বাড়িতে বাচ্চা থাকলে ভুলেও আনবেন না যে ৫ গাছ
আজকাল অনেকেই অন্দরসজ্জায় গাছ ব্যবহার করে থাকেন। বিশেষ করে বারান্দায় কোণে প্রায় সব বাসাতেই ফুল বা বিভিন্ন ঔষধি গাছ লাগিয়ে থাকেন। পরিশুদ্ধ বায়ু আমাদের প্রাণ। এই বায়ু পাওয়া যায় গাছপালা থেকে। পরিবেশ দূষণের প্রকোপ থেকে জীবজগতকে রক্ষা করার জন্যও নানাবিধ কারণে সর্বস্তরে বৃক্ষরোপণের উপযোগিতার কথা আরও ব্যাপকভাবে প্রচার হওয়া প্রয়োজন।
আজকাল ইট-কাঠ-পাথরের নাগরিক জীবনে ফ্ল্যাটবাড়ির ছোট পরিসরেই আটকে গিয়েছে সময়গুলো। প্রকৃতির স্পর্শ সেখানে থাকে না বললেই চলে। তাই ছোট্ট ফ্ল্যাটের এক চিলতে বারান্দা গাছ দিয়ে সাজাতে সকলেই চান। টবের মধ্যে গাছ লাগিয়ে জীবনকে সজীব করার প্রচেষ্টা চলে পুরোদমে। আবার ড্রয়িং রুমে পাতাবাহার ইন্ডোর ও মানিপ্ল্যান্ট লাগিয়ে ঘর সাজাতেও ভালো লাগে। কিন্তু ইচ্ছে হলেই যে কোনও গাছ লাগানো কিন্তু মোটেও বুদ্ধিমানের নয়। বিশেষ করে বাড়িতে যদি বাচ্চা থাকে, তাহলে কিছু গাছ এড়িয়ে চলাই উচিত। না হলে ভয়ানক বিপদ হতে পারে।
কী কী সেই গাছের নাম, জেনে নিন—
অ্যারোহেড গাছ: উজ্জ্বল সবুজ রং আর অ্যারোহেড গাছ দেখতে খুব সুন্দর। এই গাছের সংস্পর্শে থাকলে শিশু ও পোষা প্রাণীর গলা ও মাথাব্যথা এবং শ্বসনতন্ত্রে সমস্যা দেখা দেয়। এ ছাড়া শিশু ও পোষা প্রাণীর পেটেব্যথা ও বমিভাবও দেখা দিতে পারে। বৃদ্ধরাও এই গাছের সংস্পর্শে থাকলে সরাসরি আক্রান্ত হতে পারেন।
করবী গাছ: হলুদ বা গোলাপী করবী গাছের বীজ সহ প্রতিটি অংশই বিষাক্ত। এই গাছের কোনও অংশ খেয়ে ফেললে ছোট বড় নির্বিশেষে মাথা ঘোরা, বমি, ডায়রিয়া, অনিয়মিত হৃদস্পন্দন, কোমা এমনকী মৃত্যুও হতে পারে।
ক্যালাডিয়াম: লাল, গোলাপি অথবা সাদা পাতার ক্যালাডিয়াম দিয়ে ঘর অথবা বারান্দার বাগানের সাজিয়ে রাখালে সুন্দর দেখায়। এই সুন্দর গাছটি সম্পর্কেই সাবধান করেছেন উদ্ভিদবিজ্ঞানীরা। এই গাছের পাতায় আছে দীর্ঘস্থায়ী বিষ। আর শিশুরা এই গাছের পাতা মুখে দিলে দীর্ঘস্থায়ী পেট ব্যথায় ভুগতে পারে। শুধু তাই নয়, পোষ্যদের জন্যও সমান ক্ষতিকর এই গাছটি। পরীক্ষায় জানা গিয়েছে, দীর্ঘদিন এই গাছের সংস্পর্শে থাকলে এক ধরনের স্থায়ী ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণ হয়। যার ফলে মুখ, জিহ্বা ও ঠোঁটে জ্বালাপোড়া, গলা ব্যথা, গিলতে সমস্যা এবং শ্বাস নিতে সমস্যা হতে পারে।
ফিলোডেনড্রন বা মানিপ্ল্যান্ট: মানিপ্ল্যান্ট দিয়ে ঘর সাজানোর অভ্যাস অনেকেরই আছে। অথচ আপাতনিরীহ মানিপ্ল্যান্ট গাছের সংস্পর্শে এলে শরীরের ক্ষতি হতে পারে। গবেষকদের দাবি, বিরল এক ব্যাকটেরিয়ার কারণে এই গাছের সংস্পর্শে থাকলে ত্বকে জ্বালাপোড়া হতে পারে। এছাড়া গলা ও মাথাব্যথা, শ্বসনতন্ত্রে সমস্যাও দেখা দিতে পারে। বাড়িতে এই গাছ অতিরিক্ত থাকলে এর প্রভাবে স্নায়ুতন্ত্রে সমস্যা সহ অনিদ্রা দেখা দিতে পারে। তাই শিশু, বৃদ্ধ ও পোষা প্রাণীদের এই গাছ থেকে দূরে রাখা দরকার।
পিস লিলি: যাদের ঘরে পোষ্য প্রাণী রয়েছে তাদের ঘরে পিস লিলি রাখাটা বিপজ্জনক। লিলি অনেক জাতের হয়, তবে সব রকম লিলি কুকুর-বিড়ালে জন্য ক্ষতিকর না হলেও কিছু পিস লিলি কুকুরের জন্য বেশ ক্ষতিকর। তেমনই ইস্টার লিলি বিড়ালের পক্ষে বেশ ক্ষতিকর। সময়ে চিকিৎসা না করলে বিড়ালের কিডনি এবং লিভার নষ্ট করে দিতে পারে এ জাতের ফুলের গাছ।
ডায়ফেনবাসিয়া: অতি পরিচিত ডায়ফেনবাসিয়া গাছও অত্যন্ত বিষাক্ত। এর পাতা ছোটো বড় যে কাউকে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দিতে পারে। এটি পোষ্যদের জন্যেও খুব ক্ষতিকর। কৃষিবিজ্ঞানীদের মতে, এই গাছের পাতায় থাকে ক্যালসিয়াম অক্সালেট নামের এক উপাদান, যা মানুষের কিংবা পোষ্যদের জন্য ক্ষতিকর।
মন্তব্য করুন