সিয়াম সাধনার মাস রমজানে অন্য অনেকের মতো রোজা রাখতে চান গর্ভবতী নারীরা। এ ক্ষেত্রে গর্ভবতী মায়েদের রোজার সময় বেশ কিছু নিয়ম মেনে চলতে হয়। গর্ভবতী নারী না-খেয়ে থাকার কারণে পেটের সন্তান বা মায়ের ক্ষতি হতে পারে। তবে কোনো গর্ভবতী নারী যদি রোজা রাখেন সে ক্ষেত্রে তাকে কিছু খাবারের বিষয় খেয়াল রাখতে হবে। গর্ভকালীন মা ও সন্তান দুজনেরই সুস্থ থাকা জরুরি।
গর্ভবতী মায়ের সেহেরির খাবার যেমন হবে-
গর্ভাবস্থায় রোজা রাখতে চাইলে সেহেরিতে তাকে একজন স্বাভাবিক মানুষের খাদ্যতালিকার ন্যায় সুষম খাবার খেতে হবে। তাকে ক্যালরি ও আঁশযুক্ত খাবারের দিকে বেশি খেয়াল রাখতে হবে। গরমের সময় রোজা হওয়ায় পানিশূন্যতা ও শরীরে লবণের পরিমাণ কমে যাওয়ার প্রবণতা বেশি থাকে; এজন্য এদিকেও খেয়াল রাখতে হবে। তাই ইফতার ও সেহেরির সময় পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি পান করতে হবে। তাছাড়া যেসব খাবারে গ্যাস হয় বা বুক জ্বালা করে সেহেরির সময় সেসব খাবারগুলো যথাসম্ভব এড়িয়ে চলতে হবে।
খাবারের মেন্যুতে আমিষ, শর্করা, সবুজ ও রঙিন শাক সবজির সঙ্গে ডাল ও বাদাম জাতীয় খাবার এবং একটি দেশীয় ফল যেমন: কলা, পেয়ারা ইত্যাদি রাখা উচিত।
গর্ভবতী মায়ের ইফতারের খাবার যেমন হবে-
গর্ভবতী মায়েরা খেজুর, ফলের জুস খেয়ে ইফতার শুরু করতে পারেন। এতে তাদের রক্তের সুগার লেভেল ঠিক থাকবে। ইফতারির মেন্যুতে দুধও রাখা যায়। এ ছাড়া খাবারের তালিকায় সবজি, স্যুপ, সালাদ, মাছ, মাংস, প্রোটিনযুক্ত খাবার যেমন: ডাল, বাদামি চালের ভাত এবং গমের রুটি ইত্যাদি রাখতে পারেন।
রোজাদার গর্ভবতী মায়েদের জন্য কিছু সতর্কতামূলক পরামর্শ-
গর্ভাবস্থায় ভারি, ভাজাপোড়া, তৈলাক্ত ও বাসি খাবার ইত্যাদি পুরোপুরি এড়িয়ে চলুন। ইফতার ও সেহেরিতে যথেষ্ট পরিমাণে পানি পান করুন। কোনো অবস্থাতেই সেহেরি না খেয়ে রোজা রাখার চেষ্টা করবেন না; তাতে শরীর দুর্বল হয়ে পড়বে। গর্ভাবস্থায় বেশি বেশি আঁশযুক্ত, প্রোটিনযুক্ত ও ফ্যাটসম্পন্ন খাবার গ্রহণ করুন। কারণ এসব উপাদান ধীরগতিতে পরিপাক হয় বিধায় ক্ষুধা কম লাগবে।
এ ছাড়াও গর্ভবতী নারীদের শারীরিক অবস্থার কথা বিবেচনা করে কতটুকু খাওয়া উচিত, সে বিষয়ে পুষ্টিবিদের পরামর্শ নিতে হবে। গর্ভবতী নারীরা মুখে খাওয়ার ওষুধ সেবন করলে, তা অনেক সময় অনাগত সন্তানের ক্ষতি হতে পারে। তাই এ সময় ওষুধ সেবন করলে অবশ্যই বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।
রোজার সময় বেশি বিশ্রাম নিন ও দুশ্চিন্তা এড়িয়ে চলুন। এ সময় অনেকক্ষণ রোদে বা গরমে অবস্থান না করে বাতাস আছে এমন খোলামেলা পরিবেশে থাকার চেষ্টা করুন। সম্ভব হলে রাতে খাবারের পর বিশ্রাম নিয়ে একটু হাঁটাহাঁটি করুন।
মন্তব্য করুন