শ্বশুরবাড়িতে গৃহবধূর প্রাপ্য অধিকার
মাঝে মধ্যেই দেখা যায় বধূকে নির্যাতন বা মানসিক অত্যাচারের সংবাদ। এসব ঘটনা এখন আগের থেকে অনেকটাই কমে গিয়েছে। আগামীতে আরও কমবে বলেই বিশ্বাস। ছোট ছোট কিছু ভুল-ত্রুটির জন্য ভুল বোঝাবুঝিকে কেন্দ্র করেই হয়তো ঘটনা বড় হতে থাকে। সেসব বিষয় না, কথা বলা হবে শ্বশুরবাড়িতে যোগ্য অধিকার এবং সম্মান পাওয়া নিয়ে। চলুন সেসব বিষয়ে জেনে নেওয়া যাক-
সকল ধর্ম-নির্বিশেষে : প্রতিটি মানুষেরই সম্মানের সঙ্গে মাথা উঁচু করে বেঁচে থাকার অধিকার রয়েছে। পুত্রবধূকে কোনো রকম শারীরিক বা মানসিক অত্যাচার খুবই খারাপ বিষয়। আইনগতভাবে শাস্তিযোগ্য অপরাধ এবং কারাভোগও করতে হয় অত্যাচারকারীদের। গায়ে হাত না তুলেও দুর্ব্যবহার ও ইচ্ছাকৃতভাবে মানসিক অত্যাচারও একই অন্যায়ের সামিল।
স্বামী ও পরিবার যেভাবে জীবন পরিচালনা করবে সেভাবেই বধূকে জীবন পরিচালনা করতে দিতে হবে। অনেক ক্ষেত্রে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যকার সম্পর্ক তিক্ত হলেও সন্তানের খাওয়া-দাওয়া, শিক্ষা এবং স্বাস্থ্য সংক্রান্ত সকল খরচ স্বামীর বহন করা আইনি দায়িত্ব।
মুসলিম ধর্মাবলম্বীদের ক্ষেত্রে : বিয়ের সময় স্ত্রীকে দেন মোহর দিতে হয়। তবে বাস্তবিক অর্থে যারা নগদ দিতে পারেন না তারা পরে দিয়ে থাকেন। এটা হতে পারে গয়না, নগদ অর্থ, বাড়ি বা অন্য যে কোনো অর্থমূল্য সমমান সম্পত্তি। ধর্ম মোতাবেক দেন মোহরের সম্পূর্ণ অধিকার স্ত্রীর এবং এটা সহবাস শুরুর আগে পরিশোধ করতে হয়। এটা পরিশোধ না করলে স্ত্রী দেন মোহরের জন্য আইনের দ্বারস্থও হতে পারেন।
ধর্ম মোতাবেক স্বামীর মৃত্যুর পর একজন মুসলিম নারী স্বামীর সম্পত্তির একটা নির্ধারিত অংশ পেয়ে থাকেন। সন্তান থাকা না থাকার উপর সম্পত্তির হার নির্ভর করে। এটা এখন আইনগতভাবেও স্বীকৃতিপ্রাপ্ত।
বিবাহ বিচ্ছেদের আগ পর্যন্ত স্ত্রীর খরচ স্বামীকেই বহন করতে হয়। বিবাহ বিচ্ছেদের পর সন্তানের খাওয়া-দাওয়া, শিক্ষা এবং স্বাস্থ্য সংক্রান্ত সকল খরচ স্বামীর বহন করা আইনি দায়িত্ব।
হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের ক্ষেত্রে : বিয়ের আগে-পরে বা বিয়ে উপলক্ষে এবং সন্তান জন্মের সময় স্ত্রীধন (উপহার) পেয়ে থাকেন ভারতীয় হিন্দু শাস্ত্রীয় অনুসারী পরিবারের বধূরা। এর মধ্যে যে কোনো স্থাবর ও অস্থাবর সম্পত্তি, গয়না, উপহার ও টাকা এসব হতে পারে। ভারতীয় হিন্দু সাকসেশন অ্যাক্ট মোতাবেক, স্ত্রীধনের উপর বধূর সম্পূর্ণ অধিকার রয়েছে। এর রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব যদি তার স্বামী বা শ্বশুরবাড়ির লোকদের থাকে তবে যে কোনো সময় স্ত্রীধন ফেরত চাইতে পারবেন বধূ।
স্বামীর সঙ্গে বিবাহ বিচ্ছেদ হওয়ার আগ পর্যন্ত একসঙ্গেই থাকেন স্বামী-স্ত্রী। সেটা হতে পারে স্বামীর পারিবারিক সম্পত্তি, ভাড়াটে বাসা অথবা কর্মসূত্রে পাওয়া বাসা। স্বামীর সঙ্গে একসঙ্গেই থাকার অধিকার রয়েছে বিবাহিত স্ত্রীর।
এসআর/এম
মন্তব্য করুন