ঢাকাবৃহস্পতিবার, ২৯ মে ২০২৫, ১৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

আজ দিন কাটুক ভালোবাসায়

আরটিভি নিউজ 

শুক্রবার, ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ , ০৩:৩৪ এএম


loading/img
প্রতীকী ছবি

‘বিশ্ব ভালোবাসা দিবস’ আজ মঙ্গলবার (১৪ ফেব্রুয়ারি)। প্রিয়ার মাঝে নিজেকে খুঁজে পাওয়ার সেই দিন। এই দিবসে প্রেমিক-প্রেমিকা, স্বামী-স্ত্রী, বন্ধুবান্ধব, এমনকি মা-সন্তান বা ছাত্র-শিক্ষকের মতো বিভিন্ন সম্পর্কের মানুষ এই দিনে একে অপরের প্রতি ভালোবাসা প্রকাশ করে।

বিজ্ঞাপন

এদিকে, বর্তমানে ভালোবাসা দিবস অত্যন্ত জনপ্রিয় এবং বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বড় আয়োজনের মাধ্যমে পালিত হয়। বাংলাদেশে ‘ভ্যালেন্টাইন ডে’ ঘিরে বাসন্তী আর হলুদ রঙে ছেয়ে যাবে দেশ। ফাগুনের প্রথম প্রহরে ঋতুরাজ বসন্তকে বরণ করতে নেওয়া হয়েছে নানা আয়োজন। তবে উপহার, ফুল, ও শুভেচ্ছা বিনিময়ের মাধ্যমে এই দিনটি উদযাপন করা হয়।  

বিশ্বব্যাপী ভালোবাসা দিবস প্রবর্তনের গোঁড়া থেকেই দিনটি নিয়ে তরুণ প্রজন্মকেই বেশি মাতামাতি করতে দেখা যায়। তবে ভালোবাসার বহুমাত্রিকার দৃষ্টিকোণ থেকে দিনটি সবারই। একই ধারাবাহিকতায় আজকেও হয়তো লজ্জা, সংকোচ আর ভীরুতা কাটিয়ে হৃদয়ের গহিনে অনেক দিনের সঞ্চিত প্রিয় বাক্য ‘আমি তোমাকে ভালোবাসি’ বলে ফেলতে পারেন কেউ। 

বিজ্ঞাপন

নব দখিনা সমীরণে পাগল হৃদয় ইতোমধ্যে দারুণ প্রেমকাতর। বসন্তের সৌরভ ছড়ানো আজকের ভালোবাসা দিবসে প্রেমদেব হৃদয়বন্দর থেকে তুলে আনা রক্তরাঙা গোলাপটি তুলে দেবে প্রিয়ার হাতে। অনুরাগতাড়িত হৃদয় হবে এফোঁড়-ওফোঁড়। মনে লাগবে দোলা, ভালোবাসার রঙে রাঙাবে হৃদয়। হিয়ার মাঝে বেজে উঠবে- আমি হৃদয়ের কথা বলিতে ব্যাকুল। অথবা প্রিয়বন্ধনটি আরও গাঢ়তর করার জন্য চণ্ডীদাসের সুরে বলে উঠবে- দুঁহু তার দুঁহু কাঁদে বিচ্ছেদ ভাবিয়া/ অর্ধতিল না দেখিলে যায় যে মরিয়া/ সখি কেমনে বাঁধিব হিয়াঃ। 

ভালোবাসা দিবসের উৎপত্তি নিয়ে বিভিন্ন মতবাদ রয়েছে। প্রাচীন রোমে ১৪ ফেব্রুয়ারি দেবদেবীর রানী জুনোর সম্মানে একটি ছুটির দিন ছিল। জুনোকে নারী ও প্রেমের দেবী হিসেবে পূজা করা হতো। আবার, কেউ কেউ মনে করেন যে রোমান সম্রাট ক্লডিয়াস ২০০ খ্রিস্টাব্দে তার সৈন্যদের বিবাহ নিষিদ্ধ করেন, কারণ তিনি মনে করতেন বিবাহিত পুরুষরা যুদ্ধে যোগ দিতে অনাগ্রহী হবেন। এই নিষেধাজ্ঞার বিরুদ্ধে দাঁড়ান এক যুবক, ভ্যালেন্টাইন, যিনি গোপনে বিবাহ সম্পন্ন করাতেন। তার এই কর্মকাণ্ডে ক্ষুব্ধ হয়ে সম্রাট তাকে মৃত্যুদণ্ড দেন এবং ১৪ ফেব্রুয়ারি তাকে শিরশ্ছেদ করা হয়। ভালোবাসার জন্য তার আত্মত্যাগকে স্মরণীয় করতে পরবর্তীতে এই দিনটি ভালোবাসা দিবস হিসেবে পালিত হতে শুরু করে।

আরেকটি মতবাদ অনুযায়ী, প্রাচীন রোমে ভ্যালেন্টাইন নামে একজন চিকিৎসক ছিলেন, যিনি অসুস্থদের প্রতি অত্যন্ত সদয় ছিলেন। তিনি খ্রিস্টধর্ম গ্রহণ করেন, যা তখন রোমে নিষিদ্ধ ছিল। এক কারারক্ষীর অন্ধ মেয়ের চিকিৎসা করছিলেন তিনি, কিন্তু খ্রিস্টান হওয়ার অপরাধে তাকে বন্দি করা হয়। মৃত্যুর আগে তিনি মেয়েটির জন্য একটি বিদায় বার্তা রেখে যান, যেখানে লেখা ছিল, "ইতি, তোমার ভ্যালেন্টাইন।" মেয়েটির চোখের দৃষ্টি ফিরে এসেছিল, এবং এই ঘটনার স্মরণে ভালোবাসা দিবস পালিত হতে শুরু করে।

বিজ্ঞাপন
Advertisement

৪৯৬ খ্রিস্টাব্দে পোপ জেলাসিয়াস ১৪ ফেব্রুয়ারিকে ভ্যালেন্টাইন্স ডে হিসেবে ঘোষণা করেন। তবে, এই দিবসের সঙ্গে ভালোবাসা প্রকাশের সম্পর্ক নিয়ে নানা মতভেদ রয়েছে। কেউ কেউ মনে করেন, মধ্যযুগে এই সময়টিতে পাখিরা সঙ্গী খুঁজতে শুরু করত, আর সেই থেকেই মানুষও এই দিনে ভালোবাসা প্রকাশের রীতি গড়ে তোলে। 

ভালোবাসা দিবস প্রথম দিকে বিশ্বব্যাপী জনপ্রিয়তা লাভ করেনি। ১৭৭৬ সালে ফ্রান্স সরকার এটিকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করে, ইংল্যান্ডের পিউরিটানরাও এই উৎসবকে প্রশাসনিকভাবে নিষিদ্ধ করেছিল। জার্মানি, অস্ট্রিয়া, ও হাঙ্গেরির মতো দেশেও বিভিন্ন সময়ে এই দিবস প্রত্যাখ্যাত হয়েছিল। তবে, সময়ের সাথে সাথে এটি আবার জনপ্রিয় হয়ে ওঠে।

আরটিভি/কেএইচ

আরটিভি খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

বিজ্ঞাপন
Advertisement
Advertisement

Loading...


© স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৬-২০২৫ | RTV Online |