জুতা জামা শপিং ব্যাগ থেকে ভাইরাস সংক্রমণ হতে পারে
প্রাণঘাতী কোভিড-19 করোনাভাইরাসের কালো থাবায় ধীরে ধীরে এক জটিল সময়ে প্রবেশ করছে বিশ্ব। দিন যতই যাচ্ছে ততই বাড়ছে আক্রান্তের ও মৃতের সংখ্যা। ভাইরাসের ছড়িয়ে পড়া রুখতে দেশে দেশে চলছে লকডাউন। এই পরিস্থিতিতে স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন যতোটা সম্ভব সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে।
জরুরি প্রয়োজন ছাড়া বাসার বাইরে না যাওয়ার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। তারপরও বাইরে যেতে হয়। প্রাণ বাঁচানোর জন্য খাবার সংগ্রহ বা ওষুধ কেনার জন্য বাইরে যাওয়া ছাড়া উপায় থাকে না। একান্ত প্রয়োজনে যদি বাইরে যেতেই হয় তাহলে ভাইরাস যাতে বাসায় প্রবেশ করতে না পারে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। জুতা, জামা, শপিং ব্যাগের মাধ্যমে বাড়িতে করোনা ছড়িয়ে পড়া ঠেকাতে যা করবেন।
চ্যানেল ৪ শো 'করোনভাইরাস: আপনার ঘরটি কতটা পরিষ্কার?' অনুষ্ঠানে ডা. জাভিদ আবদেল মোনিম এবং ভাইরোলজিস্ট ডা. লিসা ক্রস চমৎকার কিছু পরামর্শ দিয়েছেন। তারা বলেছেন যে, হাত ধোয়ার ফলে আপনার হাতের ভাইরাসটি মারা যায়, তবে কোভিড-19 এখনও অন্য উপায়ে আপনার ঘরে প্রবেশ করতে পারে। সেগুলো হচ্ছে আপনার জামা-কাপড়, জুতা, শপিং ব্যাগ ইত্যাদির মাধ্যমে।
যুক্তরাজ্যের প্রায় সব পরিবারই বর্তমানে লকডাউনে রয়েছে, তবে অনেককে এখনও প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র পেতে বা কাজ করতে বাইরে যেতে হয়। সুতরাং দুই বিশেষজ্ঞ আপনার বাড়িটি সুরক্ষিত রাখতে কঠোর নজরদারি করার পরামর্শ দিয়েছেন।
লিংকনশায়ার লাইভ রিপোর্ট জানিয়েছে, প্রথম কাজটি হল আপনি ঘরে ঢোকার সাথে সাথে জুতা খুলে ফেলবেন এবং বাইরে বেরোনোর সময় কেবল এক জোড়া জুতাই পরবেন। আপনি বাইরে থেকে এসে প্রথমেই জুতা খুলে ফেলুন এবং সেটা বাইরে রাখুন। বেশিরভাগ জুতাগুলিতে একটি অ-ছিদ্রযুক্ত রাবারের সোল থাকে, আর এমন একটি রাবারের সোলে ভাইরাসটি তিন থেকে পাঁচ দিন পর্যন্ত বেঁচে থাকতে পারে।
বাইরে থেকে ঘরে ফিরেই সরাসরি কাপড় পরিবর্তন এবং ধুয়ে নেয়ার পরামর্শ দিয়েছেন ডা. আবদেল মোনিম এবং ডা. ক্রস উভয়ে। বিশেষত যদি আপনি জনসাধারণের পরিবহণে থাকেন তাহলে এটা করতেই হবে। তা না হলে ভাইরাসটির প্রবেশ ঠেকানো যাবে না। এই ভাইরাস কাপড়ে ২৪ ঘন্টা পর্যন্ত বেঁচে থাকতে পারে।
যদি গণপরিবহনে চলতে হয়, তাহলে বাড়িতে ফিরেই কোনও কিছু স্পর্শ না করে পোশাক পরিবর্তন করে সাথে সাথেই গোসল করে কাপড় ধুয়ে নিতে হবে।
তবে খাবারের মাধ্যমে করোনায় আক্রান্ত হওয়ার কোনও ঝুঁকি নেই বলে বলছেন তারা। এমনকি খাদ্যদ্রব্যের মাধ্যমে এই ভাইরাস যদি আমাদের পেটেও চলে যায় তাহলেও কোন সমস্যা নেই। কারণ ভাইরাসের কণাগুলি সম্ভবত আমাদের পেটের অ্যাসিডে বেঁচে থাকতে পারে না। তবে খাদ্যদ্রব্য প্যাকেজিংয়ে সতর্ক থাকা উচিত। কারণ সেখান থেকে ভাইরাসটি সংক্রমিত করতে পারে।
প্রাণঘাতী এই ভাইরাস কার্ডবোর্ডে ২৪ ঘন্টা এবং প্লাস্টিকের উপরে তিন থেকে পাঁচ দিন পর্যন্ত বেঁচে থাকতে পারে, তাই ডা. ক্রস মানুষকে যতটা সম্ভব বাইরের প্যাকেজিং ফেলে দেয়ার পরামর্শ দিয়েছেন। সূত্র: ক্রনিক্যাল লাইভ
এস
মন্তব্য করুন