কর্ণফুলী নদীর তলদেশ দিয়ে তৈরি হয়েছে দুই টিউব বিশিষ্ট চার লেনের কর্ণফুলী টানেল। এই টানেল সংযুক্ত করবে চট্টগ্রাম নগরীর পতেঙ্গা ও দক্ষিণের আনোয়ারা প্রান্তকে। চার লেন বিশিষ্ট দুটি টিউব সম্বলিত ৩ দশমিক ৪ কিলোমিটারের টানেলটি চালু হলে আমূল বদলে যাবে বন্দরনগরী চট্টগ্রাম তথা দেশের সামগ্রিক অর্থনীতির চিত্র। কর্ণফুলী টানেলকে ঘিরে চীনের সাংহাই সিটির মতো চট্টগ্রামে গড়ে তোলা হচ্ছে ‘ওয়ান সিটি টু টাউন’। এতে উন্মোচিত হতে যাচ্ছে নতুন অর্থনৈতিক সম্ভাবনার দ্বার।
কর্ণফুলী টানেল নির্মিত হলে শিল্পোন্নয়ন, পর্যটন শিল্পের বিকাশ এবং সহজ যোগাযোগ ব্যবস্থা হবে। এতে ব্যাপক কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে, রপ্তানি বৃদ্ধি পাবে, দারিদ্র্য দূরীকরণসহ দেশের ব্যাপক আর্থসামাজিক উন্নয়ন সাধিত হবে, জিডিপিতে ব্যাপক ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে, কর্ণফুলী টানেল নির্মাণের ফলে ঢাকা-চট্টগ্রাম ও কক্সবাজারের মধ্যে আধুনিক যোগাযোগ ব্যবস্থা গড়ে উঠবে এবং এশিয়ান হাইওয়ের সাথে সংযোগ স্থাপিত হবে। কর্ণফুলী নদীর পূর্ব প্রান্তের প্রস্তাবিত শিল্প এলাকার উন্নয়ন ত্বরান্বিত হবে এবং পশ্চিম প্রান্তে অবস্থিত চট্টগ্রাম শহর, চট্টগ্রাম বন্দর ও বিমানবন্দরের সাথে উন্নত ও সহজ যোগাযোগ ব্যবস্থা স্থাপিত হবে। ভ্রমণ সময় ও খরচ হ্রাস পাবে এবং পূর্ব প্রান্তের শিল্পকারখানার কাঁচামাল ও প্রস্তুতকৃত মালামাল চট্টগ্রাম বন্দর, বিমানবন্দর ও দেশের উত্তর পশ্চিমাঞ্চলে পরিবহন প্রক্রিয়া সহজ হবে।
টানেল সড়কের সঙ্গে যুক্ত হবে মিরসরাই ইকোনমিক জোন, আনোয়ারার চীনা ইকোনমিক জোন, বে-টার্মিনাল, মহেশখালীর এলএনজি টার্মিনাল। কর্ণফুলী টানেল হয়ে মেরিন ড্রাইভ যাবে কক্সবাজারের টেকনাফ পর্যন্ত। পরবর্তীতে তা মিয়ানমার হয়ে প্রসারিত হবে চীনের কুনমিং সিটি পর্যন্ত। রাজধানী ঢাকার সাথে ৫০ কিলোমিটার এবং চট্টগ্রাম থেকে পর্যটন রাজধানী কক্সবাজারের দূরত্ব ১৫ কিলোমিটার কমে আসবে। মাতারবাড়ি গভীর সমুদ্রবন্দরের টার্মিনাল ও চট্টগ্রাম বন্দর- এই দুই বন্দর দিয়ে পণ্য আমদানি-রপ্তানিতে সহজ যোগাযোগের মাধ্যম হিসেবে কাজ করবে এই টানেল।
আনোয়ারা উপজেলায় এক্সক্লুসিভ চাইনিজ ইকোনমিক ও কোরিয়ান এক্সপোর্ট প্রসেসিং জোনের সক্ষমতা আরও বৃদ্ধি পাবে। সর্বোপরি, নতুন উচ্চতায় পৌঁছে যাবে দেশের অর্থনীতি। বৈপ্লবিক পরিবর্তন আসবে শিল্পকারখানা ও পর্যটন শিল্পের।