট্রাম্প নাকি কমলা
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের বাকি আর মাত্র কয়েক দিন। দেশটির ভোটাররা আগামী ৫ নভেম্বর তাদের পরবর্তী প্রেসিডেন্ট নির্বাচন করতে ভোট দেবেন। ২০২০ সালে সর্বশেষ মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জয়ী হয়েছিলেন জো বাইডেন। তিনি এবারও নির্বাচনে প্রার্থী ছিলেন।
কিন্তু গত জুলাইয়ে প্রচারণার শেষে এসে তিনি সরে দাঁড়ান ও কমলা হ্যারিসকে সমর্থন দেন। এখন বড় প্রশ্ন হলো, এবার কি যুক্তরাষ্ট্র ইতিহাসে প্রথমবারের মতো নারী প্রেসিডেন্ট পাবে, নাকি দ্বিতীয় মেয়াদে জয় পেয়ে ক্ষমতায় বসবেন ডোনাল্ড ট্রাম্প।
যেহেতু নির্বাচনের দিনক্ষণ ঘনিয়ে আসছে। ভোটারদেরও এই নির্বাচন নিয়ে আগ্রহ রয়েছে। হোয়াইট হাউসে যাওয়ার দৌড়ে কে এগিয়ে, সেসব বিষয়ে নজর রয়েছে সবার।
কে এগিয়ে এই নির্বাচনে?
শুরু থেকে প্রার্থী হিসেবে প্রচারণা চালাচ্ছিলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। কিন্তু গত জুলাইয়ের শেষ দিকে প্রার্থী ঘোষণার পর নির্বাচনের মাঠে নামেন কমলা হ্যারিস। এসেই কমলা ছোট একটা লিড নিয়েছেন ট্রাম্পের চেয়ে।
সম্প্রতি এবিসি নিউজের এক জরিপে দেখা গেছে, ৪৮ শতাংশ সমর্থন নিয়ে এগিয়ে আছেন কমলা, বিপরীতে মাত্র ১ শতাংশ কম সমর্থন ডোনাল্ড ট্রাম্পের। নির্বাচনের প্রচারণার প্রথম দিকে কিছুটা হোঁচট খেয়েছিলেন কমলা। পরে আগস্টের শেষে এসে তিনি ৪ পয়েন্ট নিয়ে এগিয়ে যান।
গত ১০ সেপ্টেম্বর এই দুই প্রেসিডেন্ট প্রার্থীর মধ্যে যে বিতর্ক অনুষ্ঠিত হয় তা প্রায় ৭০ মিলিয়ন মানুষ দেখেছিল। ওই বিতর্কের পর দুজনেরই জনপ্রিয়তা তুলনামূলক স্থিতিশীল ছিল।
গত কয়েক দিনে ট্রাম্প ও হারিসের মধ্যে এই ব্যবধান আরো কমে আসছে। বিভিন্ন জরিপে সেসব চিত্র অনেকটাই স্পষ্ট হচ্ছে। যদিও এই ধরনের জরিপ কোনো ভবিষ্যদ্বাণী প্রদান করা বা কারো জনপ্রিয়তা যাচাইয়ের সঠিক মাপকাঠি নয়। কেননা ইলেকটোরাল কলেজ পদ্ধতিতে অনুষ্ঠিত হয় যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচন। যেখানে প্রতিটি অঙ্গরাজ্যে তার জনসংখ্যার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখেই ভোট অনুষ্ঠিত হয়। মোট ৫৩৮টি ইলেকটোরাল কলেজের মধ্যে যে প্রার্থী ২৭০টি বা তারও বেশি ভোট পাবেন, তিনিই প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হবেন।
এদিকে যুক্তরাষ্ট্রের ৫০টি অঙ্গরাজ্য রয়েছে। কিন্তু প্রায় সব সময় একই দলকে ভোট দেন কিছু কিছু অঙ্গরাজ্যের ভোটাররা। আবার এমন কিছু অঙ্গরাজ্য আছে, যেখানে দুই দলের প্রার্থীদেরই জয় পাওয়ার সুযোগ আছে। এগুলো এমন জায়গা, যেখানে কেউ এগিয়ে থাকলে নির্বাচনে জয়ী হবেন এবং পিছিয়ে পড়লে হেরে যাবেন। এই অঙ্গরাজ্যগুলো যুদ্ধক্ষেত্র অঙ্গরাজ্য বা সুইং স্টেট হিসেবে পরিচিত।
অন্যদিকে মার্কিন নির্বাচনে রিপাবলিকান দুর্গ বলে পরিচিত অঙ্গরাজ্যগুলোকে বলা হয় ‘রেড স্টেট’ বা ‘লাল অঙ্গরাজ্য’। আর ডেমোক্র্যাটদের প্রাধান্য পাওয়া অঙ্গরাজ্যগুলোকে বলা হয় ‘ব্লু স্টেট’ বা ‘নীল অঙ্গরাজ্য’।
ফলে প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থীরা নির্দিষ্ট কিছু ‘সুইং স্টেটের’ দিকে নজর দেন, যেখানে ভোট কোন পার্টির পক্ষে যাবে, তা নির্দিষ্ট করে বোঝা যায় না।
সুইং স্টেটগুলোতে কে জিতছেন?
এবারের মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে সুইং স্টেট খ্যাত এমন সাতটি অঙ্গরাজ্যকে মূল লড়াইয়ের কেন্দ্র ভাবা হচ্ছে, যেগুলোতে হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের আভাস পাওয়া যাচ্ছে। সেগুলোতে কেউ এগিয়ে বা পিছিয়েও নেই।
নির্বাচনী প্রচারণায় নামার পর থেকে কমলা হ্যারিস কিছু অঙ্গরাজ্যে পরিবর্তন আনতে পেরেছেন বটে, কিন্তু জাতীয় জরিপগুলো সব অঙ্গরাজ্যের পুরোপুরি চিত্র প্রতিফলিত করে না। আরিজোনা, জর্জিয়া, নেভাডা ও নর্থ ক্যারোলাইনায় আগস্টের শুরু থেকে বেশ কয়েকবার লিড হাতবদল হলেও এই মুহূর্তে সবগুলোতেই ট্রাম্প সামান্য ব্যবধানে এগিয়ে রয়েছেন। অন্য তিনটি অঙ্গরাজ্য—মিশিগান, পেনসিলভানিয়া ও উইসকনসিনে কমলা আগস্টের শুরু থেকে ২ বা ৩ পয়েন্টে এগিয়ে ছিলেন।
কিন্তু সাম্প্রতিক জনমত জরিপে পেনসিলভানিয়ায় শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বিতার আভাস পাওয়া যাচ্ছে। সেখানে ডোনাল্ড ট্রাম্প এখন সামান্য ব্যবধানে এগিয়েও আছেন। ২০১৬ সালে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জয়ের আগে মিশিগান, পেনসিলভানিয়া ও উইসকনসিন—তিনটি অঙ্গরাজ্যই ডেমোক্র্যাটদের শক্ত ঘাঁটি ছিল। এ তিন অঙ্গরাজ্যই ২০১৬ সাল পর্যন্ত ঐতিহ্যগতভাবে ডেমোক্রেটিক পার্টির প্রার্থীদের শক্ত ঘাঁটি ছিল। তবে ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার মধ্য দিয়ে সেগুলো রিপাবলিকানদের পক্ষ নেয়। যদিও বাইডেন ২০২০ সালে সেগুলো ফেরত আনেন এবং কমলা যদি এ অঙ্গরাজ্যগুলোয় নিজের প্রতিনিধিত্ব তৈরি করতে পারেন তাহলে নির্বাচনে জয়লাভ করার সম্ভাবনা রয়েছে।
কমলা ডেমোক্র্যাট প্রার্থী মনোনীত হওয়ার পর থেকে নির্বাচনী লড়াইয়ে কিছু পরিবর্তন লক্ষ করা গেছে। কখনো কখনো কোনো কোনো অঙ্গরাজ্যে ৫ শতাংশ পয়েন্টের ব্যবধানেও ট্রাম্পকে পেছনে ফেলেছিলেন। পেনসিলভানিয়ায় বাইডেন সাড়ে ৪ শতাংশ পয়েন্টের পেছনে ছিলেন তার প্রার্থিতা প্রত্যাহারের সময়ও।
নির্বাচনে পেনসিলভানিয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গরাজ্য। কেননা ওই সুইং সাতটি অঙ্গরাজ্যের মধ্যে এটিতে ইলেকটোরাল কলেজ ভোটের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি। যে কারণে এই অঙ্গরাজ্যে জয় পেলে তাদের জন্য ২৭০ ইলেকটোরাল কলেজে জয় পাওয়া তুলনামূলক সহজ হয়।
কীভাবে জরিপের গড় তৈরি হয়?
এদিকে বিভিন্ন জরিপ সংস্থার মাধ্যমে তথ্য সংগ্রহ করে জাতীয়ভাবে এই নির্বাচনের গড় তৈরি করা হয়। টেক্সট মেসেজ, টেলিফোন কলসহ বিভিন্ন মাধ্যমে এক ধরনের জরিপ তথ্য প্রকাশ করা হয়। বিবিসি এই প্রতিবেদন করতে গিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে বিবিসির সহযোগী প্রতিষ্ঠান এবিসি নিউজের সাহায্য নিয়েছে।
এসব জরিপের ক্ষেত্রে দেখা হয়, কতজন ভোটার এই জরিপে অংশ নিয়েছেন, কখন এই জরিপটি করা হয়েছে কিংবা কিভাবে এই জরিপ সম্পন্ন হয়েছে।
এই জরিপে কি আস্থা রাখা যায়?
এই মুহূর্তের জরিপ প্রতিবেদন বলছে, কমলা হ্যারিস ও ডোনাল্ড ট্রাম্প সব সুইং স্টেটে খুব কাছাকাছি ব্যবধানে রয়েছেন। যখন এত কাছাকাছি ব্যবধান থাকে তখন কে জিতবেন, সেটি নিয়ে ভবিষ্যদ্বাণী করাও খুব কঠিন। যেমন ২০১৬ ও ২০২০ সালের জরিপে ট্রাম্পকে অবমূল্যায়ন করা হয়েছিল।
তবে এবার জরিপ কম্পানিগুলো এই ত্রুটি দূর করতে বেশ কিছু পদক্ষেপ নিয়েছে। তার পরও এসব সংশোধনীও ভোটের সঠিক চিত্র পুরোপুরি তুলে ধরতে পারবে না এবং জরিপকারীদের আরো কিছু ফ্যাক্টর বিবেচনায় নিতে হবে এটি বুঝতে যে ৫ নভেম্বর ভোটাররা কাকে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত করছেন। সূত্র: বিবিসি
আরটিভি/এআর