ঢাকামঙ্গলবার, ২২ এপ্রিল ২০২৫, ৯ বৈশাখ ১৪৩২

নারীদের ফাঁদে ফেলে অনৈতিক কাজ, মেডিকেল শিক্ষার্থীসহ গ্রেপ্তার ৮

আরটিভি নিউজ

বুধবার, ২৬ জুন ২০২৪ , ০৪:৫৩ পিএম


loading/img

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক ও টেলিগ্রামে লোভনীয় বিজ্ঞাপন দিয়ে মডেল বানানোর আশ্বাস দিয়ে কিংবা অন্য কোনো লোভ দেখিয়ে তরুণীদের লক্ষ্যবস্তু করা হয়। কৌশলে হাতিয়ে নেওয়া হয় আপত্তিকর ছবি ও ভিডিও ফুটেজ। সেগুলো ছড়িয়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে ভুক্তভোগীদের নামানো হয় দেহ ব্যবসায়। আপত্তি জানালে আদায় করা হয় মোটা অংকের টাকা। 

বিজ্ঞাপন

তবে এসব করে তাদের শেষ রক্ষা হয়নি। সিআইডির জালে ধরা পড়েছে এ চক্রের মূল হোতাসহ আট সদস্য। গত ২৫ জুন দেশের বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে বুধবার (২৬ জুন) সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ—সিআইডি।

গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন—চক্রের হোতা মেহেদী হাসান (২৫), তার প্রধান সহযোগী শেখ জাহিদ বিন সুজন (২৬), জাহিদ হাসান কাঁকন (২৮), তানভীর আহমেদ দীপ্ত (২৬), সৈয়দ হাসিবুর রহমান (২৭), শাদাত আল মুইজ (২৯), সুস্মিতা আক্তার পপি (২৭) ও নায়না ইসলাম। তাদের যশোর, সাতক্ষীরা, চাঁদপুর ও ঢাকার বিভিন্ন স্থান থেকে গ্রেপ্তার করেন সিআইডির সাইবার পুলিশ সেন্টারের চৌকস সদস্যরা।

বিজ্ঞাপন

সিআইডি জানায়, একটি মামলা তদন্ত করতে গিয়ে ভয়ংকর এ চক্রের সন্ধান পাওয়া যায়। মেডিকেল শিক্ষার্থী মেহেদী ও তার খালাতো ভাই সুজন মিলে চক্রটি গড়ে তুলেছিলেন। চিকিৎসা বিদ্যার আড়ালে অল্প বয়সী তরুণীদের ফাঁদে ফেলে যৌন নির্যাতনের পাশাপাশি আপত্তিকর ভিডিও তৈরি করতেন তারা। এসব ভিডিও এবং ছবি টেলিগ্রাম, হোয়াটসঅ্যাপ ও ম্যাসেঞ্জারে বিভিন্ন জনের কাছে বিক্রি করে এবং ভুক্তভোগীদের নানাভাবে যৌনকর্মে নামিয়ে গত সাত বছরে তারা শতাধিক কোটি টাকা হাতিয়েছে।

সিআইডির প্রাথমিক অনুসন্ধানে জানা যায়, দেশ-বিদেশে চক্রটির রয়েছে শক্তিশালী নেটওয়ার্ক। বিভিন্ন নামে তাদের শতাধিক চ্যানেলে গ্রাহক সংখ্যা কয়েক লাখ। বিভিন্ন বয়সী নারীদের ভিডিও কল ও যৌনকর্মে বাধ্য করে এবং গোপনে ধারণকৃত সেসব ভিডিও বিক্রি করে চক্রটি বিপুল টাকা কামিয়েছে। অবৈধভাবে উপার্জিত অর্থে এ চক্রের সদস্যরা যশোর, সাতক্ষীরা, খুলনা এবং ঢাকায় অনেক জমিও কিনেছে। নির্মাণ করেছে আলিশান বাড়ি। তাদের আত্মীয়-স্বজনের ব্যাংক একাউন্টেও বিপুল অর্থ জমিয়ে রাখার তথ্য মিলেছে। অর্থ লেনদেনের জন্য তারা ব্যবহার করত এমএফএস বা মোবাইল ফাইনান্সিয়াল সার্ভিস। এ ছাড়া ক্রিপ্টো কারেন্সিতেও তাদের হাজার হাজার ডলার লেনদেনের তথ্য পাওয়া গেছে।

আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাত থেকে নিজেদের আড়াল করার সব কলা-কৌশলও এই চক্রের জানা। শত শত মোবাইল সিম ব্যবহার করলেও তাদের কোনোটিই প্রকৃত ন্যাশনাল আইডি দিয়ে নিবন্ধন করা নয়। এক্ষেত্রে তারা নিম্ন আয়ের নারীদের টার্গেট করতেন। অভিযুক্তদের মোবাইল ফোন এবং ল্যাপটপে গোপনে ধারণ করা প্রায় ১০ লাখ বিবস্ত্র ছবি ও ২০ হাজার ভিডিও পাওয়া গেছে।

বিজ্ঞাপন

গ্রেপ্তারকৃতদের কাছ থেকে ১২টি মোবাইল ফোন, ২০টি সিম কার্ড, একটি ল্যাপটপ, বিভিন্ন ব্যাংকের এটিএম কার্ড ও চেক বই জব্দ করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে ঢাকা মহানগর পুলিশের পল্টন থানায় পর্নোগ্রাফি আইন, পেনাল কোড ও সাইবার নিরাপত্তা আইনে মামলা দিয়ে আসামিদের আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

আরটিভি খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

বিজ্ঞাপন


© স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৬-২০২৫ | RTV Online |