ঢাকারোববার, ২০ এপ্রিল ২০২৫, ৭ বৈশাখ ১৪৩২

‘এইডস আক্রান্তদের ১৮ শতাংশ বিদেশ থেকে আসা’

আরটিভি নিউজ

শনিবার, ০৩ ডিসেম্বর ২০২২ , ০৭:০৫ পিএম


loading/img
ছবি: সংগৃহীত

এইচআইভি এইডস এ আক্রান্তদের ১৮ শতাংশ বিদেশ থেকে আসা। তারা দেশ থেকে পূর্ণাঙ্গ সুস্থতার রিপোর্ট নিয়ে বিদেশ যান। কিন্তু অনেকটা বাধাহীনভাবেই এসব রোগী দেশে প্রবেশ করছেন।

বিজ্ঞাপন

শনিবার (৩ ডিসেম্বর) দুপুরে বিশ্ব সাহিত্যকেন্দ্রে কমিউনিটি ফোরাম অব বাংলাদেশ আয়োজিত ‘এইচআইভি এইডসে আক্রান্ত ঝুঁকিপূর্ণ জনগোষ্ঠী’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে বক্তারা এসব তথ্য জানান।

বক্তারা বলেন, দেশের সাধারণ জনগোষ্ঠীর ৩০ শতাংশ এইচআইভি এইডের ঝুঁকিতে আছেন। এরা আগে এইডস আক্রান্ত রোগীদের সংস্পর্শে এসেছিলেন। ১২ লাখ ৪১ হাজার পরীক্ষা করা হয়েছে, এর মধ্যে ৯ লাখ ৫৫ হাজারই বিদেশগামী। দেশ থেকে যারা যাচ্ছেন তারা পরীক্ষা করেই যাচ্ছেন। কিন্তু যারা দেশে আসছেন তাদের কোনো পরীক্ষা করা হচ্ছে না। বিমানবন্দরে পরীক্ষার ব্যবস্থা না থাকায় এইডস আক্রান্তরা সহজেই দেশে প্রবেশ করছেন।

বিজ্ঞাপন

ইউনাইটেড ন্যাশনস অফিস অন ড্রাগস অ্যান্ড ক্রাইমের ন্যাশনাল প্রোগ্রাম কো-অর্ডিনেটর মো. আবু তাহের বলেন, এইডস আক্রান্তদের বিশাল অংশ মাদকসেবী। তৃতীয় লিঙ্গের মানুষগুলো এইডস এ আক্রান্ত হওয়ার অন্যতম কারণ। তাদের প্রতি আমাদের অবহেলা রয়েছে। তারা অসুস্থ হলে আমরা হাসপাতালে ঢুকতে দিই না। আর যদি এইডস আক্রান্ত হয়ে আসে তাহলে তো কথাই নেই। এ বিষয়েও আমাদের ভাবতে হবে।

ইউএনএইডসের কান্ট্রি ডিরেক্টর ড. সায়মা খান বলেন, নারী অভিবাসী কর্মীরা কাজ করতে গিয়ে যেসব সমস্যা পার করেন তা খুবই ভয়াবহ। বর্তমানে তাদের মধ্যে এইচআইভি আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে। যৌনকর্মী, সমকামী, মাদকাসক্তদের মধ্যেও এইডস আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে। সেক্স ওয়ার্কারদের মধ্যে ৭০ শতাংশই এইচআইভি এইডসে আক্রান্ত। সম্প্রতি আমরা দেখেছি, নতুন করে ৯৭৪ জনের এইচআইভি শনাক্ত হয়েছে। এর মধ্যে ১৮ শতাংশ হলো বিদেশ থেকে আসা। বিশ্বব্যাপী পাঁচ শতাংশ জনগোষ্ঠীর মধ্যে এইচআইভি সংক্রমণ রয়েছে। 

বৈঠকে প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের ওয়েজ আর্নার ওয়েলফেয়ার বোর্ডের ডেপুটি ডিরেক্টর জাহিদ আনোয়ার বলেন, দেশের বাইরে কাজ করতে গিয়ে এইডস আক্রান্ত হয়ে কত সংখ্যক মানুষ মারা গেছেন সেই তথ্যটা আমাদের কাছে আছে। কিন্তু আক্রান্তদের যথাযথ তালিকা আমাদের কাছে নেই। এর মূল কারণ, যিনি এইডস আক্রান্ত হন তিনি তথ্য গোপন রাখেন। এইডস এ আক্রান্ত কেউ দেশে আসার পর আমরা তাদের স্বাস্থ্যসেবা দেওয়ার জন্য হাসপাতালে ভর্তি করি। তাদের জন্য আমাদের একটা বিশেষায়িত অ্যাম্বুলেন্সও আছে।

বিজ্ঞাপন

সভাপতির বক্তব্যে কমিউনিটি ফোরাম অব বাংলাদেশের চেয়ারপারসন শাকিরুল ইসলাম বলেন, বিদেশে গিয়ে যিনি মারা যাচ্ছেন তিনি ভাতা পান। কিন্তু যারা অসুস্থ হয়ে ফিরে আসছেন তাদের জন্য কিছুই করা যাচ্ছে না। যাদের অসুস্থ অবস্থায় দেশে পাঠানো হয় তারা জানেনও না তাদের করণীয় কী। এ ক্ষেত্রে প্রবাসীকল্যাণ মন্ত্রণালয়কে আরও ভূমিকা রাখতে হবে। অন্যান্য দেশগুলোতে মাইগ্রেন্ট পপুলেশনের সব দায়িত্ব তাদের নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষ নেয়। কিন্তু আমাদের দেশের নিয়োগকারীরা কর্মী পাঠিয়েই দায়মুক্ত হয়ে যায়। তাদেরও জবাবদিহিতার মধ্যে নিয়ে আসতে হবে। আমরা বাংলাদেশকে এইচআইভি মুক্ত করতে চাই।

বৈঠকে আরও উপস্থিত ছিলেন সিনিয়র সাংবাদিক মনজুরুল আহসান বুলবুল, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও সরকারি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের ঊর্ধ্বতন বিভিন্ন কর্মকর্তা এবং বিভিন্ন ঝুঁকিপূর্ণ জনগোষ্ঠীর প্রতিনিধিরা।

আরটিভি খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

বিজ্ঞাপন


© স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৬-২০২৫ | RTV Online |