জরায়ু ক্যানসারের কারণ ও চিকিৎসা
ক্যানসারে আক্রান্ত নারীদের প্রায় এক-চতুর্থাংশই ভুগে থাকেন জরায়ুর ক্যানসারে। সচেতনতার অভাবে এবং লজ্জার কারণে আমাদের দেশে নারীরা এটা নিয়ে আলোচনা করতেই চান না। অথচ প্রতিবছর বাংলাদেশে ১২০০০ মহিলা এ রোগে আক্রান্ত হন। ফলে জীবনঘাতী এই ক্যানসার কেড়ে নিচ্ছে বহু প্রাণ। চলুন আজ জেনে নেই বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের মতে জরায়ুর ক্যানসারের কারণ, লক্ষণ ও প্রতিকার।
কেন হয়
১. জরায়ুর ক্যানসারের জন্য মূলত হিউম্যান প্যাপিলোমা ভাইরাস দায়ী। এই ভাইরাস সহবাসের মাধ্যমে ছড়ায়। অল্প বয়সে বিয়ে হলে এবং পাঁচ বছরের বেশি সময়কাল ধরে জন্মনিয়ন্ত্রণের বড়ি খেলে জরায়ুর ক্যানসারের ঝুঁকি বাড়ে।
২. রোগটি দেখা যায় ৩৫ বছর ও ৫০-৫৫ বছর বয়সে। ২০ বছরের নিচের বয়সী কোনো নারী গর্ভধারণ করলেও হতে পারে।
৪. বহুগামিতা এ রোগের অন্যতম একটি কারণ।
৫. যৌনাঙ্গ অপরিচ্ছন্ন রাখলে জরায়ু ক্যানসার হতে পারে।
জরায়ুর ক্যানসারের লক্ষণ
১. দুই মাসিক এর অন্তর্বর্তী সময়ে হালকা রক্তপাত হওয়া।
২. মাসিকের সময় রক্তপাতের পরিমাণ স্বাভাবিকের তুলনায় বেশি এবং দীর্ঘমেয়াদী হওয়া।
৩. সহবাসের পরে ব্যথা অনুভূত হওয়া।
৪. মাসিক বন্ধ হবার পরও মাসিকের রাস্তা দিয়ে রক্তপাত হওয়া।
৫. অনিয়মিত মাসিক হওয়া।
৬. মাসিক সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে যাওয়ার ১ বছর পরেও রক্তস্রাব দেখা যাওয়া।
৭. যৌনসংগমের পর রক্তস্রাব হওয়া।
৮. যোনিপথে বাদামি অথবা রক্তমিশ্রিত স্রাবের আধিক্য দেখা দেওয়া এবং সাদা দুর্গন্ধযুক্ত যোনিস্রাব হওয়া
--------------------------------------------------------
আরও পড়ুন: বাড়ি বানাতে সতর্ক থাকতে হবে যেসব বিষয়ে
--------------------------------------------------------
বাংলাদেশে জরায়ু ক্যানসারের চিকিৎসা
মহিলাদের বয়স ৩০ এর বেশি হলেই জরায়ু মুখ অবশ্যই পরীক্ষা করাতে হবে। ১৮ বছরের পূর্বে বিবাহিতদের ক্ষেত্রে ২৫ বছর হলেই জরায়ু মুখ পরীক্ষা করাতে হবে। জেলা সদর হাসপাতাল, মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্র এবং নির্বাচিত ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্র, সকল সরকারি মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় ও বেশ কয়েকটি বেসরকারি হাসপাতালে জরায়ু মুখ পরীক্ষা করা হয়।
এছাড়াও সরকারি মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে জরায়ুর মুখের ক্যানসারপূর্ব অবস্থায় চিকিৎসা করা হয়ে থাকে। এক্ষেত্রে রোগীকে হাসপাতালে ভর্তি হতে হয় না। ক্যানসারপূর্ব অবস্থা ধরা পড়লে সামান্য চিকিৎসার মাধ্যমে ক্যানসার প্রতিরোধ করা সম্ভব। এক্ষেত্রে জরায়ু ফেলে দেবার প্রয়োজন হয় না এবং চিকিৎসার পর সন্তান ধারণ সম্ভব।
আরও পড়ুন:
কেএইচ/পি
মন্তব্য করুন