ভিটামিন ‘সি’ সমৃদ্ধ পেয়ারার স্বাস্থ্য উপকারিতা
পেয়ারা খেতে খুবই সুস্বাদু ও সুমিষ্ট। পেয়ারাকে ভিটামিন সি-এর ব্যাংক বলা যায়। সাধারণত বর্ষা ও শীত ঋতুতে গাছে পেয়ারা হয়। সব জাতের পেয়ারার গুণাগুণ শীতকালে বেড়ে যায়, রোগ ও পোকার আক্রমণও কম থাকে। ফলের আকৃতি এবং রং সবদিক থেকেই সুন্দর হওয়ায় এ সময়ে পেয়ারার দামও থাকে বেশি। এসব দিক বিবেচনায় রেখেই বর্ষাকাল বাদে কীভাবে অন্যান্য ঋতুতে অত্যধিক হারে উৎপাদন বাড়ানো যায় সে ব্যাপারে গবেষণা শুরু হয়।
পেয়ারা একটি দ্বিবীজপত্রী বহুবর্ষজীবী উদ্ভিদ। এর বৈজ্ঞানিক নাম Psidiun guajava। পেয়ারা একরকমের সবুজ রঙের বেরী জাতীয় ফল। পেয়ারার প্রায় ১০০টিরও বেশি প্রজাতি আছে। তবে অন্যান্য বর্ণের পেয়ারাও দেখতে পাওয়া যায়। লাল পেয়ারাকে (Marroonguava) রেড আপেলও বলা হয়।
পেয়ারার উপকারিতা:
- পেয়ারা নিয়মিত খেলে ক্যানসার এবং মেয়েদের ব্রেস্ট ক্যানসার হওয়ার ঝুঁকি কম থাকে।
- পেয়ারা রক্তে শর্করার পরিমাণ নিয়ন্ত্রণে রাখে তাই নিয়মিত পেয়ারা খেলে ডায়াবেটিস হওয়ার ঝুঁকি কম থাকে।
- পেয়ারা নিয়মিত খেলে কোষ্ঠকাঠিন্য দূর হয়।
- অনেকেরই মুখের ভেতর সাদা দাগের মতো একটি আলসার দেখা যায়। এমন হলে পেয়ারা খেলে উপকার পাওয়া যায়।
- পেয়ারা ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়া ও ভাইরাসের সাথে লড়াই করে। তাই পেয়ারা খেলে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে।
- পেয়ারার পাতা চিবিয়ে বা রস করে খেলে মাসিককালিন ব্যথা কমে যায়।
- কাঁচা পেয়ারা খেলে ঠান্ডাজনিত সমস্যা দূর হয়।
- নিয়মিত কাঁচা পেয়ারা খেলে দৃষ্টিশক্তি ভালো থাকে।
মন্তব্য করুন
হাঁটলে কি বাড়তে পারে হাঁটুর ব্যথা
বর্তমান সময়ে কম বয়সেই অনেকে হাঁটু ব্যথায় আক্রান্ত হয়ে কষ্ট পাচ্ছেন। বিশেষত, মহিলাদের মধ্যেই এই রোগের প্রকোপ বেশি দেখা যায়। আর একবার এই রোগে আক্রান্ত হলে সামান্য হাঁটাচলা করতেও সমস্যা হয়। ব্যথা-যন্ত্রণা জর্জরিত হয়ে আক্রান্ত অনেকে হাঁটা বন্ধ করে দেন। কিন্তু প্রশ্ন হলো, হাঁটলে কি সত্যিই হাঁটু ব্যথা বাড়ে, এ বিষয়ে চিকিৎসকদের মতামত জেনে নেওয়া যাক।
হাঁটলে কি হাঁটুর ব্যথা বাড়ে: চিকিৎসকরা জানান, আমাদের হাঁটুর দুই হাড়ের মধ্যে থাকে সাইনুভিয়াল ফ্লুইড। এ বার অনেক সময় এই তরলের মাত্রা স্বাভাবিকের থেকে কমে যায়। এমন পরিস্থিতিতে হাড়ে হাড়ে ঘঁষা লাগে, খুব ব্যথা হয়। আর এই সমস্যার নামই হলো অস্টিওআর্থ্রাইটিস। সমস্যা হলো, এই রোগে ভুক্তভোগীদের অনেকেই মনে করেন হাঁটলে বুঝি ব্যথা বাড়তে পারে। তবে বিষয়টা একবারেই তেমন নয়। বরং হাঁটু ব্যথা নিয়েই হাঁটতে হবে। তাতেই সুস্থ থাকবেন।
মেনে চলতে হবে যেসব নিয়ম: হাঁটুর ব্যথা নিয়ে হাঁটতে চাইলে সমতল জায়গায় হাঁটতে হবে। কোনও এবড়োখেবড়ো জায়গায় হাঁটলে সমস্যা বাড়তে পারে। শুধু তাই নয়, এই সমস্যায় ভুক্তভোগীরা চেষ্টা করুন সিঁড়ি এড়িয়ে যাওয়ার। কারণ, সিঁড়ি দিয়ে ওঠানামা করলে হাঁটুর ওপর চাপ বাড়বে। যার জন্য ব্যথা-বেদনা বাড়তে পারে। তাই আপনারা সিঁড়ি ভাঙবেন না। এই নিয়মটা মেনে চললেই হাঁটু ব্যথা নিয়েও হাঁটতে পারবেন। কোনও সমস্যা হবে না।
যাদের হাঁটুতে ব্যথা নেই, তাদের দৈনিক ৪৫ মিনিট ঘাম ঝরিয়ে হাঁটার পরামর্শ দেওয়া হয়। তবে হাঁটু ব্যথা থাকলে এই নিয়মে হাঁটা চলবে না। সেক্ষেত্রে একবারে নয়, বারবারে হাঁটতে হবে। ব্রেকফাস্ট থেকে ডিনার পর্যন্ত, প্রতিবার খাবার খাওয়ার পর ১০ থেকে ১৫ মিনিট হাঁটতে পারেন। তাতেই ওজন কমবে। সেই সঙ্গে ডায়াবিটিস, প্রেশার এবং কোলেস্টেরলও থাকবে নিয়ন্ত্রণে। এছাড়াও মিলবে একাধিক উপকার।
শুরুতেই চিকিৎসকের কাছে যান: আমাদের দেশের বেশির ভাগ মানুষই হাঁটু ব্যথা শুরু হওয়ার অনেক দিন পর চিকিৎসকের কাছে যান। তখন আর কিছু করার থাকে না। অনেক সময় হাঁটু প্রতিস্থাপনেরও প্রয়োজন পড়ে। তবে রোগের প্রথম পর্যায়েই যদি চিকিৎসকের কাছে যাওয়া হয়, সেক্ষেত্রে এতটা ঝামেলা পোহাতে হয় না। কিছু ওষুধ খেলেই সমস্যা নিয়ন্ত্রণে চলে আসে। তাই হাঁটু ব্যথা শুরু হলে ফেলে রাখবেন না। বরং ঝটপট বিশেষজ্ঞের কাছে যান, তার পরামর্শ নিন। তা না হলে পরিস্থিতি হাতের বাইরে চলে যেতে সময় লাগবে না।
রোগ প্রতিরোধ জরুরি: আমাদের মধ্যে অধিকাংশই প্রতিদিন শরীরচর্চা করেন না। এমনকী হেঁটেচলে বেড়ানোর অভ্যাসও খুব কম। যেই কারণে বাড়ছে হাঁটু ব্যথার প্রকোপ। তাই যাদের এখনও হাঁটু ব্যথা হয়নি, তারা প্রতিদিন নিয়ম করে হাঁটুন। দিনে মাত্র ৪৫ মিনিট হাঁটলেই এই সমস্যা থেকে অনেকটা দূরে থাকা যায়। অন্যথায় হাঁটুর হাল বেহাল হয়ে যেতে পারে। এমনকী শরীরে বাসা বাধঁতে পারে একাধিক জটিল অসুখ। তাই আজ থেকেই সচেতন হওয়া প্রয়োজন।
আরটিভি/এফআই
পূজার আগেই তরতাজা রাখবে উপকারী যে পানীয়
উৎসব বা আয়োজনে অন্য সব দিনের থেকে স্বাভাবিকভাবেই একটু বেশি ভূরিভোজ করা হয়। আর কিছুদিন বাদেইতো শুরু হবে দুর্গোপূজা, তখনতো ভূরিভোজ হবে বাধাহীনভাবে। তাইতো তার আগেই শরীরকে টক্সিন মুক্ত করতে হবে। তা না হলেতো পূজায় ভূরিভোজ করতে গিয়ে শরীরে দেখা দিতে পারে নানা বিপত্তি। তাই এখন থেকেই যদি সুস্থ ও তরতাজা থাকতে হয়, তা হলে শরীর ‘ডিটক্স’ করা খুব জরুরি।
ডিটক্স করা ঠিক কাকে বলে:
এই বিষয়ে পুষ্টিবিদরা জানিয়েছেন, ডিটক্স মানে হলো ‘ডিটক্সিফিকেশন’। আসলে পরিবেশ, খাবার ইত্যাদি থেকে প্রতি দিনই কিছু বিষাক্ত পদার্থ আমাদের শরীরে ঢোকে। অ্যালকোহল বা বিভিন্ন রকম ওষুধের উপাদানও এই বিষ প্রবেশের কারণ হতে পারে। সুস্থ থাকার জন্য এই সব টক্সিন বা বিষ শরীর থেকে বের করা প্রয়োজন। তা না হলে, শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা যেমন ভেঙে পড়বে, তেমনই বিভিন্ন রোগজীবাণুও বাসা বাঁধবে শরীরে। পুষ্টিবিদের কথায়, শুধু পানি পান করে এই সব দূষিত পদার্থ শরীর থেকে পুরোপুরি বের করে দেওয়া সম্ভব নয়। তাই জরুরি ‘ডিটক্স’ পানীয়।
যে কারণে খাবেন এই পানীয়:
বিভিন্ন রকম মৌসুমি ফল, সবজি, মশলাপাতি পানিতে ভিজিয়ে রাখলে, তাতে থাকা ভিটামিন, খনিজ ইত্যাদি পুষ্টিকর উপাদান পানিতে মিশে যায়। তখন সেই পানিকেই বলা হয় ‘ডিটক্স ওয়াটার’। অনেকেই ভাবেন, শুধু ফলের টুকরো বা সবজি কুচি করে ডিটক্স পানি তৈরি হয়, তা কিন্তু নয়। গ্রিন টি, ঈষদুষ্ণ লেবু- পানি, জিরার পানি, সারা রাত ভিজানো আদা পানি, শসা এবং লেবু পানি, এই সবও কিন্তু ডিটক্স পানীয়। অনেকেই সারারাত মৌরী-মেথি ভিজিয়ে রেখে, সকালে তা ছেঁকে পান করেন। এটিও এক প্রকার ডিটক্স পানীয়।
পুষ্টিবিদদের কথায়, আমরা প্রতিদিন যে খাবার খাই, তার পুরোপুরি হজম হয় না। পরিপাক না হওয়া খাবারও দূষিত পদার্থের মতোই জমা হতে থাকে শরীরে। এই দূষিত পদার্থ বের না করে দিলে তখন তা থেকে হার্টের রোগ, পাকস্থলী ও কিডনির অসুখ হওয়ার আশঙ্কা থাকে। সে কারণেই ডিটক্স পানীয় খেতে বলা হয়, যা শরীরকে বিশুদ্ধ করে। ডিটক্স পানীয়র আরও উপকারিতা আছে। যেমন ত্বক ও চুলের সৌন্দর্য বাড়াতেও এই পানীয়গুলো সাহায্য করে। সহজ করে বললে, শরীরের প্রতিটি কোষকে সুস্থ রাখাই এর কাজ।
তবে, ইন্টারনেট থেকে বা বাজারচলতি কিছু ডিটক্স পানীয় কিনে পান করলে কিন্তু লাভ হবে না। কারণ, সকলের শরীরে সব রকম পানীয় কার্যকরী না-ও হতে পারে। তাই কী ধরনের পানীয় পান করবেন, কারা পান কর্যান ও কারা নয়, তা জেনে রাখা খুব জরুরি।
কোন ‘ডিটক্স’ কার জন্য:
১) সবচেয়ে পরিচিত ডিটক্স পানীয় হলো ঈষদুষ্ণ পানিতে লেবুর রস। পুষ্টিবিদের পরামর্শ, গ্যাসের সমস্যা থাকলে অথবা আলসার থাকলে, এই পানীয় পান করা যাবে না। যাদের শরীরে বেশি পটাশিয়াম সহ্য হয় না, তাদের জন্যও এই পানীয় বারণ।
২) তাড়াতাড়ি ওজন কমাতে চাইলে পানিতে শসার টুকরো ও বিভিন্ন রকম লেবু, যেমন কমলালেবু, বাতাবি লেবু বা মুসাম্বির টুকরো মিশিয়ে সেই পানি পান করতে পারেন। বিভিন্ন রকম বেরি জাতীয় ফল, যেমন স্ট্রবেরি, রাস্পবেরি, ক্র্যানবেরিও মেশানো যায় পানিতে। সেই ডিটক্স পানি শরীর তরতাজা তো রাখেই, সৌন্দর্য বৃদ্ধিতেও সাহায্য করে।
৩) পুদিনা পাতা, ধনে পাতা, মশলার মধ্যে আদা, দারচিনি, আস্ত হলুদ, লবঙ্গ ইত্যাদি ভিজিয়েও ডিটক্স পানীয় তৈরি করা যায়। এই পানীয়ে এত বেশি অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট থাকে, যা অকালবার্ধক্য রোধ করতে পারে।
৫) গ্যাসের সমস্যা বেশি থাকলে অথবা অল্প খেলেই গলা-বুক জ্বালা করে যাদের, তারা যদি পূজার সময়ে ভালোমন্দ খেতে চান, তা হলে আগে থেকেই ডিটক্স পানীয় পান করা শুরু করে দিন। সে ক্ষেত্রে মৌরি-মেথি ভেজানো পানি খুবই কার্যকরী হতে পারে। টানা ১০-১২ দিন পান করে দেখুন, অনেক সুস্থ থাকবেন। কোনও অ্যান্টাসিড খেতে হবে না।
৬) ডায়াবিটিস, হার্টের রোগ বা উচ্চ কোলেস্টেরল থাকলে, পানিতে দারচিনির গুঁড়ো মিশিয়ে পান করলে উপকার পাবেন। দারচিনির গুঁড়ো সারা রাত পানিতে ভিজিয়ে রেখে সকালে ছেঁকে সেই পানীয় পান করতে হবে। দারচিনির টুকরোও ভিজিয়ে রাখতে পারেন, তবে তা খুব ভালো মানের হতে হবে।
৭) কিডনির সমস্যা থাকলে বা ঘন ঘন মূত্রনালির সংক্রমণ হলে, ক্র্যানবেরি ভেজানো পানি পান করতে পারেন। তাতে খুবই উপকার হবে।
৮) ঋতুস্রাব অনিয়মিত হলে বা ঋতুকালীন সময়ে প্রচণ্ড ব্যথাবেদনা ভোগালে, কাঁচা হলুদ, তুলসী ভেজানো পানি পান করলে উপকার পাবেন। কাঁচা পেঁপে ভেজানো পানিও পান করতে পারেন। কাঁচা পেঁপে ঋতুস্রাবের সমস্যা দূর করতে পারে।
৯) স্থূলত্ব থাকলে আনারসের টুকরো ভেজানো পানি পান করতে পারেন। খুব তাড়াতাড়ি ওজন কমবে।
১০) ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়াতে চাইলে পালং শাক, টমেটো, শসা ভেজানো পানি পান করতে পারেন। তবে শাক জাতীয় কিছু পানিতে ভেজানোর আগে তা লবণ-গরম পানিতে ভিজিয়ে রেখে পরিষ্কার করে নিতে হবে।
ডিটক্স পানীয় কখন খাবেন:
সকালে খালি পেটেই যে ডিটক্স পানীয় পান করতে হবে, তা নয়। দু'টি আহারের মাঝে খাওয়াই সবচেয়ে ভালো। প্রাতরাশের ২ ঘণ্টা পরে ডিটক্স পানীয় পান করতে পারেন, আবার দুপুরের খাওয়ার এক ঘণ্টা আগেও পান করতে পারেন।
আরটিভি/এফআই
ছানি অস্ত্রোপচারে দেরি হলে যেসব ক্ষতি হয়
চোখের ছানি বিষয়ে আমরা অনেকেই অবগত। চোখে এক ধরনের স্বচ্ছ লেন্স আছে, যা প্রাকৃতিক উপাদানে তৈরি। যা চশমার গ্লাস বা লেন্সের মতোই আমাদের দেখতে সাহায্য করে। এটি এক ধরনের উভতল বা কনভেক্স লেন্স। চোখের অভ্যন্তরভাগে সামনের অংশে এই লেন্সটির অবস্থান। কোনো কারণে যদি প্রাকৃতিক এই লেন্সটি তার স্বচ্ছতা হারিয়ে ফেলে অর্থাৎ ঘোলা হয়ে যায় তবে আলোকরশ্মি চোখের ভেতরে প্রবেশে বাধাপ্রাপ্ত হয়। ফলে দেখার কাজটি বিঘ্নিত হয়। লেন্সের এই ঘোলা অবস্থাটিকে বলা হয় ক্যাটারেক্ট বা ছানি। চোখের ছানি বলতে লেন্স অস্বচ্ছ হওয়াকেই বুঝায়। আর সঠিক সময়ে ছানি অস্ত্রোপচার না করলে চোখে বেশ কয়েকটি ত্রুটি দেখা দিতে পারে।
ছানি অস্ত্রোপচারে দেরি করার বেশ কয়েকটি ত্রুটি রয়েছে, জেনে নিন-
>> ছানি অস্ত্রোপচারে দেরি করা ছানি গ্রেডের অগ্রগতির দিকে পরিচালিত করে। ছানির ধরন এবং গ্রেডের ওপর নির্ভর করে, দেরি করে ছানি অস্ত্রোপচার একটি ঝুঁকিপূর্ণ পদ্ধতিতে পরিণত হতে পারে।
>> হার্ড লেন্স ইমালসিফাই করার জন্য প্রয়োজনীয় শক্তির পরিমাণ বৃদ্ধি পায় এবং এটি আশেপাশের কাঠামোর ক্ষতি করতে পারে।
>> ক্ষত পুড়ে যাওয়া, লেন্সের ক্যাপসুলার ব্যাগ ফেটে যাওয়া, অপারেশনের সময় বেড়ে যাওয়া, লেন্সের সমর্থন নষ্ট হওয়া ইত্যাদির মতো অন্যান্য ইন্ট্রা-অপারেটিভ সমস্যার ঝুঁকি বেড়ে যায়।
>> এছাড়াও, চোখের উচ্চ চাপ, কর্নিয়ার শোথ ইত্যাদির মতো কিছু পোস্টঅপারেটিভ জটিলতা ঘটতে পারে।
>> ছানির অগ্রগতি চোখের ভিতরে প্রদাহ এবং উচ্চ চাপ হতে পারে। জরুরি ভিত্তিতে পরিচালিত না হলে উভয়ই দৃষ্টিশক্তি সম্পূর্ণ অপরিবর্তনীয় ক্ষতির কারণ হতে পারে।
>> যাদের ছানি রয়েছে তাদের ম্লান আলোতে দৃষ্টিশক্তি কম থাকে। এ কারণে রাতে ওয়াশরুম ব্যবহার করার সময় তারা পড়ে যাওয়ার ঝুঁকিতে থাকে। বয়স্কদের মধ্যে ৬০ শতাংশ ফ্র্যাকচার ছানি এবং এর সঙ্গে সম্পর্কিত দুর্বল দৃষ্টির কারণেই হয়।
ছানি অস্ত্রোপচারের পর রোগীর যা করণীয়:
বয়স বাড়লে, আঘাত লাগলে, চোখে অন্য কোনো প্রদাহ হলে, ডায়াবেটিস বা উচ্চ রক্তচাপ হলে, দীর্ঘদিন চোখে কোনো ড্রপ দিলে চোখে ছানি পড়তে পারে। ছানি তিন ধরনের হয় Ñ নিউক্লিয়ার, কর্টিক্যাল ও সাব ক্যাপসুলার।
ছানির চিকিৎসা : অপারেশনই ছানির একমাত্র চিকিৎসা। ওষুধ বা চশমা দিয়ে ছানির চিকিৎসা সম্ভব নয়। ছানি অপারেশনে চোখের ভেতরের অস্বচ্ছ লেন্স বের করে সেই স্থানে কৃত্রিম লেন্স বসাতে হয়। বিভিন্নভাবে ছানির অস্ত্রোপচার করা হয়ে থাকে। যেমন- ফ্যাকো সার্জারি (সেলাইবিহীন ছানি অস্ত্রোপচার) ও প্রচলিত ছানি অস্ত্রোপচার (সেলাইযুক্ত)।
ফ্যাকো সার্জারি : চোখে কৃত্রিম লেন্স বসাতে ছানি গলিয়ে বের করে আনা হয়। এ অস্ত্রোপচার ফ্যাকো সার্জারি চিকিৎসাবিজ্ঞানের আশীর্বাদ। তুলনামূলক বিচার করলে বিষয়টি পরিষ্কার হয়ে যায়। ফ্যাকো অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে লেন্স গলিয়ে বের করা হয়। এ পদ্ধতিতে রক্তক্ষরণ হয় না। আড়াই থেকে তিন মিলিমিটার ছিদ্র করা হয়। সেলাইয়ের প্রয়োজন হয় না। অস্ত্রোপচারের সঙ্গে সঙ্গে রোগী বাড়ি যেতে পারেন। এ অস্ত্রোপচারের পর সাতদিন চোখে পানি না ব্যবহার করলে রোগী দ্রুত সুস্থ হয়ে ওঠেন।
ফ্যাকো সার্জারি : সেলাইবিহীন। দ্রুত সেরে ওঠা সম্ভব। ৩-৪ দিনের মধ্যে স্বাভাবিক কাজকর্ম করা যায় (গাড়ি চালানো, লেখাপড়া করা, টিভি দেখা, অফিস করা)। দীর্ঘদিন ভর্তি থাকতে হয় না। অপারেশনের পর বাসায় চলে যাওয়া যায়। যেসব রোগী সহযোগিতা করতে পারেন, তাদের শুধু ড্রপের মাধ্যমে অস্ত্রোপচার করা হয়। ইনজেকশন না দিলে এবং ডাক্তার উপযুক্ত মনে করলেঅস্ত্রোপচারের পর চোখে ব্যান্ডেজ না দিয়ে বাড়ি পাঠাতে পারেন। জটিলতা হওয়ার আশঙ্কা নেই। অস্ত্রোপচারের পরপর স্বাভাবিক খাবার খেতে পারবেন।
অপারেশন করতে করণীয় : চক্ষুরোগ বিশেষজ্ঞ অস্ত্রোপচার করার উপদেশ দিলে অস্ত্রোপচারের আগে ৩-৪টি পরীক্ষা করতে হবে। যেমন- ডায়াবেটিসের জন্য ব্লাড সুগার, ইসিজি, চোখে যে লেন্স বসানো হবে তার মাপের জন্য বায়োমেট্রিক, চোখের প্রেসার পরীক্ষা ও করোনাকালীন করোনার টেস্ট করাতে হবে।
ফোল্ডেবল লেন্স : এটি লেন্সের সর্বশেষ সংস্করণ। এটি নরম, ভাঁজ করা যায়। এ লেন্সের ক্ষেত্রে মাত্র ২.৫-৩ মিমি. কাটতে হয়। এ ক্ষেত্রে অপারেশনের পর লেন্সের পেছনে অস্বচ্ছ হওয়ার আশঙ্কা থাকে না। চোখ দ্রুত সেরে ওঠে।
সাধারণ লেন্স : সাধারণ প্রচলিত লেন্স শক্ত, ভাঁজ করা যায় না। এটির ক্ষেত্রে ৫.৫ মিলিমিটার কাটতে হয়। অপারেশনের পর লেন্স অস্বচ্ছ হওয়ার আশঙ্কা থাকে। ইনজেকশনের মাধ্যমে অবশ করতে হয়। স্বল্পপরিমাণ রক্তক্ষরণের আশঙ্কা থাকে।
অপারেশনের পর করণীয় : অস্ত্রোপচারের পর ছাড়পত্রে লিখিত ওষুধ নিয়মমাফিক ব্যবহার করতে হবে। সাতদিন চোখে সরাসরি পানি লাগানো যাবে না। অস্ত্রোপচারের পরের দিন, সাতদিন পর এবং একমাস পর মোট তিনবার ডাক্তারের কাছে আসতে হবে। এর মধ্যে কোনো সমস্যা দেখা দিলে ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে। চোখের যত্ন নিন। চোখ ভালো থাকলে আপনিও ভালো থাকবেন।
তথ্যসূত্র: অনলাইন
আরটিভি/এফআই
যে কারণে রক্তশূন্যতা হয়, প্রতিরোধে করণীয়
বিভিন্ন কারণে বিভিন্ন সময় মানুষের শরীরে রক্তশূন্যতা দেখা দিতে পারে। বয়স ও লিঙ্গভেদে হিমোগ্লোবিন যখন কাঙ্ক্ষিত মাত্রার নিচে অবস্থান করে, তখন আমরা একে অ্যানিমিয়া বা রক্তশূন্যতা বলি। রক্তশূন্যতা আলাদা কোনো রোগ নয়। তবে রক্তশূন্যতার কারণে শরীরে বিভিন্ন রোগ সৃষ্টি হতে পারে। মানবদেহে আয়রন, ভিটামিন বি১২ ও ফলিক এসিডের অভাব বা অতিরিক্ত রক্তপাত ও পাকস্থলীতে ইনফেকশনের কারণে রক্তশূন্যতা দেখা দিতে পারে। তাই সব সময় রক্তশূন্যতা আছে কিনা সে বিষয়ে সতর্ক থাকা প্রয়োজন।
রক্তশূন্যতা কি:
সাধারণত মেডিকেল টার্মে রক্তশূন্যতাকে অ্যানিমিয়া বলা হয়। রক্তে লোহিত রক্ত কণিকা (RBC) বা হিমোগ্লোবিন স্বাভাবিক সংখ্যার চেয়ে কমে গেলেই অ্যানিমিয়া দেখা দেয়। মানুষের রক্তে হিমোগ্লোবিন বারোর নিচে নেমে গেলে তাকে রক্তশূন্যতা বা অ্যানিমিয়া বলা হয়।
যদিও শিশুদের বেলায় রক্তশূন্যতা আছে কিনা তা বিভিন্ন বয়সে হিমোগ্লোবিনের পরিমাণের উপর নির্ভর করে নির্ণয় করা হয়। যেমন নবজাতকের বেলায় যদি হিমোগ্লোবিন দশের কম হয় বা বারো হয়, তাহলে এটা রক্তশূন্যতা। কারণ, নবজাতকের রক্তের হিমোগ্লোবিন থাকতে হবে সতেরো বা আঠারো।
রক্তশূন্যতা কেন হয়:
অপুষ্টিজনিত কারণ, আয়রন, ফলিক এসিডের অভাবে রক্তশূন্যতা দেখা দেয়।
থ্যালাসেমিয়ার মতো কিছু জন্মগত রোগের কারণেও রক্তশূন্যতা দেখা দেয়।
এ ছাড়াও শরীরের অভ্যন্তরীণ ক্ষতের কারণে রক্তক্ষরণের ফলেও শরীরে রক্তশূন্যতা দেখা দিতে পারে।
এ ছাড়া অনেক সময় বংশানুক্রমে রক্তশূন্যতা দেখা দেয়, অর্থাৎ পরিবারের কারও এই সমস্যা থাকলে পরবর্তী প্রজন্মেও রক্তশূন্যতা দেখা দিতে পারে।
দীর্ঘদিন ধরে ব্যথার ওষুধ সেবন করলেও রক্তস্বল্পতা দেখা দেয়।
রক্তশূন্যতার লক্ষণ:
১. রক্তের লোহিত রক্ত কণিকা বা হিমোগ্লোবিন অক্সিজেন পরিবহণ করে। তাই হিমোগ্লোবিনের পরিমাণ কমে গেলে শরীরে অক্সিজেনের ঘাটতি দেখা দেয়। এ ক্ষেত্রে রোগী সব কাজে হাঁপিয়ে বা ক্লান্ত হয়ে পড়েন। অনেক সময় শ্বাসকষ্ট দেখা দেয়।
২. রক্তস্বল্পতার কারণে ত্বক ফ্যাকাশে হয়ে যেতে শুরু করে। এ ছাড়াও রক্তশূন্যতার কারণে চোখের ভেতরের মাংস পেশিগুলোও লাল রং হারিয়ে ফেলে।
৩. রক্তাল্পতায় আক্রান্তকে বিষণ্ণতায় ভুগতে দেখা যায়। সর্বক্ষণ দুর্বলতা আর মাথাব্যথা হওয়ার কারণে রোগীকে ক্রমশ বিষণ্ণতা গ্রাস করে। ক্ষুধামন্দাও দেখা দেয়।
৪. রক্তাল্পতার আর একটি উল্লেখযোগ্য লক্ষণ হল, হৃৎস্পন্দন বেড়ে যাওয়া। রক্তশূন্যতার কারণে হৃৎপিণ্ড পর্যাপ্ত পরিমাণে রক্ত শরীরে সঞ্চালনের জন্য পাম্প করতে পারে না। ফলে হৃৎস্পন্দন স্বাভাবিকের তুলনায় অনেকটাই বেড়ে যায়।
৫. শরীরের আয়রন কমে গেলেই দেখা দেয় রক্তশূন্যতা। আর আয়রন কমে গেলে চুলও পড়া বেড়ে যায়। তাই অতিরিক্ত চুল পড়ার সমস্যাও রক্তস্বল্পতার লক্ষণ হতে পারে।
৬. অনেক সময় হাত-পা ঠান্ডা হয়ে থাকাও কিন্তু রক্তশূন্যতার ইঙ্গিত দেয়। তাই এসব লক্ষণ দেখলে দেরি না করে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
৭. রক্ত স্বল্পতা বেশি হলে অনেক সময় ঠোঁটের কোণে ক্ষত হয়, জিহ্বায় ঘা হয়, চুলের ঝলমলে উজ্জ্বলতা নষ্ট হয়ে যায়, চুল ও নখ ফেটে যায়।
৮. রক্তস্বল্পতায় ভোগা নারীদের মাসিক অনিয়মিত হয়ে পরে।
রক্তশূন্যতা প্রতিরোধে আয়রনের ভূমিকা:
রক্তশূন্যতা এড়ানোর জন্য আয়রনসমৃদ্ধ খাবার খেতে হবে। কচু, কচু শাক ও কচুজাতীয় খাবারে প্রচুর পরিমাণে আয়রন থাকে। এছাড়াও পালংশাক, শিম ও শিমের বিচি, কাঁচাকলা, ফুলকপি, কলিজা, সামুদ্রিক মাছ, দুধ, ডিম, খেজুর, মুরগির কলিজা, গরু-খাসির মাংসও আয়রনসমৃদ্ধ খাবার। আয়রন, ক্যালসিয়াম, কার্বোহাইড্রেইড ও ফাইবার সমৃদ্ধ বেদানা হিমোগ্লোবিনের ঘাটতি পূরণে সাহায্য করে। ভিটামিন সি সমৃদ্ধ খাবার আয়রন শোষণে সাহায্য করে। অন্যদিকে, খাবারে আয়রনের অভাব থাকলে কিংবা বেশি চা-কফি পান করলে আয়রন শোষণ বাধাগ্রস্ত হয়।
রক্তশূন্যতার চিকিৎসা:
এনিমিয়া বা রক্তশূন্যতা আসলে কোনো রোগ নয়, রোগের উপসর্গ। সুতরাং যে কারণে এনিমিয়া হয়েছে, তা সনাক্ত করে সে অনুযায়ী চিকিৎসা দেওয়াটাই হলো এনিমিয়ার মূল চিকিৎসা। কখনো কখনো পরিস্থিতি অনুযায়ী চিকিৎসকের পরামর্শে আয়রন ট্যাবলেট বা ক্যাপসুল খাওয়া যেতে পারে। পরিস্থিতি বুঝে অনেক সময় শিরাপথে আয়রন ইনজেকশনও দিয়ে থাকেন চিকিৎসক।
রক্তশূন্যতায় আক্রান্ত হলে প্রথমে এটির তীব্রতা জানতে হবে। এর পেছনের কারণ খুঁজে সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নিতে হবে। অ্যানিমিয়া বা রক্তশূন্যতা প্রতিকারের চেয়ে প্রতিরোধই উত্তম। আপনি যদি অল্পতেই ক্লান্ত হন এবং শ্বাসকষ্টে ভোগেন। এ ছাড়া কখনও রক্ত দান করার সময় যদি আপনাকে বলা হয় যে, আপনি কম হিমোগ্লোবিনের কারণে রক্ত দান করতে পারবেন না, তাহলে চিকিৎসকের স্বরণাপন্ন হন।
আরটিভি/এফআই
বরিশালের জনপ্রিয় শরবত মলিদা
বরিশাল অঞ্চলের একটি জনপ্রিয় পানীয় হলো মলিদা। বিভিন্ন উৎসব পার্বণে এই অঞ্চলে মলিদা খাওয়ার চল অনেক পুরোনো। তবে বর্তমান প্রজন্মের অনেকে এই মলিদার সঙ্গে পরিচিত নন। এ অঞ্চলের ইতিহাস ও ঐতিহ্যের সঙ্গে জনপ্রিয় পানীয় মলিদার নামটি সর্বাঙ্গে জড়িয়ে। যদিও আধুনিকতার ছোঁয়ায় বড় কোনো উৎসব ছাড়া মলিদার আয়োজন এখন আর দেখা যায় না। তবে কেউ কেউ এখনও সংস্কৃতি বা ঐতিহ্য ধরে রাখতে ছোট পরিসরে মলিদা খাওয়ানোর আয়োজন করেন। চলুন জেনে নেওয়া যাক মলিদা তৈরির রেসিপি।
রেসিপি-
উপকরণ: নতুন পোলাওয়ের চাল, নারিকেল, আদা, লবণ, খাঁটি আঁখের গুড়, খই/মুড়ির প্রয়োজন হয়। পরিমাণের হিসাব কষলে বড় এক কাপ বাটা পোলাওয়ের চালের সঙ্গে, কিছুটা মুড়ি/খই বাটা, বড় টেবিল চামচ নারিকেল বাটা, চা চামচ আদা বাটার সাথে পরিমাণ মতো আঁখের গুড়, লবণ মিশিয়ে ৩-৪ কাপ পানির সাথে মিশ্রণ করতে হবে।
প্রণালি: একটি পাত্রে প্রথমে পরিমাণ মতো পোলাওয়ের চাল বাটা, মুড়ি বা খই বাটা, নারিকেল বাটা ও খাঁটি আঁখের গুড় মিশিয়ে হাত দিয়ে কচলে নিন যেন সবগুলো উপাদান একসঙ্গে মিশে যায়। আরেকটি পাত্রে পানি দিয়ে তাতে আগের মিশ্রণগুলো অল্প অল্প করে মিশিয়ে নাড়তে থাকুন, তবে এ মিশ্রণে পানির পাশাপাশি তরল দুধ বা ডাবের পানিও ব্যবহার করেন অনেকে। এবারে সবগুলো মিশ্রণ ঢালার পর পরিমাণ মতো লবণ ও আদা বাটা দিয়ে ভালো করে নাড়ুন। মিশ্রণ হয়ে গেলে পছন্দমতো গ্লাসে ঢেলে তার ওপর মুড়ি বা খই ছিটিয়ে অল্প নারিকেল বাটা ছিটিয়ে দিয়ে সাজিয়ে পরিবেশন করুন সুস্বাদু মলিদা।
মলিদাকে আরও সুস্বাদু করতে অনেক জায়গাতে চিড়াও মিশানো হয়। আগে মিশ্রণ ও বাটার কাজ শীলপাটা ও ঘুঁটনি দিয়ে করা হতো, তবে এখন চাইলে ব্লেন্ডারে ব্লেন্ড করে তৈরি করে নিতে পারেন। যদিও চাল বাটার কাজটি শীলপাটায় করলে স্বাদটা অনেক ভালো হবে। ঠান্ডা ঠান্ডা পরিবেশন করুন।
আরটিভি/এফআই
প্রতিদিন চিয়া বীজ খেলে হতে পারে যে সমস্যা
চিয়া বীজের অনেক গুণ। সহজপাচ্য ফাইবার, প্রোটিন থেকে হার্ট ভালো রাখার অত্যন্ত প্রয়োজনীয় উপাদান ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড সবই রয়েছে এই বীজে। ওজন কমানোর জন্য পুষ্টিবিদরা চিয়া বীজ খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন। নানা রকম পুষ্টিগুণের জন্য ক্রমশই এই বীজের জনপ্রিয়তা বাড়ছে। এই বীজের উপকারিতার শেষ নেই। খাবার বেক করার ক্ষেত্রেও চিয়া বীজ ব্যবহার করা হয়। কিন্তু পুষ্টিবিদেরা বলছেন, এত গুণ থাকা সত্ত্বেও অতিরিক্ত পরিমাণে চিয়া বীজ খেলে কিন্তু উপকারের বদলে নানা রকম শারীরিক সমস্যাও দেখা দিতে পারে।
জেনে নিন সমস্যাগুলো—
রক্ত পাতলা করে দেয়: চিয়া বীজে ওমেগা ৩ রয়েছে ভরপুর পরিমাণে। এই উপাদান রক্ত পাতলা করে। শরীরের পক্ষে যা ভাল। কিন্তু যাঁরা দীর্ঘ দিন ধরে উচ্চ রক্তচাপের ওষুধ খাচ্ছেন, সে ক্ষেত্রে কিন্তু সমস্যা হতে পারে। তেমন ক্ষেত্রে চিকিৎসকের পরামর্শ মেনেই চিয়া বীজ খাওয়া যেতে পারে।
শর্করার মাত্রা একেবারে কমিয়ে দেয়: চিয়া বীজে ফাইবার রয়েছে ভরপুর পরিমাণে। ফাইবার রক্তে শর্করার মাত্রা কমায়। তাতে ডায়াবিটিসের ঝুঁকি কমে। কিন্তু শর্করার মাত্রা অতিরিক্ত পরিমাণে কমে যাওয়া একেবারেই ঠিক নয়। আবার ডায়াবিটিস রোগীদের জন্যেও চিয়া বীজ কিন্তু ক্ষতিকর। ইনসুলিন নিলে এই বীজ থেকে দূরে থাকাই ভালো।
হজমের সমস্যা: বেশি চিয়া বীজ খেলে হজমের গোলমাল দেখা দিতে পারে। চিয়া বীজে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার। পেটের স্বাস্থ্য ভাল রাখতে ফাইবার উপকারী। কিন্তু বেশি খেলে সমস্যা হতে পারে। অতিরিক্ত ফাইবার হজমপ্রক্রিয়ায় ব্যাঘাত সৃষ্টি করে। পুষ্টিবিদের পরামর্শ মেনে নির্দিষ্ট পরিমাণ চিয়া বীজ খাওয়া যেতে পারে। তবে বেশি নয়।
আরটিভি/এফআই
ব্রেস্টফিডিং করানোর সময় ভুলেও খাবেন না যে ৫ খাবার
মাতৃত্ব এক বিশেষ অনুভূতি। এই সময় মায়েরা নিজের জীবনের কিছু সেরা মুহূর্ত কাটান। তবে মুশকিল হলো, আনন্দে বিভোর হয়ে অনেক মা এমন কিছু খাবার খেয়ে ফেলেন যাতে তার এবং সন্তানের শরীরের ক্ষতি হয়ে যেতে পারে। তাই পরিস্থিতি আরও খারাপ দিকে যাওয়ার আগেই সাবধান হন। জেনে নিন কোন কোন খাবার খেলে বিপদ বাড়তে পারে, তারপর এসব খাবারের থেকে বাড়িয়ে নিন দূরত্ব। তাহলেই সুস্থ থাকবেন আপনি। সুস্থ থাকবে গর্ভের সন্তান।
পারদ সমৃদ্ধ মাছ খাবেন না: মাছ হলো পুষ্টির ভাণ্ডার। এতে প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন রয়েছে। সেই সঙ্গে এতে রয়েছে ভিটামিন, খনিজ এবং ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিডের ভাণ্ডার। তাই ডেলিভারির পর নিশ্চিতভাবে মাছ খেতে হবে। তাতেই সুস্থ থাকবে শরীর। তবে ভুলেও এই সময় পারদ সমৃদ্ধ টুনা, মার্লিন, শর্ডফিশের মতো মাছ খাবেন না। এই ভুলটা করলে উপকার তো মিলবেই না, উল্টে বাচ্চার শরীরে পারদ পৌঁছে যাবে। আর এমনটা ঘটলে বাচ্চার বিকাশ এবং বৃদ্ধি আটকে যেতে পারে। তাই সাবধান হন।
মদ্যপান এড়িয়ে চলুন: মদ যে শরীরের জন্য কতটা ক্ষতিকর, এই কথাটা নতুন করে বলার প্রয়োজন নেই। কিন্তু তারপরও অনেক মহিলা ব্রেস্টফিডিং করানোর সময়ও এই পানীয়ে চুমুক দেন। আর এই ভুলটা একদমই করা যাবে না। কারণ মাতৃদুগ্ধের মাধ্যমে মদের কিছুটা অংশ বাচ্চার শরীরেও ঢুকে যেতে পারে। তারপর শুরু হতে পারে সমস্যা। তাই ভুলেও ব্রেস্টফিডিং করানোর সময় মদ্যপান করবেন না।
কফি: আপনি যদি কফি খেতে খুব ভালোবাসেন, তাহলে যে আপনাকে সাবধান হতে হবে। কারণ, কফিতে রয়েছে ক্যাফিন। আর এই উপাদান দুধের মাধ্যমে বাচ্চার শরীরে পৌঁছে গেলেই মুশকিল। সেক্ষেত্রে তার রাতের ঘুম উড়ে যেতে পারে। এমনকী তার পেটের সমস্যাও হতে পারে। তাই চেষ্টা করুন এই সময় কফি না খাওয়ার। তার বদলে প্রচুর পরিমাণে পানিপান করুন। এই কাজটা করলেই কিন্তু মিলবে উপকার।
প্রসেসড ফুডের থেকে বাড়ান দূরত্ব: ব্রেস্টফিডিং করানোর সময় যতটা সম্ভব প্রসেসড ফুডের থেকে বাড়িয়ে নিতে হবে দূরত্ব। কারণ, এই ধরনের খাবারের ক্যালোরি ভ্যালু খুবই বেশি। এমনকী এতে প্রচুর রাসায়নিক, ফ্যাট মেশানো রয়েছে। তাই এই সময় যতটা সম্ভব প্রসেসড ফুডের থেকে বাড়িয়ে নিন দূরত্ব। আশা করছি, এই কাজটা করলেই উপকার মিলবে। আপনার পাশাপাশি সুস্থ থাকবে গর্ভের সন্তান।
যা খেতে পারেন:
এই সময় পাতে থাকুক প্রচুর পরিমাণে শাক, সবজি এবং ফল। সেই সঙ্গে রোজ প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার খেতে হবে। এমনকী দিনে অন্ততপক্ষে ৩ লিটার পানিপান করাও জরুরি। এর পাশাপাশি প্রতিদিন ৭ ঘণ্টা ঘুমাতেই হবে। এই সামান্য কাজটা করলেই ব্রেস্টমিল্ক বেশি পরিমাণে তৈরি হবে। সন্তান এবং আপনি থাকবেন সুস্থ-সবল।
আরটিভি/এফআই