ট্রাম্পের নৈশভোজের আসরে জামেওয়ার শাড়ি পরে চমকে দিলেন নীতা আম্বানি
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নৈশভোজে ভারতীয় শিল্প ও ঐতিহ্যের প্রতিনিধিত্ব করতে উপস্থিত হয়েছিলেন নীতা আম্বানি। সেদিন তিনি পরেছিলেন এক অসাধারণ কাশ্মীরি জামেওয়ার শাড়ি, যা সবার দৃষ্টি আকর্ষণ করেছিল। জামেওয়ার কাশ্মীরের ঐতিহ্যবাহী সূচিশিল্পের এক অনন্য নিদর্শন, যার জন্ম পারস্যে। প্রায় ৫০০ বছর আগে এই সূক্ষ্ম শিল্পকলা কাশ্মীরে প্রবেশ করে এবং মুঘল যুগে এটি বেশ প্রসার লাভ করে। সম্রাট আকবর নিজেই জামেওয়ার শিল্পের পৃষ্ঠপোষকতা করেছিলেন, যার ফলে কাশ্মীরের দক্ষ কারিগররা পশমিনা শাল ও রেশমের ওপর জটিল নকশা তৈরিতে মন দিয়েছিলেন।
জামেওয়ারের কাজ এতটাই সূক্ষ্ম ও সময়সাপেক্ষ যে একটি শাল বা শাড়ি তৈরি করতে বছরের পর বছর লেগে যেত। এমনকি কোনও কোনও ক্ষেত্রে কাজ শেষ হতে এক দশকেরও বেশি সময় লেগে যেত। এই দীর্ঘমেয়াদি পরিশ্রম এবং নিখুঁত কারুকাজের জন্য জামেওয়ার বরাবরই রাজপরিবার বা অভিজাতদের মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিল। যদিও সময়ের সঙ্গে জামেওয়ারের অনুপ্রেরণায় বেনারসিতে ব্রোকেড কাজ জনপ্রিয় হয়, তবে খাঁটি জামেওয়ারের ব্যবহার ফ্যাশনে খুব বেশি দেখা যায়নি।
নীতা আম্বানি যে জামেওয়ার শাড়িটি পরেছিলেন, তা পোশাকশিল্পী তরুণ তেহলানির নকশা করা। তরুণ তার সাম্প্রতিক সংগ্রহে জামেওয়ারের ঐতিহ্যবাহী শৈলীতে আধুনিকতার ছোঁয়া এনে নতুনত্ব সৃষ্টি করেছেন। নীতার শাড়িটির ছিল কালো সিল্কের উপরে। শাড়িতে কাশ্মীরি শিল্পীরা হাতে জামেওয়ার সূচিকর্ম করেছেন। এরপর এর বিভিন্ন অংশ হাতে আঁকা হয়, প্রিন্ট করা হয় এবং শেষে সূক্ষ্ম আড়ি ও কাশিদাকারি কাজ যুক্ত করা হয়। শাড়িটির কাজ সম্পন্ন করতে লেগেছে ১৯০০ ঘণ্টা, যা একটানা কাজের হিসাবে প্রায় ৭৯ দিন। নীতা শাড়ির সঙ্গে মিলিয়ে পরেছিলেন নকশাকাটা কলারের কনুইছোঁয়া হাতার ব্লাউজ, যাতে ছিল সূক্ষ্ম কাশিদাকারি কাজ।
তরুণ তেহলানি ইনস্টাগ্রামে জানান, নীতার শাড়ি শুধু ঐতিহ্যের প্রতিনিধিত্বই করেনি, বরং এটি ভারতীয় সূক্ষ্ম কারুশিল্প ও সমকালীন ডিজাইনের এক অসামান্য মেলবন্ধন। তিনি বলেন, “নীতা আম্বানি বরাবরই ভারতের সমৃদ্ধ শিল্পের প্রশংসক। তার সংগ্রহে বহু জামেওয়ার রয়েছে। তবে এই বিশেষ শাড়ির মাধ্যমে তিনি ভারতীয় ঐতিহ্যকে শ্রদ্ধা জানানোর পাশাপাশি আধুনিকতাও তুলে ধরেছেন।”
আরটিভি/জেএম
মন্তব্য করুন