গ্রীষ্মকালে বাজারে আম, লিচু, তরমুজ, কাঁঠালসহ নানা রকম মিষ্টি ফলের সমারোহ দেখা যায়। এসব ফল যেমন সুস্বাদু তেমনই পুষ্টিকর। তবে ডায়াবেটিক রোগীদের এই মৌসুমি ফল খাওয়ার ক্ষেত্রে কিছু নিয়ম মেনে চলা জরুরি, যাতে রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে থাকে এবং শরীরও সঠিক পুষ্টি পায়।
নিচে উল্লেখ করা হলো গ্রীষ্মের জনপ্রিয় কয়েকটি ফল এবং সেগুলো ডায়াবেটিক রোগীরা কীভাবে খেতে পারেন তার বিস্তারিত দিকনির্দেশনা:
আম
আমে গ্লাইসেমিক ইনডেক্স (জিআই) ৫৬, যা মাঝারি পর্যায়ের। তবে এর গ্লাইসেমিক লোড কম, তাই সুগার নিয়ন্ত্রণে থাকলে সীমিত পরিমাণে আম খাওয়া যেতে পারে। কার্বোহাইড্রেট হিসেবে ডায়াবেটিক রোগীদের প্রতিদিন ১৩০ গ্রামের বেশি খাওয়া উচিত নয়। সুগার নিয়ন্ত্রণে থাকলে একটি ছোট আম বা বড় আমের অর্ধেক খাওয়া যেতে পারে।
আমে রয়েছে ভিটামিন এ, সি, বি কমপ্লেক্স (বি-১২ বাদে), অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি উপাদান, যা রোগ প্রতিরোধে সহায়ক। তবে, যাদের রক্তে শর্করার মাত্রা অনিয়ন্ত্রিত, তাদের আম না খাওয়াই উত্তম।
তরমুজ
তরমুজে ৯২ শতাংশ পানি থাকায় গরমে শরীর হাইড্রেট রাখতে এটি উপকারী। এতে রয়েছে ১১২ মিলিগ্রাম পটাশিয়াম।
- তরমুজের জিআই ৭৬ (উচ্চ) হলেও গ্লাইসেমিক লোড মাত্র ২।
- সুগার নিয়ন্ত্রণে থাকলে প্রতিদিন ১৫০-২০০ গ্রাম তরমুজ খাওয়া যেতে পারে।
- তরমুজ খেতে হবে মধ্য-সকাল বা ব্যায়ামের পর।
- কখনোই মূল খাবারের সঙ্গে তরমুজ খাওয়া উচিত নয়।
- সুগার নিয়ন্ত্রণে না থাকলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে খেতে হবে।
লিচু
লিচুতে রয়েছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, যা গরমে শরীরকে সজীব রাখতে সাহায্য করে।
- লিচুর জিআই ৫০ এবং গ্লাইসেমিক লোড ৭.৬, যা তুলনামূলকভাবে নিরাপদ।
- সুগার নিয়ন্ত্রণে থাকলে প্রতিদিন বড় আকারের ৬টি (প্রায় ৪০ গ্রাম) লিচু খাওয়া যেতে পারে।
- খালি পেটে বা ঘুমানোর আগে লিচু খাওয়া উচিত নয়, এতে রক্তে শর্করার ওঠানামা হতে পারে।
- রক্তে শর্করার অবস্থা বুঝে পুষ্টিবিদের পরামর্শ অনুযায়ী পরিমাণ নির্ধারণ করা উত্তম।
ডায়াবেটিক রোগীদের জন্য গ্রীষ্মকালীন ফল উপভোগ করার পথ একেবারে বন্ধ নয়। তবে প্রতিটি ফলের গ্লাইসেমিক ইনডেক্স ও লোড সম্পর্কে জানা, পরিমাণে সচেতন থাকা এবং সুগার লেভেল নিয়মিত পরীক্ষা করে ফল খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তোলাই শ্রেয়। পুষ্টিবিদের পরামর্শ নিলেও উপকার মিলবে।
আরটিভি/জেএম