‘ইলিশ’ ভেবে উচ্চমূল্যে ‘সার্ডিন’ খাচ্ছেন না তো!
অনেক সময় আমরা আসল ইলিশ মাছ চিনতে ভুল করে থাকি। আর এই সুযোগটা কাজে লাগাচ্ছে অসাধু কিছু ব্যবসায়ী। তারা ইলিশ মাছের মতো দেখতে সার্ডিন মাছকে ইলিশ বলে চালিয়ে দিচ্ছে। উচ্চমূল্যে ইলিশ কিনে প্রতারণার শিকার হচ্ছেন সরল ক্রেতা।
চলুন, জেনে নেওয়া যাক সার্ডিন ও ইলিশ চেনার উপায়:
- সার্ডিনের দেহ পার্শ্বীয়ভাবে পুরু এবং পিঠের দিকের চেয়ে পেটের দিক অপেক্ষাকৃত উত্তল ও চ্যাপ্টা।
- ইলিশের দেহ পার্শ্বীয়ভাবে পুরু, পিঠের ও পেটের দিক প্রায় সমভাবে উত্তল।
- সার্ডিন বা চন্দনা ইলিশের দেহের দৈর্ঘ্য সাত সেন্টিমিটার থেকে বিশ সেন্টিমিটার পর্যন্ত হয়ে থাকে। ইলিশ বেশ বড় (৭৫ সেন্টিমিটার পর্যন্ত) হয়ে থাকে।
- সারডিনের মাথার আকৃতি ছোট ও অগ্রভাগ ভোতা। ইলিশের মাথার আকৃতি লম্বাটে ও অগ্রভাগ সূচালো।
- সার্ডিনের পৃষ্ঠীয় পাখনার অগ্রভাগে এবং পুচ্ছ পাখনার কিনারা ঘোলাটে। ইলিশের পৃষ্ঠীয় পাখনার অগ্রভাগে এবং পুচ্ছ পাখনার কিনারা অনেটা সাদাটে।
- সার্ডিনের চোখের আকৃতি তুলনামূলকভাবে বড়। আসল ইলিশের চোখের আকৃতি তুলনামূলকভাবে ছোট।
- সার্ডিনের পার্শ্বরেখা বরাবর এক সারিতে আইশের সংখ্যা ৪০ থেকে ৪৮টি। ইলিশের ৪০ থেকে ৫০টি।
- সার্ডিনের বুকের নিচে ধারালো কিল বোন বা স্কুইটস বিদ্যমান এবং স্কুইটস এর সংখ্যা ২৯টি থেকে ৩৪টি পর্যন্ত থাকে। ইলিশেল পেটের নিচে বিদ্যমান স্কুইটসের সংখ্যা ৩০ থেকে ৩৩টি পর্যন্ত থাকে।
- সার্ডিনের পৃষ্ঠীয় পাখনার উৎসে একটি কালো ফোঁটা রয়েছে। আসল ইলিশের কানকুয়ার পরে একটি বড় কালো ফোঁটা এবং পরে অনেকগুলো কালো ফোঁটা (a series of small spots) থাকে।
- সার্ডিনের মাথার দৈর্ঘ্য দেহের আদর্শ দৈর্ঘ্যরে শতকরা ২২ থেকে ৩২ ভাগ হয়ে থাকে। ইলিশের মাথার দৈর্ঘ্য দেহের আদর্শ দৈর্ঘ্যরে শতকরা ২৮ থেকে ৩২ ভাগ হয়ে থাকে।
আরটিভি/টিআই
মন্তব্য করুন
যেভাবে বানাবেন কমলার হালুয়া
কমলা একটি সুস্বাদু ফল। এতে প্রচুর ভিটামিন সি রয়েছে। স্বাদে বৈচিত্র্য আনতে মিষ্টি এবং রসালো ফলটি দিয়ে ভিন্নধর্মী হালুয়া বানিয়ে খেতে পারেন।
উপকরণ: কমলার রস ১ কাপ, পানি আধা কাপ, কর্নফ্লাওয়ার আধা কাপ, চিনি এক কাপ, গ্রেট করা কমলার খোসা আধা চা–চামচ, লেবুর রস ১ টেবিল চামচ, কমলা ফুড কালার এক চিমটি, ঘি সিকি কাপ, এলাচির গুঁড়া সামান্য, কাঠবাদামকুচি সাজানোর জন্য।
প্রণালি: প্রথমেই কমলার রস ছেঁকে কর্নফ্লাওয়ারের সঙ্গে ভালো করে মিশিয়ে নিন, যেন কোনো দলা না বেঁধে থাকে। চুলায় মাঝারি আঁচে হাঁড়ি বসিয়ে চিনি ও আধা কাপ পানি ঢেলে দিন। কিছুক্ষণ পর লেবুর রস দিন। চিনি গলে এলে কমলার রস ও কর্নফ্লাওয়ারের মিশ্রণ ঢেলে দিন। চুলার আঁচ কমিয়ে দিয়ে অনবরত নাড়তে থাকুন। সামান্য ফুড কালার দিন। মিশ্রণটি ঘন হয়ে এলে নেড়ে একটু করে করে ঘি দিন। এবার ঘন ঘন নাড়তে থাকুন। হালুয়ার রং স্বচ্ছ হয়ে গেলে এলাচির গুঁড়া দিয়ে নাড়ুন। যে বাটিতে হালুয়া রাখবেন, সেখানে অল্প ঘি মিশিয়ে হালুয়া রেখে চেপে চেপে সমান করুন। এবার হালুয়ার ওপরে কাঠবাদামকুচি ছিটিয়ে এক ঘণ্টা রুম টেম্পারেচারে রেখে দিন। হালুয়া জমে গেলে নিজের পছন্দমতো সাজিয়ে পরিবেশন করুন।
আরটিভি/এসএ
শীতে সুস্থ থাকতে এখন থেকেই শুরু করবেন যেসব কাজ
নভেম্বর শুরু হতে না হতেই আবহাওয়ার পরিবর্তন হয়েছে এবং তাপমাত্রা কিছুটা কমেছে। বিশেষত ভোরের দিকে হালকা ঠান্ডা অনুভূত হচ্ছে। আবহাওয়ার এই পরিবর্তন কখনও কখনও অনেক রোগও ডেকে আনতে পারে। তবে আপনি যদি কিছু সতর্কতা অবলম্বন করেন, তবে আপনি সেগুলো এড়িয়ে শীতের ঋতু উপভোগ করতে পারেন।
জেনে নিন কীভাবে শীতে সুস্থ থাকতে পারবেন—
ব্যায়াম: শীতে নিজেকে ফিট রাখতে শারীরিক পরিশ্রম করুন। আপনি যোগব্যায়াম, দৌড়, হাঁটা বা শক্তি প্রশিক্ষণ করে আপনার শরীরকে উষ্ণ রাখতে পারেন। এটি আপনাকে ফ্লু বা ঠান্ডার মতো রোগ থেকে রক্ষা করার সাথে সাথে আপনার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও শক্তিশালী রাখবে।
স্বাস্থ্যকর ডায়েট: আস্ত শস্য, চর্বিহীন মাংস, মাছ, মুরগি, লেবু, ড্রাই ফ্রুটস, বীজ, মসলা, তাজা ফল এবং শাকসবজিসহ একটি সুষম খাদ্য খেলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। এ ছাড়াও আমরা ভিটামিন ‘সি’ সমৃদ্ধ খাবার খেতে পারেন। কারণ, এটি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়।
ময়েশ্চারাইজার: শীতে ত্বকের ক্ষতি একটি বড় ঝুঁকি। ঠান্ডা ঋতু ত্বকের ক্ষতি করে, যার ফলে ত্বক শুষ্ক ও চুলকায়, ঠোঁট ফাটে এবং গোড়ালি ফাটতে পারে। শীতে ত্বকের যত্নে ময়েশ্চারাইজার লাগাতে ভুলবে না।
ঘুম: ভালো ঘুম শরীরের ইমিউন সিস্টেমকে সুস্থ রাখতে সাহায্য করে, স্ট্রেস হরমোন কর্টিসল দূর করে এবং পেশী পুনরুদ্ধারে সহায়তা করে। সুস্বাস্থ্য বজায় রাখার জন্য ঘুম খুবই গুরুত্বপূর্ণ, তাই অন্তত ৭ থেকে ৮ ঘণ্টা গভীর ঘুম নিশ্চিত করুন।
পানি: প্রতিদিন প্রয়োজনীয় পরিমাণ পানি পান করুন এবং হাইড্রেটেড থাকুন। পানি আমাদের সিস্টেমকে পরিষ্কার করতে এবং টক্সিন অপসারণ করতে, শরীরের কোষগুলোতে পুষ্টি পরিবহন করতে এবং শরীরের তরলগুলোর ভারসাম্য বজায় রাখতে সহায়তা করে।
আরটিভি/এফআই-টি
দরিদ্র দেশগুলোতে বিক্রয় হচ্ছে নিম্নমানের পণ্য
বিশ্বের বড় বড় খাদ্য ও পানীয় প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠানসমূহ নিম্ন আয়ের দেশগুলোতে উচ্চ আয়ের দেশের তুলনায় কম স্বাস্থ্যকর খাবার বিক্রয় করছে বলে একটি প্রতিবেদনে প্রকাশিত হয়েছে।
অ্যাক্সেস টু নিউট্রিশন ইনিশিয়েটিভ (এটিএনআই)-এর প্রতিবেদনে নেসলে, ইউনিলিভার, পেপসিকোর পণ্যগুলোর নাম পাওয়া গেছে।
অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ডে তৈরি করা একটি রেটিং পদ্ধতি ব্যবহার করে ৩০টি প্রতিষ্ঠানের পণ্যের ওপর জরিপ চালিয়ে সংস্থাটি নিম্ন আয়ের দেশগুলোতে উচ্চ আয়ের দেশের তুলনায় কম স্বাস্থ্যকর খাবার বিক্রয় করার প্রমাণ পেয়েছে। হেলথ স্টার (স্বাস্থ্যকর খাবারের) রেটিং সিস্টেমে পণ্যগুলো সবচেয়ে ভালো পণ্যের মান ৫ ও ৩.৫ এর উপরে স্কোরকে স্বাস্থ্যকর হিসাবে বিবেচনা করা হয়। তবে নিম্ন আয়ের দেশগুলোতে বহুজাতিক কোম্পানিগুলোর পোর্টফোলিও সিস্টেমে সেই খাবারের মান ১.৮ রেটিং পেয়েছে। উচ্চ আয়ের দেশগুলিতেও কিছু পণ্য পরীক্ষা করে সেগুলোর মান ২.৩ পেয়েছিল।
বার্তাসংস্থা রয়টার্সকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে এটিএনআই-এর গবেষণা পরিচালক মার্ক উইন জানান, এটা খুবই স্পষ্ট যে এই কোম্পানিগুলো বিশ্বের দরিদ্র দেশগুলোতে, যেখানে তারা বেশি সক্রিয়, সেখানে যা বিক্রয় করছে, সেগুলো স্বাস্থ্যকর পণ্য নয়।
তিনি আরো বলেন, এই দেশগুলোর সরকারদের সচেতন হওয়ার জন্য এটি একটি সতর্কবার্তা। এবারই প্রথম সূচকটি তাদের মূল্যায়নকে নিম্ন ও উচ্চ আয়ের দেশে বিভক্ত করেছে। খাদ্যের এই মানের সঙ্গে স্থূলতার সম্পর্কও রয়েছে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্য অনুসারে, বিশ্বব্যাপী এক বিলিয়নেরও বেশি মানুষ ওবিসিটি, অর্থাৎ স্থূলতায় আক্রান্ত। বিশ্ব ব্যাংকের হিসেব অনুসারে, অতিরিক্ত ওজন বা স্থূলতায় আক্রান্ত ৭০ শতাংশ মানুষ নিম্ন ও মাধ্যম আয়ের দেশগুলোতে বসবাস করেন।
এক তারবার্তায় নেসলের এক মুখপাত্র বলেন, আমরা আমাদের আরও পুষ্টিকর খাবারের বিক্রয় বাড়ানোর পাশাপাশি মানুষকে আরো ভারসাম্যপূর্ণ খাবার গ্রহণে উৎসাহিত করতে অঙ্গীকারবদ্ধ। তবে পেপসিকোর মুখপাত্র এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে অস্বীকার করেছেন।
কোম্পানিটি গত বছর আলুর চিপসে সোডিয়ামের পরিমাণ কমাতে ও তার খাবারে গোটা শস্যের মতো উপাদান যুক্ত করার জন্য নতুন লক্ষ্য নির্ধারণ করেছিল।
আরটিভি/এএইচ
শীতে শরীর উষ্ণ রাখতে খেতে পারেন যেসব খাবার
শীতকাল অনেকেরই একটি প্রিয় ঋতু। শহরে সেভাবে এখনও শীতের আগমণ না ঘটলেও গ্রামের দিকে ভোর বেলা ঠাণ্ডা পড়তে শুরু করেছে। গরমকালে শরীর ঠান্ডা রাখতে যেমন লেবু শরবত উপকারী ঠিক তেমন শীতের দিনেও শরীর গরম রাখতে পারে বিশেষ কিছু খাবার। এসব খাবার শরীরকে ভেতর থেকে গরম রাখবে। আসুন দেখে নেওয়া যাক এই সময়ে কোন কোন খাবার শরীরকে উষ্ণ রাখতে সাহায্য করবে।
গবেষণা বলছে, শীতের সময়ে মানবদেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা একেবারে কমে যায়। সেক্ষেত্রে খাদ্যতালিকায় রাখতে পারেন খাঁটি ঘি। রুটি বা ভাতের সঙ্গে অল্প পরিমাণ ঘি খেলে এই কনকনে শীতে শরীর গরম হবে । তবে ওবেসিটি, ডায়াবেটিস থাকলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে ঘি খাওয়া উচিত।
গরম ভাত, ডাল ও রুটির সঙ্গে সামান্য দেশি ঘি মিশিয়ে খেলেই উষ্ণ থাকে শরীর। পিত্তের সমস্যা মেটাতেও কাজে আসে দেশি ঘি।
শীতকালে শালগম, বীট, রাঙাআলু ও গাজরের মতো শাকসবজির স্যুপ তৈরি করে খেতে পারেন। অথবা এগুলি রোস্ট করে খেলে শরীর শীতকালে উষ্ণ থাকে।
শীতকালে শরীর গরম রাখতে সাহায্য করে হলুদও। তরকারিতে হলুদ ব্যবহার করার পাশাপাশি রাতে ঘুমোতে যাওয়ার আগে হলুদ মেশানো দুধ খেলেও তা শরীরকে উষ্ণ রাখতে সাহায্য করে।
শীত কমাতে ঘন ঘন কফিতে চুমুক না দিয়ে বরং আদা, তুলসি দিয়ে ফোটানো চা খান। এতে শরীরে যেমন আরাম পাবে, তেমনি শরীর গরম রাখতেও সাহায্য করবে।
দিনে কয়েকটা খেঁজুর খাওয়ার অভ্যাস শরীরকে উষ্ণ রাখতে খুবই কার্যকরী।
শীতকালে শরীর গরম রাখতে শুকনো ফল অনেক কার্যকরী। এপ্রিকট, শুকনো ডুমুর, খেজুর, বাদাম ও কাজুর মতন শুকনো ফল আপনার শরীরকে উষ্ণ রাখার পাশাপাশি শীতকালে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াবে। কারণ এগুলি প্রাকৃতিকভাবে পুষ্টি, ডায়েটারি ফাইবার, ভিটামিন ইত্যাদিতে সমৃদ্ধ।
শীতে শরীর গরম রাখতে কাঠবাদাম, কাজুবাদামসহ বিভিন্ন ধরনের বাদাম চর্বির বিশেষ উৎস। শরীরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করতে ও শরীরকে উষ্ণ রাখতে সাহায্য করে এসব খাবার।
ডিমে থাকা প্রোটিন ও ভিটামিন শরীরকে উষ্ণ করে তুলতে পারে। এই খাবারকে বলা হয় ‘শক্তির পাওয়ার হাউস’। এই শীতে প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় যোগ করতে পারেন এই খাবার।
চিনে শরীরকে উষ্ণ রাখতে পেঁয়াজের ব্যবহার প্রাচীন কাল থেকেই হয়ে আসছে। প্রচণ্ড ঠাণ্ডার হাত থেকে বাঁচতে চিনে পেঁয়াজকে ওষুধ হিসেবেও ব্যবহার করা হয়। আপনি পেঁয়াজকে রোজকার খাদ্য তালিকায় রাখার পাশাপাশি স্যুপে মিশিয়ে বা সালাদেও ব্যবহার করতে পারেন।
আদা শরীরের তাপ বাড়াতে সাহায্য করার পাশাপাশি শীতকালে হওয়া সর্দি-কাশি কমাতেও সাহায্য করে। বৃদ্ধি করে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও। সাহায্য করে হজম ক্ষমতা বাড়াতে এবং রক্ত প্রবাহ বৃদ্ধি করতে। এজন্য অনেকে গরম জলে আদা মিশিয়ে খাওয়ার পাশাপাশি আদা দেওয়া চা-ও খান।
শীতকালে শরীর গরম রাখার জন্য অনেকে তরকারিতে সর্ষে দেওয়ার পাশাপাশি গরম ভাতে কাঁচা সর্ষে বাটাও খান। এর ফলে খাবার সুস্বাদু লাগার পাশাপাশি শরীরের উষ্ণতাও বৃদ্ধি পায়। অনেকে স্নানের সময় শরীরে সর্ষের তেল মাখার পাশাপাশি পায়ের তালু ও হাতের তালুতে সর্ষের তেল মালিশ করেন। এতে শরীর উষ্ণ থাকে।
ঠাণ্ডার প্রকোপ থেকে বাঁচতে শীতকালে মধু খুবই উপকারি। সঙ্গে তুলসি পাতা খান অনেকে। এতে সর্দি-কাশির প্রকোপ থেকে রক্ষা পাওয়ার পাশাপাশি শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও বৃদ্ধি পায়। বাড়ে হজম ক্ষমতাও। ভালো রাখে ত্বকও।
শীতকালে শরীরকে উষ্ণ রাখতে সাহায্য করে গুড়। এটি শরীরের হজম ক্ষমতা বাড়ানোর পাশাপাশি প্রচণ্ড ঠাণ্ডায় শরীরকে উষ্ণ রাখতে সাহায্য করে। দূর করে কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যাও। খাবার পর অল্প পরিমাণে খেলেই এর কাজ বোঝা যায়।
শীতকালে শরীর ভেতর থেকে উষ্ণ রাখার জন্য কলা খেতে পারেন। এই ফলে থাকা ম্যাগনেসিয়াম এবং ভিটামিন বি আপনার থাইরয়েড এবং অ্যাড্রিনাল গ্রন্থিকে দারুণভাবে সচল রাখে। আর এই গ্রন্থিগুলো শরীরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে কাজ করে। বিশেষ করে ঠান্ডা আবহাওয়ায় আপনার সকালের খাবারে কলা রাখতে পারেন। আবার বিকেলে নাস্তা হিসেবে বাদাম ও মাখনের সাথে কলা খেতে পারেন। গবেষণায় দেখা গেছে, কলা এমন একটি খাবার যা শরীরের তাপ বাড়ায়।
আপনি জেনে অবাক হতে পারেন যে মরিচ বা মরিচের মতো মশলাদার খাবার শরীরের তাপ বাড়ায় না। কিন্তু খাওয়ার সময় গরম অনুভব হতে পারে। অন্যদিকে জিরা একটি মশলাদার ভেষজ যা নিয়মের ব্যতিক্রম। এটি মরিচ বা মরিচের মতো তীব্র মশলা নয় কিন্তু আপনার খাবারে জিরা যোগ করলে ধীরে ধীরে শরীরের তাপমাত্রা বৃদ্ধি পেতে পারে।
শীতকালে পিপাসা না পেলেও শরীরে কিন্তু পানির চাহিদা রয়ে যায় আগের মতোই। শরীরে বিপাকক্রিয়া এবং অন্যান্য কর্মকাণ্ড চালানোর জন্য পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি গ্রহণের প্রয়োজন। কম পরিমাণে পানি গ্রহণ করলে ইউরিন ইনফেকশন কিংবা শরীর ডিহাইড্রেট হতে পারে। শরীরে ডিহাইড্রেশন বা পানিস্বল্পতা হলে ত্বক ও চুল শুষ্ক হয়ে অতিরিক্ত চুল পড়তে থাকে। সুস্থ ত্বক ও সুস্থ চুল পেতে হলে বেশি বেশি পানি পান করতে হবে।
শীতের পোশাকের যত্ন নেওয়ার টিপস
দিনের বেলায় এখনও বেশ ভালো গরম, কিন্তু আবহাওয়ায় শুষ্কতা বেড়েছে। আবার রাতের দিকে হালকা শীতের হাওয়াও টের পাওয়া যাচ্ছে। অর্থাৎ শীতের দিন দরজায় কড়া নাড়ছে বলা যায়। এবার আলমারি, বক্স খাটের ভিতর থেকে শীতের লেপ-কম্বল, সোয়েটার-জ্যাকেটগুলো বের করার সময়। সেই এক বছর আগে তুলে রাখা হয়েছিল। এবার সেগুলো পরিষ্কার করার সময় হয়ে গেছে। কীভাবে এই কাজটি সহজে করবেন, রইল উপায়।
লেপের যত্ন: লেপ যদি শিমুল তুলোর হয়ে থাকে, তাহলে ধোয়া তো দূরের কথা, ড্রাই ওয়াশও করা যায় না। এক্ষেত্রে লেপ রোদে দিন। এতে লেপের ওপর থাকা ধুলো পরিষ্কার হয়ে যাবে। লেপের যদি কভার থাকে, তাহলে সেটি ধুয়ে নিন। লেপ পরিষ্কার না থাকলে অ্যালার্জি হওয়ার সম্ভাবনা প্রবল।
কম্বলের যত্ন: একই কথা কম্বলের ক্ষেত্রেও খাটে। এটিও পরিষ্কার রাখা জরুরি। তবে কম্বল কিন্তু ধোয়া যেতে পারে। শ্যাম্পুতে মিনিট দশেক ধুয়ে রোদে শুকিয়ে নিন। ঝামেলা এড়াতে লন্ড্রিতে দিয়ে দিতে পারেন। সেখান থেকেই ঝকঝকে করে পাঠাবে আপনার সাধের কম্বল।
কাঁথার যত্ন: কাঁথা পরিষ্কার করা কষ্টকর কাজ নয়। বাড়িতে অনায়াসেই কাঁথা ধুয়ে নেওয়া যায়। তারপর রোদে শুকিয়ে তা ব্যবহার করুন।
লেদার জ্যাকেটের যত্ন: বাড়িতে এই ধরনের জ্যাকেট পরিষ্কার করা সম্ভব নয় তাই এগুলো অবশ্যই লন্ড্রিতে দিয়ে দিন। এগুলো কখনই রোদে দেওয়া উচিত নয়। জ্যাকেট কয়েক বছর পুরনো হয়ে গেলে ভিতরের লাইনিং পালটে নিন।
সোয়েটারের যত্ন: পশমের জামা বা উলের সোয়েটার উষ্ণ পানিতে না ধুয়ে ঠান্ডা পানিতে ধুয়ে নিন। তবে ধোয়ার সময় পানিতে একটু পাতিলেবুর রস ও ভিনিগার দিয়ে দিতে পারেন। এতে রং ঠিক থাকবে। পশমের জামা ইস্ত্রি করার সময় অবশ্যই তার ওপর সুতির চাদর বিছিয়ে নিন। সরাসরি পশমের সঙ্গে ইস্ত্রির স্পর্শ যেন না হয়।
আরটিভি/এফআই
ডেঙ্গু রোগীর জন্য উপকারী যেসব খাবার
ডেঙ্গু জ্বর নিয়ে অনেক মানুষের মধ্যে উদ্বেগ রয়েছে। কারণ এই রোগে আক্রান্ত হয়ে অসুস্থ হয়ে পড়া, হাসপাতালে ভর্তি হওয়া বা মৃত্যুর সংখ্যা একেবারে কম নয়। কোন শরীরে কোন লক্ষণ দেখলে আপনি বুঝবেন যে ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়েছেন এবং সেক্ষেত্রে আপনার করণীয় কী হতে পারে, জেনে নিন।
ডেঙ্গুর লক্ষণগুলো কী?
সাধারণভাবে ডেঙ্গুর লক্ষণ হচ্ছে জ্বর। ১০১ ডিগ্রি থেকে ১০২ ডিগ্রি তাপমাত্রা থাকতে পারে। জ্বর একটানা থাকতে পারে, আবার ঘাম দিয়ে জ্বর ছেড়ে দেবার পর আবারো জ্বর আসতে পারে। এর সাথে শরীরে ব্যথা, মাথাব্যথা, চেখের পেছনে ব্যথা এবং চামড়ায় লালচে দাগ (র্যাশ) হতে পারে। তবে এগুলো না থাকলেও ডেঙ্গু হতে পারে।
ডেঙ্গু রোগীর জন্য উপকারী খাবার:
১. ডেঙ্গু আক্রান্ত ব্যক্তিদের জন্য সবচেয়ে প্রয়োজনীয় খাবার হলো প্রোটিন ও আয়রনসমৃদ্ধ খাবার। মাছ, মুরগির মাংস, চর্বিহীন লাল মাংস (গরু, ছাগল), ডিম, দুধ ও দুগ্ধজাত খাদ্যে প্রোটিন বেশি থাকে। এই খাবারগুলো রোগীর রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে।
২. রক্তে প্লাটিলেটের সংখ্যা বাড়াতে আয়রনসমৃদ্ধ খাবারের জুড়ি নেই। পালংশাক, সামুদ্রিক মাছ, কলিজা, মিষ্টিকুমড়া, ডালিম, মটরশুঁটি, ছোলা, মসুর ডাল, কচুশাক ইত্যাদিতে প্রচুর পরিমাণ আয়রণ রয়েছে, যা রোগীর শারীরিক দুর্বলতা কাটিয়ে উঠতেও সাহায্য করে।
৩. রক্তক্ষরণ ঝুঁকি কমাতে ডেঙ্গু রোগীকে ভিটামিন কে জাতীয় খাবার, যেমন সবুজ শাকসবজি, বাঁধাকপি, ব্রকলি ইত্যাদি খাওয়াতে হবে। এসব খাবারে দরকারি খনিজ উপাদান ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের পরিমাণও বেশি থাকে। তাই প্রতিদিন রোগীকে এই খাবারগুলো পরিমাণমতো খাওয়াতে হবে।
৪. ভিটামিন বি-১২–এর অন্যতম উৎস ডিম, দুধ, মাখন, পনির, কম চর্বিযুক্ত দই। ভিটামিন সি একটি কার্যকারী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, যা কোলাজেন উৎপাদনে সহায়তা করে এবং রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। ভিটামিন সি জাতীয় খাবার রক্তে প্লাটিলেটের সংখ্যা স্বাভাবিক রাখতেও কার্যকর। কমলা, মাল্টা, আপেল, পেয়ারা, আমড়া, পেঁপে, আম, আনারস, আঙুর, জাম ইত্যাদি ফলে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি আছে। ডেঙ্গু রোগীকে প্রতিদিন এই ফলগুলো পরিমিত পরিমাণে খাওয়াতে হবে।
৫. ডেঙ্গু রোগীদের পানিশূন্যতা দেখা দিতে পারে। সে ক্ষেত্রে রোগীকে প্রতিদিন আড়াই থেকে তিন লিটার পানি পান করতে হবে। পাশাপাশি শরীরে পানির পরিমাণ ঠিক রাখতে ডাবের পানি ও বিভিন্ন ধরনের ফলের রস উপকারী। এ ছাড়া নরম সেদ্ধ জাউ ভাত, খিচুড়ি, বিভিন্ন ধরনের স্যুপ খেতে দিতে হবে। প্রয়োজন বুঝে ডেঙ্গু রোগীকে ওরাল রিহাইড্রেশন সলিউশনও (ওআরসি) দেওয়া যেতে পারে।
ডেঙ্গু জ্বরের রোগীদের যেসব খাবার এড়িয়ে চলতে হবে:
তৈলাক্ত ও ভাজা খাবার, প্রক্রিয়াজাত খাবার, স্যাচুরেটেড ফ্যাটযুক্ত খাবার, মসলাযুক্ত খাবার, আচার, চিনিযুক্ত খাবার, কাঁচা সবজি ইত্যাদি। এ ছাড়া উচ্চ আঁশযুক্ত খাবার, চা-কফি, কোকো, অন্যান্য ক্যাফেইনযুক্ত পানীয় ইত্যাদিও এড়াতে হবে।
তথ্যসূত্র: অনলাইন
আরটিভি/এফআই
তিন পদ্ধতিতে বহুদিন সংরক্ষণ করে রাখা যাবে কাঁচা মাংস
আধুনিক এই সময়ে একটা করে ফ্রিজ সবার বাড়িতেই আছে। কর্মব্যস্ত এই সময়ে ফ্রিজ এক রকম স্বস্তির নাম বলা যায়। কারণ সেখানে আগে থেকেই মাংস কিনে এনে রেখে দেওয়া যায়। আর তাই সবসময় বাজারের ঝামেলায়ও পড়তে হয় না। তবে হঠাৎ যদি অফিস থেকে বাড়ি ফিরে দেখেন এই মহামূল্যবান যন্ত্রটি খারাপ হয়ে গিয়েছে তখন কি উপায়। নষ্ট ফ্রিজ তাৎখনিক ঠিক করাও সম্ভব নয়। আর তখন ফ্রিজে থাকা কাঁচা মাংস নিয়ে পড়তে হয় সমস্যায়। কিন্তু কিনে আনা কাঁচা মাংস কিন্তু ফ্রিজ ছাড়াও ভালো রাখা সম্ভব। কী ভাবে জানেন?
জেনে নিন ৩ উপায়—
১। মাংস ভালো রাখার প্রাচীন পদ্ধতিগুলোর মধ্যে একটি হলো স্মোকিং। মাংস ঝলসে রাখলে বহুদিন তা ভালো থাকে। খেতেও ভালো লাগে। ঝলসানো মাংসের নানা রকম রেসিপি আপনি সহজেই পেয়ে যাবেন।
২। কিউরিং পদ্ধতিতেও মাংস সংরক্ষণ করে রাখা যায়। এই পদ্ধতিতে মাংসের গায়ে অনেকটা মোটা করে লবণের স্তর লাগিয়ে রাখতে হবে। যাতে মাংসের পানি টেনে বের হয়ে যায়। এতে জীবাণু জন্মানোর সম্ভাবনাও কম। অনেক সময়ে লবণ, চিনি এবং পানি মিশিয়ে একটি মিশ্রণ তৈরি হয়। যাকে বলে ব্রাইন। মাংস এই ব্রাইনে পুরোপুরি ডুবিয়ে রেখে দিতে হবে।
৩। রোদে শুকিয়ে নিলেও কিন্তু মাংস ভালো থাকে। মাংস মাঝারি সাইজের পিস করে কেটে ভালো করে পানিতে ধুয়ে নিন। তারপর ডুবো পানিতে সামান্য ফুটিয়ে নিন। এবার পানি ভালো করে ঝরিয়ে লবণ-হলুদ মাখিয়ে একটি শিকে ঝুলিয়ে রোদে শুকিয়ে নিন ভালো করে। তাহলেই বহু দিন ভালো থাকবে মাংস।
আরটিভি/এফআই