ক্যাপসিকামের যত গুণ
ক্যাপসিকাম দৃষ্টিনন্দন একটি সবজি। উচ্চ মাত্রার ভিটামিন ‘সি’ তে ভরপুর। মাছ, মাংস বা যেকোনো সবজির সঙ্গে মিশিয়ে খাওয়া যায় ক্যাপসিকাম। অল্প তেল, মশলা দিয়ে রান্না করে খেলে কোষ্ঠকাঠিন্য, বদহজম, বুকের জ্বালাপোড়া (গ্যাস্ট্রিকের জন্য হয়) দূর হয়।
ঠাণ্ডাজনিত ইনফেকশানগুলোর বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে ক্যাপসিকাম। দাঁতের ক্ষয় হয়ে যাওয়া, দাঁতের গোড়ায় ব্যথা, আর্থ্রাটিসের ব্যথা কমাতে অবদান রাখে ক্যাপসিকাম। এই সবজিটি দেহের ক্ষতিকারক কোলস্টেরলের মাত্রা কমিয়ে, বাড়িয়ে দেয় কাজ করার শক্তি।
রান্না ক্যাপসিকামের চেয়ে টাটকা ও কাঁচাতে পুষ্টি বেশি। তাই কাঁচা খাওয়াই ভালো।
জ্বর হওয়ার পরে বা যেকোনো অপারেশনের পরে মানুষের মুখের রুচি কমে যায়। ক্যাপসিকামের সালাদ রুচি বৃদ্ধি করে, দেহের শিরা উপশিরা ও স্নায়ুগুলোর পুষ্টি যোগায়। সারা শরীরে সঠিকভাবে রক্ত চলাচলে সাহায্য করে বলে হৃৎপিণ্ড ভালো থাকে।
বমি বমি ভাব দূর করতে অবদান রাখে। হাই ব্লাডপ্রেসার বা উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা না থাকলে কাঁচা লবণ (তরকারিতে খাবার লবণ) দিয়ে খেতে পারেন ক্যাপসিকাম।
হাই ব্লাডপ্রেসার থাকলে কাঁচা লবণ খাওয়া অনুচিত। বাড়তি লবণ খেলে আর উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে না থাকলে দেহে শরীরে পানি জমতে পারে। পরিণামে তৈরি হবে নানান জটিলতা। এই সবজিতে চিনি ও ফ্যাট নাই। তাই ডায়াবেটিক ও হৃদরোগীরা ভয় ছাড়াই খেতে পারবেন।
মাংসপেশির ব্যথা, হাড়ের জয়েন্ট এর ব্যথা দূর করে ক্যাপসিকাম। বার্ধক্যকে দূরে ঠেলতে এর অবদান অপরিসীম। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে বাড়িয়ে দেয় প্রচুর পরিমাণে। গর্ভবতী মায়েরা খেলে গর্ভস্থ শিশুর জন্য যথেষ্ট উপকার হয়।
ওজন কমাতে সাহায্য করে। এতে নেই কোনও কোলেস্টেরল বা চর্বি। তাই ওজন কমাতে চান যারা তারা নিঃসন্দেহে খেতে পারেন ক্যাপসিকাম। মাংসের সঙ্গে খেলে চর্বি কমায় মাংসের। ফলে ওজন কমাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
আমাদের মেরুদণ্ডের স্নায়ুগুলোকে পুষ্টি দেয় ক্যাপসিকাম। তাই যাদের মেরুদণ্ডের ব্যথা বা কোমরে ব্যথা রয়েছে তাদের জন্য ভীষণ উপকারী হলো ক্যাপসিকাম।
ক্যাপসিকামের খোসা পাকস্থলী, ক্ষুদ্রান্ত (পেটের একধরনের অঙ্গ), কোলনের ক্যান্সার প্রতিরোধ করে। কোলনের ক্যান্সারের রোগীদের অধিকাংশ ক্ষেত্রেই ভীষণ কোষ্ঠকাঠিন্যর সমস্যা হয়। ইসবগুলের ভূষি, শাক, সবজি, ক্যাপসিকাম ও প্রচুর পরিমাণে পানি দূর করবে এই সমস্যা।
পুষ্টির গুণ বিচারে সালাদের বাটিতে, তরকারিতে এই সবজি হোক আপনার উপকারী সঙ্গী।
ডাঃ ফারহানা মোবিন;
চিকিৎসক ও লেখক।
জিএ
মন্তব্য করুন