যেসব লক্ষণে বুঝবেন জরায়ুতে টিউমার আছে কি না
বর্তমানে বহু নারী জরায়ু ফাইব্রয়েড বা ক্যানসারবিহীন টিউমার এবং এই সংক্রান্ত বিভিন্ন শারীরিক সমস্যায় ভুগছেন। জরায়ুর কোষের অতিরিক্ত বৃদ্ধির জন্য এই রোগের সৃষ্টি। ইস্ট্রোজেন এবং প্রোজেস্টেরন হরমোনের পরিমাণের তারতম্য এই রোগের অন্যতম কারণ হিসাবে ধরা হয়। আগে এই রোগের খবর তেমনটা শোনা যেত না। তবে এখন সচেতনতাও বেড়েছে নারীঘটিত নানারকম রোগের। সেক্ষেত্রে বলতে হয়, জরায়ুতে টিউমার হলে আগেভাগে বুঝতে পারলে চিকিৎসা সহজ হয়ে যায়।
এ রোগের লক্ষণগুলো জানা জরুরি:
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, পারিবারিক ইতিহাস থাকলে এই রোগ হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে। এই রোগের অন্যান্য ঝুঁকির কারণগুলো বা রিস্ক ফ্যাক্টর হলো স্থূলতা বা ওবেসিটি, কম বয়সে প্রথম মাসিক শুরু হওয়া, ভিটামিন ডি-র অভাব এবং যাদের মধ্যে এখনও গর্ভাবস্থার কোনও ঘটনা ঘটেনি। জরায়ুর মসৃণ কোষের অতিরিক্ত বৃদ্ধির কারণে টিউমার বা ফাইব্রয়েড তৈরি হয়। ডিম্বাশয়ে উৎপন্ন সংবেদনশীল হরমোন ইস্ট্রোজেনের জন্য এটা হয়ে থাকে। শরীরে ইস্ট্রোজেনের মাত্রা বৃদ্ধি পেলে টিউমারের আকার বেড়ে যায়। সাধারণত গর্ভকালে ইস্ট্রোজেন বৃদ্ধি পেয়ে থাকে। দেহে এর মাত্রা কমে গেলে টিউমারের আকারও সংকুচিত বা ছোট হয়। যেমন মেনোপজের পর ইস্ট্রোজেনের পরিমাণ কমে যায়।
লক্ষণ ও উপসর্গ:
বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই রোগীর বাইরে থেকে কোনও লক্ষণ থাকে না। অন্য কোনও কারণে পেটের আল্ট্রাসাউন্ড পরীক্ষায় ধরা পড়ে। কখনও কখনও লক্ষণ ও উপসর্গ দেখা যায়, তবে তা নির্ভর করে টিউমারের সাইজ, সংখ্যা ও অবস্থানের ওপর।
সেগুলো হলো–
- মাসিকের সময় অতিরিক্ত রক্তস্রাব
- স্বাভাবিকের চেয়ে দীর্ঘস্থায়ী মাসিক বা সাতদিনের বেশি, সঙ্গে তলপেটে যন্ত্রণা
- তলপেটে ফোলা অনুভূতি
- কোমর ব্যথা বা কোমর, তলপেট সংলগ্ন (পেলভিক এরিয়া) স্থানে চাপবোধ
- কোষ্ঠকাঠিন্য
- ঘনঘন প্রস্রাব করার ইচ্ছা
- গর্ভধারণে অক্ষমতা বা বন্ধ্যত্ব
- অতিরিক্ত রক্তস্রাবের জন্য রক্তাল্পতা বা অ্যানিমিয়া এবং তৎজনিত শারীরিক সমস্যা যেমন অতিরিক্ত দুর্বলতা, ঝিমুনি, সিঁড়ি ভাঙতে কষ্ট ইত্যাদি
এই সমস্ত লক্ষণ দেখা দিলে চিকিৎসকের পরামর্শে প্রয়োজনীয় পরীক্ষার মাধ্যমে রোগের কারণ নির্ণয় করা খুবই জরুরি। যারা রক্তাল্পতায় ভোগেন তাদের চিকিৎসার সঙ্গে সঙ্গে আয়রন সমৃদ্ধ খাবার যেমন– কাঁচাকলা, থোড়, পালংশাক, মোচা, ডিম, মাংস, মাংসের মেটে, ছোলা, ছোলার ছাতু, খেজুর, আখের গুড়, প্রভৃতি খাওয়া আবশ্যক। রক্ত পরীক্ষার মাধ্যমে রক্তাল্পতার পরিমাপ করাও প্রয়োজন।
মন্তব্য করুন