ঘরের কোথায় কী গাছ রাখবেন? জেনে নিন
করোনার এই গৃহবন্দী সময়ে কোনো রকম জীবন চলছে অনেকের। মন এই ভালো তো এই খারাপ। অনেকেই আবার আছেন ফুরফুরে মেজাজে। ঘরের ভেতর তৈরি করেছেন অন্যরকম পৃথিবী। সবুজ গাছে গাছে ভরেছেন ঘরের প্রতি কোন। মন ভালো রাখতে আর পরিবেশ সুস্থ রাখতে গাছের যে জুড়ি নেই, তা সবার জানা। তাই আধুনিক জীবনে আপনিও কাজে লাগাতে পারেন এই গ্রিন থেরাপি। এতে মনও ভালো থাকবে, সুন্দর দেখাবে নিজের দিনযাপনের আস্তানাও।
চলুন জেনে নিই কী করবেন-
সদর ঘর
ঘরের সদর দরজার পাশে অনেকেরই জুতো রাখার র্যাক বা কাবার্ড থাকে। তার উপরে বেশ কয়েকটা গাছ রাখতে পারেন। দরজার দু’পাশেও জায়গা করে দিতে পারেন কয়েকটা পাতাবাহারকে। জায়গা বেশি থাকলে একপাশে একটা গুল্মজাতীয় গাছও রাখা যাবে। এতে করে ঘরে ঢুকেই বেশ ভালো অনুভূতি পাবেন।
পড়া ও কাজের টেবিল
টেবিলেও একটু সবুজ বেশ প্রশান্তি দেয়। পড়ার টেবিলে বা ওয়ার্কস্পেসে জায়গা করে দিন সবুজের। ওয়ার্কস্পেসে সাকিউলেন্টস রাখাই শ্রেয়। এতে পানি বেশি দিতে হয় না। ঝোপ তৈরি করে পড়ায় বা কাজে মনোযোগ নষ্ট করে না। মাঝেমাঝে সবুজের দিকে তাকালে চোখের শান্তি, মনের বিশ্রামও হয়। বনসাইয়ের শখ থাকলে, তা রাখতে পারেন কাজের জায়গায়। দেখতে সুন্দর জিনিস সব সময়েই মন ভালো করে, পজ়িটিভ এনার্জির জোগান দেয়। মানি প্ল্যান্টও রাখতে পারেন কাচের বোতলে। তবে মানি প্ল্যান্ট বাড়তে শুরু করলে তার ডালপালা সরিয়ে দিতে হবে জানালার দিকে। পড়ার জায়গায় তা শাখাপ্রশাখা বিস্তার করলে অগোছালো দেখাবে।
ডাইনিং স্পেস
খাবার টেবিলে ছোট গাছ রাখতে পারেন। লাকি ব্যাম্বু রাখাই যায়। একে ছোট, তায় যত্নেরও প্রয়োজন পড়ে না। একটু পানি দিলেই সে তুষ্ট। ডাইনিং টেবিলের পাশে রাখতে চাইলে উচ্চতায় বড় আকারে পাম বা লাকি ব্যাম্বুই রাখুন। ডাইনিং রুমে পর্যাপ্ত জায়গা থাকলে বেগোনিয়া, বার্ড অব প্যারাডাইস ইত্যাদি সুদৃশ্য গাছ রাখতে পারেন। তবে তাতে যেন একটু আলো পড়ে। সাকিউলেন্টসও রাখতে পারেন ডাইনিং রুমে।
বৈঠক খানা
সোফার দুই পাশে ইনডোর পাম রাখতে পারেন। তবে এর উচ্চতার দিকে খেয়াল রাখতে হবে। সোফার পাশে যেহেতু থাকবে তাই ৪ থেকে ৫ ফুট উচ্চতা হলে ভালো হয়। না হলে তা ঢাকা পড়ে যাবে সোফার পিছনে। বসার ঘরের জানালায় মালতীলতা রাখতে পারেন। গাছ বেড়ে উঠলে ডালপালা ছড়িয়ে দিন গ্রিলের মধ্য দিয়ে। ঘর আলো করে ফুটবে রঙিন ফুল। বৈঠকখানায় বৈচিত্র্য আনতে চাইলে পিস লিলিও রাখতে পারেন এক কোণে।
রান্না ঘর
রান্না ঘরে হার্ব জাতীয় গাছ রাখাই ভালো। রান্নার সময়ে দরকার মতো তা ব্যবহারও করতে পারবেন। অ্যালোভেরা গাছ রাখতে পারেন জানালায়। সকালে অ্যালোভেরার জুসেরও জোগান দেবে। ঘরোয়া উপকরণ দিয়ে রূপচর্চার সময়েও হাতের কাছে পাবেন। ছোট ট্রে বা পাত্রে লাগিয়ে ফেলুন মাইক্রোগ্রিনস। একটু বাড়লে তা নিয়ে আসতে পারেন ডাইনিং টেবিলে। সবুজের ছোঁয়া তো থাকবে, কাজেও লাগবে।
বেডরুম
শয়নকক্ষ যত হালকা থাকে, ততই ভালো। তবে শোয়ার ঘরে জানালায় একটা জুঁই বা বেল ফুল গাছ রাখতেই পারেন। হালকা সুবাসে ঘর তো ভরে উঠবে, মনকেও শান্ত করবে। অবসাদ, ক্লান্তি কাটবে। বেডরুমে গাছ রাখতে চাইলে পিস লিলি বা অ্যালোভেরা বাছতে পারেন। তবে খুব বেশি নয়। রুমের আয়তন অনুযায়ী কয়েকটা গাছ রাখবেন, তা স্থির করতে হবে। ১০ বাই ১০ ঘরে দুটো গাছই যথেষ্ট।
গোসলখানা
এমন গাছ রাখুন যা আর্দ্র পরিবেশে বাঁচবে। রাফল ফার্ন লাগাতে পারেন। অন্যদিকে এয়ার পিউরিফায়িং প্ল্যান্টস ও রাখতে পারেন। তার জন্য বেছে নিন ড্রাকেনা, স্নেক প্ল্যান্ট।
বারান্দা
বারান্দায় কোনও গাছেই কোনও বাধা নেই। টমেটো, বেগুন থেকে শুরু করে বুগেনভিলিয়া, স্ট্রিং অব পার্লসও ঝুলিয়ে দিতে পারেন।
সূত্র- আনন্দবাজার পত্রিকা
জিএ / এমকে
মন্তব্য করুন