লকডাউনে সন্তানের সঙ্গে বাবার সম্পর্ক যেভাবে ভালো হবে
লকডাউনে সন্তানের সঙ্গে বাবার সম্পর্ক যেভাবে ভালো হবসন্তানের সঙ্গে মায়ের সম্পর্ক বেশি মধুর হয় এটা চিরন্তন সত্য। কিন্তু মায়ের পর যার ছায়া প্রয়োজন তিনি হলেন বাবা। জন্মের দুই মাসের মধ্যে সন্তান তার বাবাকে সনাক্ত করতে পারে। মায়ের পাশাপাশি বাবাও শিশুর বেড়ে ওঠার ক্ষেত্রে খুব গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। তাই মায়ের ছোটবেলা থেকেই বাবার সঙ্গে শিশুর সখ্যতা গড়ে ওঠা অত্যন্ত জরুরী। কিন্তু বাবারা যখন সংসারের মূল হন, সারাদিন কাজকর্মে বাইরে থাকেন তখন অনেক সময় সন্তানের সঙ্গে বাবার ঠিকমতো সম্পর্ক গড়ে ওঠে না। লকডাউনের এই সময় সুযোগ সন্তানের সঙ্গে বাবার সম্পর্ক ভালো করার।
চলুন জেনে নিই বাবার সঙ্গে শিশুর বন্ধন স্থাপনে যা করতে হবে
শিশুর প্রয়োজনীয়ও কাজগুলোতে বাবার অংশ নেয়া
প্রতিটি শিশু তার বাবার ভালোবাসার টান অনুভব করতে পারে। মায়ের পাশাপাশি শিশুর কাপড় বদলানো, পরিষ্কার করা, খেলা করা, গান শোনানো, গল্প বলা ইত্যাদি কাজে বাবারও সমান অংশগ্রহণ রাখতে হবে। শিশুদের বেড়ে ওঠার ক্ষেত্রে তার পারিপার্শ্বিক পরিস্থিতি, পরিবার পরিজন একটি শিশু খুব সহজেই আঁচ করতে পারে। মায়ের আদরের পাশাপাশি বাবার যত্ন এমনি প্রভাব ফেলে যে পরবর্তীতে বাবার সাথে শিশুটির খুব সহজেই বন্ধন তৈরি হয়ে যায়।
সন্তানদের আলাদা করে না দেখা
যে সন্তান দেখতে বেশি সুন্দর তাকে কাছাকাছি রাখব, যত্ন করব অথবা ছেলে বাবার যত্ন পাবে, মেয়ে মায়ের যত্ন পাবে এমন পার্থক্য করা উচিৎ না। মেয়ে সন্তান হলেও তার সাথে বন্ধন দৃঢ় করতে হবে বাবার।
শিশুকে ভয় দেখানো যাবে না
কোন অবস্থাতেই শিশুদের ভয় দেখানো যাবে না। অনেক সময় ভয়ের ক্ষেত্রেও উৎসাহিত করতে হবে। সন্তানের সামনে নিজেকে ভীতিকর চরিত্র হিসেবে স্থাপন করবেন না। বাবার ভয়ে যেন সন্তানেরা গুটিসুটি হয়ে না থাকে। শিশুদের এই দিকটা ভবিষ্যতে শিশুদের মনে দারুণ আঘাত হিসেবে কাজ করতে পারে।
শিশুকে সময় দেয়া
শিশুর পছন্দমতো খেলনা কিনে দেয়াই বাবার একমাত্র কর্তব্য নয়। শিশুদের জন্য যথেষ্ট পরিমাণ সময় বাবার অবশ্যই দিতে হবে। শিশুর মানসিক অবস্থা বোঝাও বাবার দায়িত্ব। অনেক সময় বাবার আদরে শিশুর দিনের শুরু ও সমাপ্তি অনেক ভালো হতে পারে।
শারীরিক নির্যাতন না করা
রাগ দিয়ে নয় ভালোবাসা দিয়ে করা যায় বিশ্বজয়। শিশুর কোনো ভুলের জন্য শারীরিক নির্যাতন নয় বরং ভালোবেসে তাকে পরামর্শ দিলে, মানসিকভাবে বুঝালে অনেক সময় শিশুর মনে ভালো কিছু গেঁথে যায়। পরবর্তীতে সে একই ভুল আর করে না।
শিশুকে শিখতে সহযোগিতা করা
বাবাও শিশুর ভেতরে জেগে থাকা সুপ্ত প্রতিভা জাগ্রত করবেন। শিশুর পড়ালেখাই যতটুকু সম্ভব সাহায্য করতে হবে বাবাকে। এতে করে সন্তানের সাথে বাবার সম্পর্ক আরও দৃঢ় হবে। পড়াশোনায় শিশুকে উৎসাহ দিতে হবে বাবাকেই।
নিজের ইচ্ছা-অনিচ্ছা শিশুর প্রতি চাপিয়ে না দেয়া
বাবা হিসেবে নিজের জীবনের কিছু অতৃপ্তি কোনভাবেই শিশুর ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার অংশ হিসেবে শিশুকে প্রভাবিত করার চেষ্টা করবেন না। প্রতিটি শিশুরই নিজের ইচ্ছে অনিচ্ছের একটা মূল্য রয়েছে। প্রতিটি বাবারই সেই ব্যাপারে সজাগ থাকতে হবে এবং অনেক উদার হতে হবে। নিজে কি চাই সেটা না দেখে বাচ্চা কি হতে চাই, কি করতে চাই সেই দিক ভালোভাবে খেয়াল রাখতে হবে। কখনও তা চাপিয়ে দেয়া যাবে না।
শিশুর সব উদ্যোগে বাধা না দেয়া
শিশুদের সব সময় এটা করো না, ওটা করো না এমন আচরণ করবেন না। বাচ্চার কি করতে ইচ্ছে হয় সেটা ভালোভাবে বুঝুন। শিশু বলেই সবসময় ভুল করবে, কম বুঝবে এমনটা নয়। বরং শিশুকে গুরুত্ব দিয়ে শুনুন, বুঝুন। তার কথা, কাজ ভালো লাগলে অনুপ্রেরণা দিন।
জিএ
মন্তব্য করুন