বাংলাদেশে বাইডেনের পররাষ্ট্রনীতি ব্যর্থ হয়েছে : ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল
বাংলাদেশে আগামী রবিবার (৭ জানুয়ারি) দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। এই নির্বাচন সামনে রেখে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক প্রভাবশালী সংবাদমাধ্যম ওয়াল স্ট্রিট জার্নালে ‘বাইডেনের গণতন্ত্র বিকাশের সীমাবদ্ধতা তুলে ধরলো বাংলাদেশ’ শীর্ষক একটি নিবন্ধ প্রকাশিত হয়েছে।
গত বুধবার (৩ জানুয়ারি) প্রকাশিত এ নিবন্ধে বলা হয়েছে, ১৭ কোটি মানুষের মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ বাংলাদেশে আসন্ন নির্বাচনে টানা চারবারের মতো বিজয়ী হতে যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তার এই বিজয়হবে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের জন্য একটি ধাক্কা। এর ফলে বাইডেন প্রশাসনের চাপ প্রয়োগমূলক পররাষ্ট্রনীতি ব্যর্থ হয়েছে।
এতে বলা হয়, ৭৬ বছর বয়সী শেখ হাসিনা বর্তমানে বিশ্বব্যাপী যেকোনো নির্বাচিত নারী নেত্রীর চেয়ে বেশি সময় ধরে ক্ষমতায় রয়েছেন। তিনি কট্টরপন্থীদের দমন করেছেন, সেনাবাহিনীর ওপর বেসামরিক প্রশাসনের নিয়ন্ত্রণ নিশ্চিত করেছেন এবং দেশকে চরম দারিদ্র্য থেকে বের করে এনেছেন।
নিবন্ধে উল্লেখ করা হয়, বাইডেন প্রশাসন শেখ হাসিনার সরকারকে মানবাধিকার লঙ্ঘন এবং গণগ্রেপ্তার করে বিরোধী দলগুলোকে ভয় দেখানোর অভিযোগ তুলে শাস্তি দেওয়ার চেষ্টা করেছে। কিন্তু সেই অভিযোগ এরই মধ্যে ভুল প্রমাণ করেছে শেখ হাসিনার অদম্য নেতৃত্ব।
ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল শেখ হাসিনার রাজনৈতিক কৌশলকে ‘গেম অব থ্রোনস’-এর সঙ্গে তুলনা করে বলছে, বাংলাদেশে মার্কিন ব্যর্থতা দৃশ্যমান হয়ে উঠেছে। যুক্তরাষ্ট্রের বোঝা উচিত ছিলো, কঠোর ভাষা আর আধা-আধি মাপকাঠি বাংলাদেশের ওপর প্রভাব ফেলবে না। ১৯৭১ সালে যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থন থাকার পরও আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে পাকিস্তানকে যেমন পরাজিত করেছে বাংলাদেশ, তেমনি এখন রাশিয়া, চীন ও ভারতের সাথে সম্পর্ক উন্নয়ন করে যুক্তরাষ্ট্রের সব চাপকে সমুচিত জবাব দিয়েছেন শেখ হাসিনা।
নিবন্ধটিতে আরও বলা হয়, যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়নে বাংলাদেশের ৩২ বিলিয়ন ডলারের পোশাক রপ্তানির বাজারের বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার একটা সুযোগ আমেরিকার হাতে ছিল। তা সত্ত্বেও বাইডেন প্রশাসনের উদ্যোগ খুব পরীক্ষামূলক পর্যায়ের ছিল বা শেখ হাসিনার সরকারকে সংস্কারের জন্য চাপ দেওয়ায় নিজেদের ক্ষমতার ওপর অতিরিক্ত আত্মবিশ্বাসী ছিল। বাইডেন প্রশাসনের বাংলাদেশ নিয়ে নানা পদক্ষেপের মধ্যে একটি ছিল সামিট ফর ডেমোক্রেসি থেকে বাংলাদেশের নাম বাদ দেওয়া। উল্টো তর্কাতীতভাবে খারাপ রেকর্ডসহ বেশ কয়েকটি দেশকে ওই সামিটে রাখা এবং বাংলাদেশ পুলিশের বিশেষ ইউনিট র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র্যাব) ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা। এসবের খুব একটা কার্যকর ফল যুক্তরাষ্ট্র পায়নি।
যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রনীতিতে বাংলাদেশ একটি গুরুত্বপূর্ণ নিয়ামক হয়ে উঠেছে। তবে অর্থনীতির ওপরে বাইডেনের গণতন্ত্র প্রচারকে স্থান দেয়ার সময় এখনো আসেনি বলেই জো বাইডেনের পররাষ্ট্রনীতি এখানে ব্যর্থ হয়েছে।
মন্তব্য করুন