বড়দিনের আয়োজনে যে খাবার তৈরি হয়
বিশ্বব্যাপী শুভ বড়দিন জাঁকজমকভাবে পালন হয়। খ্রিস্টান সম্প্রদায় এই দিনে পরিবারের সঙ্গে সময় কাটান, চার্চে গিয়ে প্রার্থনায় যোগদান করেন, নতুন জামাকাপড় ও নানা ধরনের খাবারদাবার তৈরি করে অতিথি আপ্যায়ন করেন। এভাবেই বিশেষ এই দিনটি উদযাপন করা হয়। বাংলাদেশে খ্রিস্টানদের মধ্যে বড়দিনের উল্লেখযোগ্য খাবার নানা ধরনের পিঠা।
ঘরে অতিথি আপ্যায়ন ছাড়াও আত্মীয়-স্বজন আর পাড়া প্রতিবেশীদেরও উপহার হিসেবে দেওয়া হয় এই পিঠা। এছাড়া গির্জায় সম্মিলিত ভোজের পাশাপাশি বাড়িতে বাড়িতে তৈরি হয় নানা রকমের মুখরোচক খাবার।
বড়দিনের খাবার দাবার আর নানা ধরনের আনুষ্ঠানিকতা নিয়ে চলুন জেনে নেওয়া যাক কিছু বিষয়—
খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বীরা সকালের নাস্তার পর পরিবারের সবাইকে সাথে নিয়ে গির্জায় যান প্রার্থনা করতে। প্রার্থনা শেষে গির্জায় রান্না করা খাবার সবার সাথে বসে খান। এর মধ্যে রয়েছে বিভিন্ন ধরনের মিষ্টি জাতীয় খাবার ও বিরিয়ানি। এছাড়াও ঘরে আরও অনেক রকমের খাবার রান্নাও করা হয়।
এছাড়াও বড়দিনের খাবার বলতে গেলেই চোখের সামনে ভেসে উঠবে নানারকম মুখরোচক খাবার। তবে ঐতিহ্যবাহী খাবারের কথা বললে কেক, জিঞ্জার ব্রেড, ল্যাম্ব রোস্ট, আস্ত মুরগি বা টার্কির রোস্ট, মোড়কে মোড়ানো চকলেট, ফ্রুট টার্ট, আপেল দিয়ে তৈরি পাই বা অন্য কোনো আইটেমের কথাই মনে পড়বে। এসব খাবার দিয়েই বড়দিন পালন করেন পৃথিবীর খ্রিস্টান সম্প্রদায়।
বাংলাদেশের চিত্রটাও ভিন্ন। যদিও বড়দিনের উৎসবে নির্দিষ্ট কোনো ধর্মীয় খাবার নেই। যে দেশে যে খাবার উৎসবগুলোতে প্রাধান্য পায় সেটিই মূল থাকে। আমাদের দেশে গ্রামগুলোতে বড়দিনের উৎসবের সঙ্গে ঐতিহ্যবাহী খাবারের পাশাপাশি নানা ধরনের পিঠা তৈরির রেওয়াজ রয়েছে। হরেক রকমের পিঠা বানানো হয়। তেলের পিঠা বানানো হয়। সেইসাথে মিষ্টি থাকে, কেক থাকে। কেকগুলো বেশিরভাগ বাসাতেই বানানো হয়। যারা পিঠা তৈরির সময় পান না তারা নানা রকম কুকিজ ও কেকের আয়োজন করেন।
অতিথিদের আপ্যায়ন করতে অনেকেই ডাক রোস্ট, জিঞ্জার ব্রেড তৈরি করেন। দুপুরের আয়োজনে পোলাও, মাংস, রোস্ট, কাবাব, সাথে ডেসার্টও থাকে। কখনো কেক ঘরে বানানো হয়, কখনো বাইরে থেকে কিনে আনা হয়। দুপুরে ভারি খাবারের আয়োজন করা হলেও রাতে সেই মেন্যু কিছুটা হালকা হয়ে যায়। বড়দিনে বিভিন্ন কেক ও পেস্ট্রিশপে নানা ধরনের কেকের আয়োজন থাকে। তেমনি থাকে পাঁচতারকা হোটেলগুলোতে বড়দিনের নানা আয়োজন।
দুপুরে যা আয়োজন করা হয় পোলাও, মাংস, রোস্ট, কাবাব, সাথে ডেসার্টও থাকে। রাতে সবাই ঝুঁকে পড়ে হালকা খাবারের দিকে। দুপুরে ভারি খাবারের আয়োজন করা হলেও রাতে সেই মেন্যু কিছুটা হালকা হয়ে যায়।
বড় দিনের খাবার-দাবার নিয়েও পার্থক্য রয়েছে বিভিন্ন ধারার বিশ্বাসীদের মধ্যে। ক্যাথলিক এবং প্রোটেস্টান্টদের মধ্যে এই পার্থক্য বেশি থাকে। ক্যাথলিকরা অ্যালকোহল এবং শুকরের মাংস খেলেও প্রোটেস্ট্যান্ট বা সেভেন্থ ডে অ্যাডভেন্টিস্টরা এই খাবারগুলো এড়িয়ে চলেন।
তবে খাবারের মেনুতে কিছুটা তারতম্য থাকলেও যে বিষয়টি সবার মাঝেই থাকে তা হচ্ছে বড়দিনের আনন্দ। যা অনেক গুণ বেড়ে যায় স্বজনদের সাথে সাক্ষাতের মাধ্যমে।
তথ্যসূত্র : বিবিসি
আরটিভি/এফআই
মন্তব্য করুন