ডেইলি স্টারে প্রকাশিত সব লেখার নাম প্রত্যাহারে সম্পাদককে কলামিস্টের চিঠি
রাজধানীর মোহাম্মদপুরে শিশু গৃহকর্মী প্রীতি ওরাংয়ের (১৫) সাম্প্রতিক মর্মান্তিক মৃত্যুর বিষয়ে সাংবাদিকতায় তার নৈতিক ও পেশাগত সততা বজায় রাখতে ডেইলি স্টার ব্যর্থ হয়েছে মনে করায় এর লেখক ও মানবাধিকার কর্মী রেজাউর রহমান লেনিন ডেইলি স্টারে প্রকাশিত তার অতীতের সব লেখা থেকে নাম সরিয়ে দেওয়ার অনুরোধ করে সম্পাদক বরাবর চিঠি দিয়েছেন।
শনিবার (১১ ফেব্রুয়ারি) রাতে তিনি এই চিঠি পাঠান।
ফেসবুকে চিঠির কপি দিয়ে তিনি লিখেছেন,একটু আগে ডেইলি স্টারের সম্পাদক বরাবর এই চিঠিটি পাঠিয়ে দিয়েছি, আশা করি তারা তাদের মতামত বিভাগে আমার এবং আমাদের লিখাগুলো থেকে আমার নাম সরিয়ে নিবেন এবং কিছুটা পাপ মুক্ত করবেন।
চিঠিতে বলা হয়, ডেইলি স্টার, বাংলাদেশের অন্যতম শীর্ষস্থানীয় সংবাদপত্র। দুর্ভাগ্যবশত ১৩ বছর বয়সী প্রীতি ওরাং-এর সাম্প্রতিক মর্মান্তিক মৃত্যুর বিষয়ে সাংবাদিকতায় তার নৈতিক ও পেশাগত সততা বজায় রাখতে ব্যর্থ হয়েছে। চা বাগানের শ্রমিকের মেয়ে প্রীতি, ডেইলি স্টারের নির্বাহী সম্পাদক আশফাকুল হকের বাড়িতে শিশু গৃহকর্মী হিসেবে নিয়েজিত ও শোষিত হয়েছিল। আমি দ্য ডেইলি স্টারের আপাত দ্বৈত মান দেখে গভীরভাবে হতাশ হয়েছি। আমি দ্য ডেইলি স্টারের বাংলা এবং ইংরেজি উভয় সংস্করণে প্রকাশিত আমার সহ-লেখক নিবন্ধগুলি থেকে আমার নাম রেজাউর রহমান লেনিন প্রত্যাহার করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। সত্য ও ন্যায়ের পক্ষে তার নৈতিক ও পেশাগত অবস্থান পুনঃমূল্যায়ন ও স্পষ্ট না করা পর্যন্ত আমি আর কোনো নিবন্ধ প্রদান করা থেকে বিরত থাকব।
রাজধানীর মোহাম্মদপুরে ভবন থেকে পড়ে কিশোরী গৃহকর্মীর মৃত্যুর ঘটনায় ডেইলি স্টারের নির্বাহী সম্পাদক সৈয়দ আশফাকুল হক এবং তার স্ত্রী তানিয়া খন্দকারকে কারাগারে পাঠায় আদালত।
গত মঙ্গলবার সকাল ৮টার দিকে শাহজাহান রোডের জেনিভা ক্যাম্প সংলগ্ন ওই ভবনের নবম তলা থেকে পড়ে মারা যায় প্রীতি ওরাং নামের ওই কিশোরী। খবর পেয়ে মোহাম্মদপুর থানা পুলিশ মেয়েটির লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠায়।
সে সময় স্থানীয়রা ওই বাড়ির ফটকে জড়ো হয়ে ‘মেয়েটিকে হত্যা করা হয়েছে’ অভিযোগ করে বিক্ষোভ শুরু করে। পরে পুলিশ আশফাক, তানিয়াসহ তাদের পরিবারের ছয়জনকে থানায় নিয়ে যায়।
গত বছরের ৬ অগাস্টও একই ধরনের ঘটনা ঘটে আশফাকুল হকের বাসার। সেবার নয় বছরের এক শিশু গৃহকর্মী লাফিয়ে পড়ে গুরুতর আহত হয়। ওই ঘটনায় নির্যাতনের অভিযোগ এনে আশফাকুল হক, তার স্ত্রী তানিয়া হক ও শিল্পী নামের আরেক নারীকে আসামি করে মোহাম্মদপুর থানায় মামলা করেন শিশুটির মা।
মন্তব্য করুন