ইন্টারনেটে ধীরগতি শুরু
দেশের প্রথম সাবমেরিন ক্যাবল (এসইএ-এমই-ডব্লিউই-৪) মেরামত কাজের জন্য ইন্টারনেটে ধীরগতি শুরু হয়েছে। গ্রাহকরা এরই মধ্যে বিভিন্ন ইন্টারনেট সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানগুলোতে অভিযোগ জানাতে শুরু করেছেন।
ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থী মো. খোরশেদ আলম বলেন, আমাকে প্রতিরাতেই প্রবাসে থাকা বাবার সঙ্গে ইন্টারনেটে কথা বলতে হয়। কিন্তু গতকাল রাত থেকে ঠিকমতো কথা বলা যাচ্ছে না। যখন কথা বলতে যাচ্ছি তখনই বারবার কেটে যাচ্ছে। প্রয়োজনীয় কাজে ইন্টারনেটেও ঢুকতে পারছি না।
একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কাজ করেন ফাতেমা খান লুবনা। তিনি বলেন, গতকাল রাতে সমস্যা বেশি ছিল। বারবার চেষ্টা করেও কোনো ফাইল ডাউনলোড করতে পারছিলাম না। তবে আজ একটু স্বাভাবিক মনে হচ্ছে।
ইন্টারনেট সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানগুলোর সংগঠন আইএসপিএবি এর সাধারণ সম্পাদক ইমদাদুল হক আরটিভি অনলাইনকে জানান, সোমবার রাত ১২টা ১৯ মিনিটে সাবমেরিন ক্যাবল পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যাওয়ায় এ সমস্যা হচ্ছে।
তিনি বলেন, ইন্টারনেট গতিতে কিছুটা প্রভাব পড়তে শুরু করেছে। তবে কিছু ইন্টারন্যাশনাল ইন্টারনেট গেটওয়ে ভালো কাজ করায় বেশি প্রভাব পড়তে পারেনি।
“আমরা আগে থেকে গ্রাহকদের জানিয়েছিলাম ২৪ অক্টোবর থেকে ২৬ অক্টোবর মোট তিনদিন প্রথম সাবমেরিন ক্যাবল ‘সি-মি-উই-৪’ মেরামত করায় ইন্টারনেটে ধীরগতি দেখা যাবে।
ইন্টারনেট সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান অপটিমাক্স কমিউনিকেশন লিমিটেডের প্রধান নির্বাহী ইকবাল বাহার আরটিভি অনলাইনকে জানান, যেহেতু দীর্ঘদিন ধরে বিষয়টি নিয়ে কথা হচ্ছিল, তাই আমরা আমাদের গ্রাহকদের আগে থেকে মেইল করে জানিয়েছিলাম। তবে এরই মধ্যে আমাদের কাছে গ্রাহকদের অভিযোগ আসতে শুরু করেছে। বিভিন্ন জায়গায় ইন্টারনেটে গতি খুব কম পাওয়া যাচ্ছে বলে তারা জানিয়েছে।
বাংলাদেশ সাবমেরিন ক্যাবল কোম্পানি লিমিটেড (বিএসসিসিএল) সূত্রে জানা যায়, সম্প্রতি চালু হওয়া দ্বিতীয় সাবমেরিন ক্যাবল (এসইএ-এমই-ডব্লিউই-৫) ও ভারত থেকে আমদানি করা ব্যান্ডউইথ দিয়ে ইন্টারনেট ঘাটতি মেটানোর চেষ্টা করা হবে। বর্তমানে দেশে ইন্টারনেট ব্যান্ডউইথের দৈনিক চাহিদা ৪৫০ জিবিপিএস (গিগা বাইট প্রতি সেকেন্ড)। এর মধ্যে প্রথম সাবমেরিন ক্যাবল থেকে ২৫০ জিবিপিএস ব্যান্ডউইথ পাওয়া যায়। বাকি ২০০ জিবিপিএস ব্যান্ডউইথ ভারত থেকে আইটিসি (ইন্টারন্যাশনাল টেরেস্ট্রিয়াল ক্যাবল) কোম্পানির মাধ্যমে আমদানি করা হয়।
বিএসসিসিএল এ পর্যন্ত দুবার সাবমেরিন ক্যাবলের মেরামত কাজের তারিখ পিছিয়েছে। প্রথমে ২২ সেপ্টেম্বর থেকে মেরামত শুরু করার কথা থাকলেও পরে আরেক দফা সময় বদল করা হয়। এই ক্যাবলের ল্যান্ডিং স্টেশন কক্সবাজারে অবস্থিত। সেখান থেকে ১১৫ কিলোমিটার দূরে একটি রিপিটার প্রতিস্থাপনের জন্য এ মেরামত কাজ চলবে বলে জানা গেছে।
বাংলাদেশ ২০০৫ সালে প্রথম সাবমেরিন ক্যাবলের (সাউথ ইস্ট এশিয়া-মিডিল ইস্ট-ওয়েস্টার্ন ইউরোপ-৪) সঙ্গে সংযুক্ত হয়। ২০০৫ সালে চালুর পর প্রথমবারের মতো এ সাবমেরিন ক্যাবল সম্পূর্ণ বন্ধ করে দিয়ে এর মেরামত করা হবে। চলতি বছরের সেপ্টেম্বর থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে চালু হয়েছে দ্বিতীয় সাবমেরিন ক্যাবল।
এমসি/এসআর
মন্তব্য করুন