ঢাকাশুক্রবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৫, ৫ বৈশাখ ১৪৩২

ঔপন্যাসিক আবু জাফর শামসুদ্দীনের মৃত্যুবার্ষিকী আজ

শিল্প-সাহিত্য ডেস্ক

বৃহস্পতিবার, ২৪ আগস্ট ২০২৩ , ১০:২০ এএম


loading/img
ছবি : সংগৃহীত

আজ ২৪ আগস্ট; বিশিষ্ট সাংবাদিক, সাহিত্যিক ও  ঔপন্যাসিক আবু জাফর শামসুদ্দীনের ৩৫তম মৃত্যুবার্ষিকী। তিনি ছিলেন বায়ান্নর ভাষা আন্দোলনের সক্রিয় সদস্য এবং প্রগতিশীল লেখক। তার সাহিত্যকর্মের বিশেষ দিক ছিল উদার দৃষ্টিভঙ্গি, গভীর মানবিকতাবোধ ও সমাজপ্রগতির ভাবনা।

বিজ্ঞাপন

১৯১১ সালের ১২ মার্চ গাজীপুর জেলার দক্ষিণবাগ গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন আবু জাফর শামসুদ্দীন। তার বাবা মোহাম্মদ আক্কাছ আলী ভূঁইয়া ও দাদা নাদিরুজ্জামান ভূঁইয়া ছিলেন মওলানা কেরামত আলী জৌনপুরীর শিষ্য ও স্থানীয় প্রতিনিধি। তার প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা শুরু হয় গ্রামের প্রভাত পণ্ডিতের পাঠশালায়। ১৯২৪ সালে স্থানীয় একডালা মাদরাসা থেকে জুনিয়র মাদরাসা পরীক্ষায় ও ১৯২৯ সালে ঢাকা সরকারি মাদরাসা থেকে হাই মাদরাসা পরীক্ষায় পাস করেন। কিছুদিন ঢাকা ইন্টারমিডিয়েট কলেজে পড়াশোনা করেন। এরপর তিনি কলকাতায় চলে যান এবং সাংবাদিকতায় যোগ দেন।


কর্মজীবনের শুরুতে তিনি দৈনিক সুলতানের সহসম্পাদক হিসেবে কাজ করেন। ১৯৩১ সালে তিনি সরকারের সেচ বিভাগে যোগ দেন। ১৯৪২ সালে সেচ বিভাগের কাজ পরিত্যাগ করে কটকে নির্মাণাধীন বিমানঘাটি তদারকি অফিসের হেড ক্লার্ক পদে যোগ দেন। কয়েক মাস পর তিনি এ চাকরি ছেড়ে আবার সাংবাদিকতা শুরু করেন। এ সময় তিনি দৈনিক আজাদে যোগ দেন। ১৯৪৮ সালের অক্টোবরে পত্রিকাটি কলকাতা থেকে ঢাকায় চলে আসার পর তিনি সহকারী সম্পাদক হিসেবে নিযুক্ত হন। ১৯৫০ সালে আজাদ থেকে তাকে অব্যাহতি দেওয়া হলে তিনি প্রকাশনা ব্যবসা সংস্থা কিতাবিস্তান প্রতিষ্ঠা করেন। ১৯৫০-৫১ সালে তিনি সাপ্তাহিক ইত্তেফাকের সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন।

বিজ্ঞাপন

১৯৫২ সালে ভাষা আন্দোলনে তিনি সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেন। ১৯৫৭ সালের ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠিত কাগমারীর সাংস্কৃতিক সম্মেলনের সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন। ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টির জন্মলগ্ন থেকেই তিনি এ দলের সঙ্গে জড়িত হন এবং কিছুদিন ঢাকা জেলা কমিটির সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৬১ সালে বাংলা একাডেমির অনুবাদ বিভাগের অধ্যক্ষ নিযুক্ত হন। ১৯৭২ সালে তিনি এ চাকরি থেকে অবসর নেন। এরপর তিনি দৈনিক পূর্বদেশের সম্পাদকীয় বিভাগে যোগ দেন। ১৯৭৫ সালে পূর্বদেশ বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর তিনি দৈনিক সংবাদে যোগ দেন। সংবাদে তিনি অল্পদর্শী ছদ্মনামে বৈহাসিকের পার্শ্বচিন্তা নামে কলাম লেখেন। এ সময় তিনি বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের উচ্চপদে দায়িত্ব পালন করেন।


উপন্যাস, ছোট গল্প ও মননশীল প্রবন্ধ লিখে তিনি খ্যাতি অর্জন করেন। তিনি একুশে পদক লাভ করেছেন। তার রচিত ‘পদ্মা মেঘনা যমুনা’ বাংলার সাহিত্যের একটি অনন্য গ্রন্থ। এ ছাড়াও তার রচিত বেশ কিছু গ্রন্থ ইংরেজি, হিন্দি, উর্দু, মারাঠি ও জাপানি ভাষায় অনুবাদ ও প্রকাশ করা হয়েছে।

তার উল্লেখযোগ্য উপন্যাসের মধ্যে রয়েছে- পরিত্যক্ত স্বামী (১৯৪৭), মুক্তি (১৯৪৮), ভাওয়াল গড়ের উপাখ্যান (১৯৬৩), পদ্মা মেঘনা যমুনা (১৯৭৪), সংকর সংকীর্তন (১৯৮০), প্রপঞ্চ (১৯৮০) ও দেয়াল (১৯৮৫)।

বিজ্ঞাপন


কর্মজীবনে তিনি বহু পুরস্কার ও সম্মাননায় ভূষিত হয়েছেন। উপন্যাসে তিনি  ১৯৬৮ সালে বাংলা একাডেমি পুরস্কার ও সাংবাদিকতায় অবদানের জন্য ১৯৮৩ সালে একুশে পদক পান। এ ছাড়াও উল্লেখযোগ্য পুরস্কারের মধ্যে রয়েছে- সমকাল সাহিত্য পুরস্কার (১৯৭৯), শহীদ নূতনচন্দ্র সিংহ স্মৃতিপদক (১৯৮৬), মুক্তধারা সাহিত্য পুরস্কার (১৯৮৬) ও ফিলিপস পুরস্কার (১৯৮৮) (মরণোত্তর)।

আরটিভি খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

বিজ্ঞাপন


© স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৬-২০২৫ | RTV Online |