রোজা রেখে ইনসুলিন নেওয়ার নিয়ম
ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য খাবার খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। রোজায় দীর্ঘসময় না খেয়ে থাকতে হয় বলে তাদের আলাদা সতর্কতা অবলম্বন করতে হয়। ডায়াবেটিক রোগীদের রোজা রাখতে বেশ কিছু নিয়মকানুন অনুসরণের পরামর্শ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা। কারণ, ডায়াবেটিসে আক্রান্ত ব্যক্তিদের নিয়ম মেনে ও সময় মতো খাবার খেতে হয়। সেই সঙ্গে দিনের বিভিন্ন সময় তাদের ওষুধ নেওয়ার দরকার হতে পারে। ফলে সাহরি এবং ইফতারের মধ্যে দীর্ঘসময় না খেয়ে থাকার প্রভাব পড়তে পারে তাদের শরীরে। পাশাপাশি রমজানে ইনসুলিন নিয়েও অনেক ডায়াবেটিক রোগী চিন্তায় পড়ে যান। তাই এ নিয়ে থাকা চাই পরিষ্কার ধারণা।
এ বিষয়ে পরামর্শ দিয়েছেন ঠাকুরগাঁও ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালের ডা. এ কে এম জাহিন। তিনি পবিত্র রমজান মাসে ডায়াবেটিস রোগীরা কীভাবে ইনসুলিন নেবেন সে বিষয়ে বিস্তারিত জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, ডায়াবেটিস রোগীরা যারা আগে থেকে Premix ইনসুলিন অর্থাৎ দুই বেলার ইনসুলিন (Mixtard30/ Humulin/ Ansulin 30/ Maxsulin 30... etc) নেন, তারা সকালে যে ডোজ নিতেন ঠিক ততটুকুই ডোজ ইফতারের সময় নেবেন এবং আগের রাতে যে পরিমাণ ইনসুলিন নিতেন তার অর্ধেক পরিমাণ ইনসুলিন সেহরির সময় নিতে হবে।
উদাহরণ : কেউ যদি ইনসুলিন আগে ১২+০+৮ ডোজে নিতেন তাহলে পবিত্র রমজানে সকালের ১২ ইউনিট ঠিক সমপরিমাণ ইনসুলিন আজান দেওয়ার সময় নিয়ে সঙ্গে সঙ্গে ইফতার করতে শুরু করবেন। এই ক্ষেত্রে ইনসুলিন নিয়ে ২০-৩০ মিনিট অপেক্ষা করার প্রয়োজন নেই, এবং রাতের ৮ ইউনিট ইনসুলিন পবিত্র রমজান মাসে এর অর্ধেক (অর্থাৎ চার ইউনিট ইনসুলিন) পরিমাণ সাহরীর সময় নিতে হবে (এ ক্ষেত্রে ইনসুলিন নিয়ে ২০ থেকে ৩০ মিনিট পর সাহরি করবেন) কেউ যদি আগে থেকে তিন বেলার ইনসুলিন Basal-bolus) ইনসুলিন নেন তাহলে সকালের ইনসুলিন সমপরিমাণ ডোজে ইফতারের সময়, দুপুরের ইনসুলিন রাতে নয়টা-দশটার সময় আমরা যে রাতের খাবার খাই সে সময় এবং রাতের ইনসুলিন অর্ধেক ডোজে সেহরির সময় নিতে হবে। রাত ৯টা বা ১০টার সময় আমরা যদি না খাই তাহলে ইনসুলিন নেওয়ারও প্রয়োজন নেই।
Basal insulin (Lantus/Abasaglar) অর্থাৎ রাতের এক বেলার ইনসুলিন কেউ যদি আগে থেকে নেন তাহলে পবিত্র রমজান মাসে বিভিন্ন গাইডলাইন অনুযায়ী সেটা ইফতারের সময় ১৫ থেকে ৩০ শতাংশ কম ডোজে নেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
ডায়াবেটিসের সঙ্গে অন্য কোনো জটিলতা যেমন কিডনি-হার্টের সমস্যা, প্রেগনেন্সি, বার বার গ্লুকোজ কমে যাওয়া ইত্যাদি থাকলে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে।
মন্তব্য করুন