ঈদুল ফিতর বিশ্বজুড়ে মুসলিমদের অন্যতম উৎসব। এই দিনটি পবিত্র রমজান মাসের শেষ এবং শাওয়াল মাসের সূচনা করে। কিন্তু করোনা আতঙ্কে এবার ঈদের আমেজ অনেকটা ফিকে হয়ে গেছে। ঘরবন্দী এই ঈদ যেন সবার জীবনে আনন্দ বয়ে আনে। তাই চলুন সুস্থ থাকতে ঈদের দিন কী খাবেন, কী খাবেন না সে সম্পর্কে জেনে নিই।
ঈদের দিন সকাল:
ঈদের দিন সকালের খাদ্য তালিকা তৈরি করার সময় মনে রাখতে হবে ৩০ দিন রোজা রাখার পর হঠাৎ বেশি খেলে বদহজম ও আরও নানা সমস্যা হতে পারে। ঈদের সকালটা কোনো ভারী খাবার দিয়ে শুরু না করে ২-৩টা খেজুর বা কোনো ফল দিয়ে শুরু করতে পারেন। নাস্তা হিসেবে রাখতে পারেন রুটি আর সবজি। সকালে সবজিটা রাখা ভালো কারণ সারাদিনের মেন্যুতে সবজি কম থাকে তাই সেই চাহিদা সকালের সবজি হতে কিছুটা হলেও পূরণ হবে। মিষ্টি জাতীয় খাবার হিসেবে রাখতে পারেন সেমাই বা ফিরনি।
ঈদের দিন দুপুরে:
দুপুরের খাবারে হাবিজাবি অনেক বেশি খাবার না রেখে ২-৩টা খাবারে অনেক সুন্দর খাদ্য তালিকা তৈরি করা যেতে পারে। মাছের বা মাংসের তৈরি একটি আইটেম রেখে পুষ্টির জোগান দেয়া যেতে পারে। কার্বোহাইড্রেটের চাহিদা মেটাতে দুপুরের খাদ্য তালিকায় খিচুড়ি বা সাদা পোলাও রাখতে পারেন। তবে বিরিয়ানি করলে সাইড ডিশ বেশি না করাই ভালো। সালাদ, টকদই বা মিষ্টি দই রাখা যেতে পারে। যা খাদ্য হজমে সাহায্য করবে পাশাপাশি ভিটামিন ও মিনারেলেস্ এর চাহিদাও মেটাবে।
ঈদের রাতের খাবার:
সারাদিনের অনেক বেশি খাওয়ার পর রাতে অনেকে খেতে পারে না। তাই রাতের খাদ্য তালিকায় ভারী খাবার না রাখাই ভালো। রুটি বা সাদা ভাতের সাথে মাছ অথবা মাংসের আইটেম রাখতে পারেন। (মনে রাখতে হবে দুপুরে মাছের আইটেম রাখলে রাতে মাংসের আইটেম রাখা ভালো। আর দুপুরে মাংস রাখলে রাতে মাছ। এতে দুটির চাহিদাই মিটবে)।
তবে মনে রাখতে হবে:
- অতিরিক্ত মিষ্টি জাতীয় খাবার এড়িয়ে চলাই বুদ্ধিমানের কাজ।
- কোল্ড ড্রিংকস এর পরিবর্তে ঘরে তৈরি মিষ্টি অথবা টক দই, বোরহানি ইত্যাদি রাখতে পারেন।
- কোষ্ঠকাঠিন্য ঈদের সময়ের একটি সাধারণ সমস্যা। তাই খাদ্য তালিকায় শাকসবজি অবশ্যই রাখতে হবে। আর ঈদের দিন সকালে ইউসুবগুলের ভুসি পানিতে মিশিয়ে খেয়ে নিতে পারেন।
- যাদের ডায়াবেটিস, কিডনি সমস্যা,উচ্চ রক্তচাপ, হৃদরোগ, ইউরিক এসিডের সমস্যা আছে তারা ডায়টেশিয়ানের পরামর্শ অনুযায়ী খাদ্য তালিকা তৈরি করুন।
- অতিরিক্ত তেল-মসলা জাতীয় খাবার এড়িয়ে চলা উচিত।
- যারা নিয়মিত ওষুধ সেবন করুন ঈদের আনন্দে যেন ওষুধ সেবন বাদ না পড়ে সেদিকে খেয়াল রাখুন।
- তবে যাই খান না কেন তা পরিমাণ মতো খাওয়া বাঞ্ছনীয়। অন্যথায় হিতে বিপরীত হওয়ার আশঙ্কা থাকে। তাই ঈদের খাবার নিয়ে সবাইকে সচেতন হতে হবে।
- করোনার এই আতঙ্কে অনেকে এইবার পরিবার থেকে দূরে ঈদ পালন করবেন। তাই যে যেখানে থাকুন সুস্থ থাকুন, ভালো থাকুন, ঘরে থাকুন। ঈদ মোবারক।
লেখা- হাবিবা নাজলীন লীনা; শিক্ষানবিশ, খাদ্য ও পুষ্টি বিজ্ঞান।
জিএ