যে পাত্রের পানিতে মিলবে নানা উপকার
শরীর সুস্থ রাখতে খাবারের পাশাপাশি পানির দিকেও সম্মান নজর দেওয়া জরুরি। আপনি কেমন পানি পান করছেন, পানি ফুটিয়ে পান ক্রছ্রন কি না, কোন পাত্রে পানি রাখেন এসব কিছুরই প্রভাব রয়েছে।
একাধিক গবেষণায় জানা গিয়েছে, দিনে যদি অন্তত ৬ থেকে ৮ ঘণ্টা তামার পাত্রে পানি রাখা হয়, তবে তা পানির বিশুদ্ধতম রূপ ধারণ করে।
প্রাচীন যুগ থেকেই তামার পাত্রে পানি পান করার রীতি চলে আসছে। বর্তমানে বাজারে সুন্দর ডিজাইনের তামার বোতল বা পাত্র পাওয়া যায়। আয়ুর্বেদে তামা ও পিতলের পাত্রে খাওয়া স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী বলে মনে করা হয়। বিশেষ করে তামার পাত্রে পানি পান করলে, রোগ অনেক দূরে থাকে। প্লাস্টিকের বা অন্য কোনও ধাতুর তৈরি পাত্রের পরিবর্তে তামার পাত্র ব্যবহার করতে পারেন।
জেনে নিন গুণাগুণগুলো—
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়: এই সময়ে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পাওয়া খুব প্রয়োজনীয়। তামা, পানির মধ্যে লুকিয়ে থাকা ক্ষতিকারক জীবাণুগুলোকে ধ্বংস করতে পারে। সেই সঙ্গে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়।
হজম ক্ষমতার উন্নতি ঘটে: তামায় মজুত উপাদানগুলো পাকস্থলীর ক্ষতিকারক ব্যাকটেরিয়া মেরে ফেলে। এছাড়াও যকৃতে জমে থাকা ক্ষতিকর টক্সিন বের করে দেয়। যাদের পেটের সমস্যা, কোষ্ঠকাঠিন্য, আলসার, গ্যাস বা অম্বলের সমস্যা, বদহজম বা অন্যান্য কোনও পেটের সমস্যা আছে, তারা তামার পাত্রেই পানি পান করতে পারেন।
অ্যানিমিয়া দূর করে: পানির আয়রন সঞ্চার করতে পারে তামা। ফলে রক্তে আয়রনের মাত্রা বাড়তে পারে। এজন্যেই তামার পাত্রে পানি পান করলে অ্যানিমিয়ার সমস্যা কমে যায়। এছাড়াও শরীরে আয়রন কমে শ্বেত রক্তকণিকা কমতে থাকলে, সেই সমস্যাও দূর করতে পারে তামা।
বাতের সমস্যা কমায়: তামার অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি উপাদান গাঁটে গাঁটে ব্যথায় উপশম দেয়। সেই সঙ্গে বাত বা আর্থ্রাইটিস কমে যায় তামার পাত্রে নিয়মিত পানি পানে।
ওজন কমাতে পারে: তামার পাত্রে নিয়মিত পানি পানে শরীরে জমে থাকা অতিরিক্ত চর্বি ঝরতে শুরু করে। এর ফলে মেদ অনেক কমে যায়।
রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ: বিশেষজ্ঞদের গবেষণা থেকে জানা যায় যে, তামার পাত্রে পানি পানে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে থাকে। সেই সঙ্গে কোলেস্টেরল বৃদ্ধি বা হৃদরোগের সমস্যাকেও দূরে রাখে।
থাইরয়েড গ্রন্থির কাজে ভারসাম্য বজায় রাখে: থাইরয়েড গ্রন্থি থেকে অতিরিক্ত হরমোন নিঃসরণ আটকাতে পারে তামা। যার ফলে এর কাজে ভারসাম্য বজায় রাখা সম্ভব হয়।
ক্যানসার দূর করে: তামায় রয়েছে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট, যা ক্যান্সার বিরোধী। পানির সঙ্গে এই অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট মিশে শরীরের কোষ বিভাজনের সঠিক প্রক্রিয়ায় নজর রাখে। যার ফলে ক্যানসার দূরে থাকার সম্ভবনা থাকে।
উজ্জ্বলতাও বাড়ায়: তামা ত্বকে বলিরেখা পরতে দেয় না। সেই সঙ্গে ত্বকের উজ্জ্বলতাও বাড়ায়। এছাড়াও এই ধাতু প্রোটিন বাহক হিসাবে কাজ করে, যা চুলের জন্যেও অত্যন্ত উপকারী।
তামার পাত্র পরিষ্কার করার নিয়ম: তামা যেমন উপকারী, সেরকম খুব তাড়াতাড়ি কালো দাগ পরে যায় এই পাত্রের ওপর। যেটি সহজেই পরিষ্কার করা যায়। উষ্ণ গরম পানির সঙ্গে লবণ ও লেবু মিশিয়ে তামার পাত্রের মশ্যে কিছুক্ষণ রেখে দিন। এরপর ভালো করে নাড়িয়ে ফেলে দিন। পাত্রের গায়ে লেবু সঙ্গে লবণ মিশিয়ে ভালো করে ঘষুন। এরপর পানি দিয়ে ধুয়ে নিন। লেবুর রস কম থাকলে ভিনিগারও মিশিয়ে নিতে পারেন সঙ্গে। এইভাবে খুব সহজে ঘরোয়া পদ্ধতিতে পরিষ্কার করা যায় তামার পাত্র।
মন্তব্য করুন