শতবর্ষীসহ দেড় হাজার গাছ নিধনে তোড়জোড়

মো: মাজেদুল হক মানিক

রোববার, ০৭ জুলাই ২০২৪ , ১২:১৭ পিএম


শতবর্ষীসহ দেড় হাজার গাছ নিধনে তোড়জোড়
ছবি : আরটিভি

মেহেরপুরে সড়ক সংস্কার ও প্রশস্তকরণের জন্য কেটে ফেলা হবে দেড় হাজারেরও বেশি গাছ। এর মধ্যে শতবর্ষী অনেক গাছ রয়েছে। সড়কে চলাচলকারীদের জন্য ছায়াদায়ী ও পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষার জন্য গাছগুলো উত্তম বন্ধু হিসেবে স্থানীয়ভাবে আখ্যায়িত। ফলে গাছ কাটার তীব্র বিরোধীধা করছেন বিভিন্ন সংগঠন ও প্রকৃতিপ্রেমিরা। 

বিজ্ঞাপন

স্থানীয়রা বলছেন, গেল দুই বছর মেহেরপুর জেলার ওপর দিয়ে বয়ে যাচ্ছে তীব্র থেকে অতি তীব্র তাপ প্রবাহ। চলতি মৌসুমে ৪৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রার কবলে পড়েছিলেন মেহেরপুরসহ আশপাশের জেলার মানুষ। তাছাড়া ভরা বর্ষা মৌসুমে অনাবৃষ্টিতে ফসল উৎপাদনে বিরূপ প্রভাব দেখা দিয়েছে। অন্যদিকে শীত মৌসুমে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা বিরাজ করে এ অঞ্চলে। এমন অবস্থায় দেড় হাজার গাছ কাটার ঘটনায় পরিবেশের ভারসাম্য হারানোর আতঙ্ক বিরাজ করছে। 

জানা গেছে, সংরক্ষিত কোনো বনভূমি নেই মেহেরপুর জেলায়। সরকারি প্রতিষ্ঠান ও সড়কের পাশে বড় বড় কিছু গাছ দেখা মিললেও বসতবাড়ি কিংবা ব্যক্তি মালিকানাধীন কোনো বাগানে বড় গাছের সংখ্যা কমে যাচ্ছে। অথচ প্রতি বছরই সড়ক প্রশস্তকরণ ও সড়ক দুর্ঘনারোধে নিধন করা হচ্ছে গাছ। গেল বছরে মেহেরপুর-কুষ্টিয়া সড়কে কাটা হয়েছে আড়াই হাজার গাছ। আবারও মৃত্যুপরোয়ানা জারি করা হয়েছে মেহেরপুর-চুয়াডাঙ্গা ও মেহেরপুর মুজিবনগর সড়কে দেড় হাজার গাছের। গাছের মালিক মেহেরপুর জেলা পরিষদের পক্ষ থেকে ইতোমধ্যে গাছগুলো কাটার জন্য নাম্বার বসানো হয়েছে। 

বিজ্ঞাপন

এভাবে উন্নয়ন ও সড়ক দুর্ঘটনারোধের নামে সড়কের গাছ কাটার তীব্র বিরোধিতা করছেন পরিবেশবিদরা। তারা বলছেন, উন্নয়নের নামে এভাবে বৃক্ষ নিধন করায় নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে বায়ুমণ্ডলে, কমছে মানুষের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা ও বৃষ্টিপাত, হুমকির মুখে পড়ছে কৃষি। তাই যেকোনো প্রকল্প নেওয়ার আগে গাছ লাগানোর বিষয়টি গুরুত্ব দেওয়ার দাবি তাদের।

মেহেরপুর জেলায় পরিবেশ নিয়ে কাজ করা গাংনী সরকারি ডিগ্রি কলেজের ভূগোল বিভাগের সাবেক প্রধান এনামুল আযীম ও মেহেরপুর পৌর ডিগ্রি কলেজের শিক্ষক মাসুদ রেজা তীব্র প্রতিবাদ জানিয়ে বলেন, উন্নয়ন যেমনি প্রয়োজন তেমনি পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় সর্বজ্ঞে গুরুত্ব দিতে হবে। তাই শতবর্ষী এসব গাছগুলো টিকিয়ে রেখে কীভাবে সড়ক প্রশস্তকরণ করা যায় তার জন্য পরিকল্পনা হাতে নিতে হবে। 

বিজ্ঞাপন

মেহেরপুর জেলা পরিষদের সহকারী প্রকৌশলী মজিদুল ইসলাম বলেন, সড়ক বিভাগের একটি চিঠির পরিপ্রেক্ষিতে মেহেরপুর-চুয়াডাঙ্গা ও মেহেরপুর-মুজিবনগর সড়কের সার্ভেয়ার দিয়ে গাছের তালিকা তৈরির কাজ চলছে। পরে মূল্য নির্ধারণের জন্য সেটি পাঠানো হবে বনবিভাগে।

মেহেরপুর বন বিভাগের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হামিম হায়দার বলেন, সড়কে নতুনভাবে গাছ লাগানোর দায়িত্ব নিয়েছে সড়ক বিভাগ ও জেলা পরিষদ। সড়ক প্রশস্তকরণ করতে হলে গাছ কাটার বিষয়টি সামনে আসবেই। যে সড়কের পাশের গাছ কাটা হয় সেখানে নতুন করে বৃক্ষ রোপণ করে সড়ক বিভাগ। তবে গাছগুলো টিকিয়ে রাখার চেষ্টা অব্যাহত থাকবে। 

আরটিভি খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

বিজ্ঞাপন

Loading...


© All Rights Reserved 2016-2025 | RTV Online | It is illegal to use contents, pictures, and videos of this website without authority's permission