• ঢাকা রোববার, ১৯ জানুয়ারি ২০২৫, ৫ মাঘ ১৪৩১
logo

ক্লাসরুমে মোবাইল নিষিদ্ধের সুফল পাচ্ছে নেদারল্যান্ডস

ডয়চে ভেলে

  ১৮ জানুয়ারি ২০২৫, ১৫:২৩
মোবাইল
সংগৃহীত ছবি

নেদারল্যান্ডসের অনেক স্কুলের ক্লাসরুমে মোবাইল ফোন নিষিদ্ধ করা হয়েছে। শিক্ষার্থীদের মনোযোগ বাড়ানোর লক্ষ্যে এই উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। আর এই নিষেধাজ্ঞা বাস্তবায়নের দায়িত্ব স্কুল কর্তৃপক্ষের।

নেদারল্যান্ডসের এক স্কুলের শিক্ষার্থীদের কিছু সময়ের জন্য মোবাইল থেকে দূরে থাকতে হবে।

সকাল আটটা বাজে। দ্বাদশ শ্রেণীর শিক্ষার্থীদের জার্মান ক্লাস নেন থমাস পেটার। তার ক্লাসে মোবাইল নিষিদ্ধ। ক্লাস শুরুর আগে তাই ফোনটি লকারে বা বাসায় রেখে আসতে হয়।

তিয়াস শোলটেন নামের এক শিক্ষার্থী এই বিষয়ে বলেন, আগে ক্লাস চলাকালে কখনো কখনো ফোন বাজতো এবং আমি বিষয়টিকে নির্বুদ্ধিতা মনে করতাম।

আরেক শিক্ষার্থী সাইনা জোরিৎসমা বলেন, এটা প্রয়োজনীয় কি না জানি না। আমার উন্নতি হয়েছে কিন্তু এটা আমার চেষ্টার নাকি মোবাইল নিষিদ্ধের ফল বুঝতে পারছি না।

ফোনসহ কাউকে পাওয়া গেলে তার কাছ থেকে সেটা নিয়ে নেয়া হয়। বিকেল পাঁচটার আগে সেটি ফেরত পাওয়া যাবে না। যেদিন ক্লাস আগেই শেষ হয়ে যায় সেদিন ব্যাপারটি বেশ বিড়ম্বনার।

জোরিৎসমা বলেন, আমারটি এখনো জব্দ হয়নি, কারণ আমি যথেষ্ট সচেতন। আমি শুধু আমার ফোনের জন্য পাঁচটা অবধি অপেক্ষা করতে চাই না।

শিক্ষক থমাস পেটার বলেন, গত ছয়মাসের অভিজ্ঞতায় আমি বলতে পারি শিক্ষার্থীরা আগের চেয়ে ক্লাসে বেশি মনোযোগী হয়েছে।

প্রধান শিক্ষক ফ্রিক ওপট এইন্ডেও তাতে একমত প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেন, ক্লাস আগের চেয়ে অনেক শান্ত এবং তর্কও কম হয়। মোবাইল এক নিয়মিত সমস্যা ছিল। সবাই সেটি লকারে রেখে আসে না। তাই দরজায় দাঁড়িয়ে তল্লাশি চালিয়ে বলতে হয়: এটা দূরে রেখে আসো। অনেকে এই নিষেধাজ্ঞা অমান্য করতে চায় এবং নানা যুক্ত দেয়। আর তাতে ক্লাসের আট মিনিট নষ্ট হয়।

আমস্টারডামের সিগনাস গিমনাজিউম হচ্ছে নেদারল্যান্ডসের শুরুর দিকের স্কুলগুলোর একটি যেখানে মোবাইল নিষিদ্ধ করা হয়েছে। ডাচ সরকার এই উদ্যোগ নিয়েছিল, তবে স্কুলগুলো তা মানতে আইনত বাধ্য নয়।

স্পেন এবং ব্রিটেনে পরিচালিত গবেষণা বলছে: মোবাইল নিষেধাজ্ঞা ক্লাসরুমে মনোযোগ বাড়ায়। এটা দুর্বল শিক্ষার্থীদের জন্য বিশেষভাবে প্রযোজ্য বলে মনে করেন শ্যেপ ফন ডেয়ার প্লুখ। মোবাইল নিষেধাজ্ঞার নীতিমালা তৈরিতে সহায়তা করেছেন তিনি।

প্লুখ বলেন, টিকটক এবং স্ন্যাপচ্যাটের মতো সেলফোন অ্যাপগুলো ব্যবহারকারীর দৃষ্টি আকর্ষণের জন্য তৈরি হয়েছে। এই শিল্পে মনোযোগই সব। এর অর্থ হচ্ছে বড় টেক ফার্ম এবং তাদের অঢেল সম্পদের বিপরীতে একজন শিক্ষক। সবকিছু মনোযোগ আকর্ষণের জন্য এবং তা ধরে রাখতে অত্যন্ত বুদ্ধি খাটিয়ে তৈরি করা। ফলে এটা অসম যুদ্ধ।

তবে বিষয়টি শুধু মনোযোগ বিঘ্নের নয়। এর সামাজিক দিকও রয়েছে। শিক্ষার্থীদেরকে খেলাধুলা এবং সরাসরি কথা বলায় উৎসাহী করা হয়। তাই নিষেধাজ্ঞা বিরতির সময়ও বলবৎ থাকে।

শিক্ষার্থী লিজা মারসেন বলেন, মোবাইল ব্যবহার না করে অন্যদের সঙ্গে মানিয়ে চলতে শেখাটা রসবোধপূর্ণ ব্যাপার। কারণ এখন এআই, চ্যাটজিপিটি ইত্যাদির সহায়তায় সবকিছুই অনলাইনে চলে গেছে। তাই আমাদের অন্যদের সঙ্গে মিশতে শিখতে হবে। এজন্য মোবাইলের পেছনে কম সময় দিলে ভালো। তবে সবাই নিয়ম মানে না।

আজ দুপুরের আগে পাঁচটি মোবাইল জব্দ করা হয়েছে। দারোয়ান ইওহান ব্যুনের তত্ত্বাবধানে আছে সেগুলো। তিনি বলেন, এটার কারণে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আমার যোগাযোগ বেশি হয় এবং এটা চমৎকার ব্যাপার। তবে এটা এক লুকোচুরির খেলাও। যাদের ফোন জব্দ করা হয়েছে তাদের দুপুরটা অনেক দীর্ঘ হবে। বাকিরা সবাই ক্লাস শেষ হওয়ার সাথে সাথে ফোন ফেরত পাবে।

আরটিভি/এএইচ

মন্তব্য করুন

Bangal
rtv Drama
Radhuni
  • লাইফস্টাইল এর পাঠক প্রিয়
আরও পড়ুন
বগুড়ায় বেঙ্গল মোবাইলের রিটেইলার মিট অনুষ্ঠিত
জুলাই গণহত্যা তদন্তে সব মোবাইল কোম্পানিকে সহায়তার নির্দেশ
মোবাইল ইন্টারনেটে সুখবর, প্যাকেজ নিয়ে বিটিআরসির নতুন নির্দেশনা
মোবাইল রেখে গরু নিয়ে পালিয়ে গেল চোর