নিতম্বের ব্রণের ঘরোয়া প্রতিকার
ব্রণ, ত্বকের এমন একটি সাধারণ সমস্যা যা, শুধুমাত্র আমাদের মুখের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়, শরীরের আরও অনেক অংশে হয়ে থাকে। দেহের বিভিন্ন অংশে ব্রণ হওয়ার মধ্যে একটি হলো নিতম্বে ব্রণ। এতে আক্রান্ত ব্যক্তিরা প্রদাহ, ব্যথা, চুলকানি এবং জ্বালায় জর্জরিত হয়ে পড়েন। তাই, এটি চিকিৎসা না করে ছেড়ে দেওয়া উচিত নয়। নিতম্বে ব্রণ মূলত, ত্বকের ছিদ্র বন্ধ হওয়া এবং চুলের ফলিকলগুলোর প্রদাহজনিত কারণে হয়। আর, এই চিকিৎসার ক্ষেত্রে বিভিন্ন ধরনের ঘরোয়া পদ্ধতি যথেষ্ট।
আসুন জেনে নিই নিতম্বে ব্রণ সারাতে কী কী ঘরোয়া পদ্ধতি অবলম্বন করবেন
লেবুর রস এবং গ্লিসারিন
অ্যাসিডযুক্ত লেবুতে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট বৈশিষ্ট্য রয়েছে এবং গ্লিসারিনে অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি বৈশিষ্ট্য আছে। এই উভয় উপাদানই ব্রণ কমাতে খুব কার্যকর। ১ চা চামচ লেবুর রস ও ১ চা চামচ গ্লিসারিন- একটি পাত্রে দুটি উপাদান ভালো করে মিশিয়ে এরপর, তুলোয় এই মিশ্রণটি নিয়ে আক্রান্ত জায়গায় প্রয়োগ করুন। ১০-১৫ মিনিট রেখে দিন এবং পরে ভাল করে ধুয়ে ফেলুন।
নারিকেল তেল
নারকেল তেলের ইমোলিয়েন্ট, অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি ও অ্যান্টি-ব্যাকটিরিয়াল বৈশিষ্ট্যগুলো ত্বককে গভীরভাবে পরিষ্কার করতে এবং ত্বকে সংক্রমণের চিকিৎসা করতে, নিতম্বে ব্রণ থেকে মুক্তি দেওয়ার একটি শক্তিশালী প্রতিকার। আপনার তালুতে অল্প পরিমাণে নারকেল তেল নিন। আক্রান্ত জায়গায় নারকেল তেল লাগান এবং কয়েক মিনিট ধরে সেখানে ম্যাসাজ করুন। সারারাত রেখে দিন। সকালে হালকা গরম পানি দিয়ে এটি ধুয়ে ফেলুন।
বরফ
নিতম্বের উপরে বরফ ঘষলে, তা ব্রণ নিরাময়ে সহায়তা করে। এটি ত্বককে শান্ত করে এবং ব্রণজনিত প্রদাহ হ্রাস করে। ১-২ টি আইস কিউব নিয়ে কয়েক মিনিট ধরে আক্রান্ত স্থানে আইস কিউবগুলো ঘষুন। কোনও কাপড় দিয়ে ঢেকে দেওয়ার আগে, জায়গাটি শুকিয়ে নিন।
ওটমিল, দই এবং হলুদ
ওটমিল ব্রণ দূর করতে ত্বককে এক্সফোলিয়েট করে। দইতে উপস্থিত ল্যাকটিক অ্যাসিড, হলুদের অ্যান্টিসেপটিক বৈশিষ্ট্যগুলোর সঙ্গে মিলিত হয়ে ত্বকের ছিদ্রগুলো পরিষ্কার করে এবং নিতম্বের ব্রণ চিকিৎসা করে। তাই ১ টেবিল চামচ গ্রাউন্ডেড ওটমিল, ১ টেবিল চামচ দই, ১ চা চামচ হলুদ একসঙ্গে ভালোভাবে মেশান। আক্রান্ত জায়গায় পেস্ট লাগান এবং কয়েক মিনিট ধরে ম্যাসাজ করুন। প্রায় পাঁচ মিনিট রেখে দিন। পরে এটি ধুয়ে ফেলুন এবং শুকনো করে নিন।
টি ট্রি অয়েল এবং অলিভ অয়েল
টি ট্রি অয়েলের অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল এবং অ্যান্টি-ফাঙ্গাল বৈশিষ্ট্যগুলি নিতম্বের ব্রণ চিকিৎসা করে। এটি প্রদাহ কমাতেও সহায়তা করে। তাই ১ টেবিল চামচ অলিভ অয়েল, ১ চা চামচ টি ট্রি অয়েল নিয়ে একসঙ্গে একটি পাত্রে ভালো করে মেশান। মিশ্রণটি আক্রান্ত জায়গায় লাগান। ১০ থেকে ১৫ মিনিট রেখে দিন এবং পরে হালকা গরম পানিতে ধুয়ে শুকান।
দই ও হলুদ
আম্লিক প্রকৃতির দইয়ের সাথে অ্যান্টি-সেপটিক বৈশিষ্ট্যযুক্ত হলুদ মিশ্রিত করে লাগালে নিতম্বের ব্রণ কমে। ১/২ টেবিল চামচ দই, ১ চা চামচ হলুদ একটি পাত্রে ভালোভাবে মেশান। এরপর, মিশ্রণটি আক্রান্ত জায়গায় লাগান এবং শুকনোর জন্য কিছুক্ষণ রাখুন। পরে হালকা গরম পানিতে এটি ধুয়ে ফেলুন।
অ্যালোভেরা
নিতম্বের ব্রণর ক্ষেত্রে অ্যালোভেরাও বেশ কার্যকরী। প্রয়োজন মতো ফ্রেশ অ্যালোভেরা জেল আক্রান্ত জায়গায় লাগান। ২০ থেকে ২৫ মিনিট রেখে দিন। পরে হালকা গরম পানিতে এটি ধুয়ে ফেলুন এবং শুকিয়ে নিন।
বেকিং সোডা
অ্যান্টি-ব্যাকটিরিয়াল বৈশিষ্ট্য যুক্ত বেকিং সোডা নিতম্বে ব্রণ চিকিৎসার জন্য সেরা ঘরোয়া প্রতিকারগুলোর একটি। ১/২ চা চামচ বেকিং সোডায় পরিমাণ মতো পানি দিয়ে একটি পাত্রে ভালোভাবে মেশান। আক্রান্ত জায়গায় মিশ্রণটি লাগান। প্রায় পাঁচ মিনিট রেখে দিন। এরপর, হালকা গরম পানিতে ধুয়ে ফেলুন।
চালের গুঁড়ো, দই এবং মধু
চালের গুঁড়ো ব্রণ নিরাময়ে ত্বককে এক্সফোলিয়েট করে। আর, মধু ত্বকের ক্ষতি থেকে রক্ষা করে এবং ত্বককে ময়েশ্চরাইজ রাখে। তাই ১ টেবিল চামচ চালের গুঁড়ো, ১ চা চামচ দই, ১ চামচ মধু একটি পাত্রে ভালোভাবে মিশান। প্রায় পাঁচ মিনিট ধরে এই মিশ্রণটি আক্রান্ত জায়গায় লাগান। পরে হালকা গরম জলে এটি ধুয়ে ফেলুন।
জিএ
মন্তব্য করুন