ঢাকামঙ্গলবার, ০৮ জুলাই ২০২৫, ২৪ আষাঢ় ১৪৩২

ইফতারে কি খেজুর খেতেই হবে? যা বলছে ইসলাম 

আরটিভি নিউজ

বৃহস্পতিবার, ২৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ , ১১:২৫ এএম


loading/img
ছবি : সংগৃহীত

আর কিছুদিন পরেই শুরু হতে যাচ্ছে মুসলিম সম্প্রদায়ের পবিত্র রমজান মাস। সারা দিন রোজা রেখে সাধারণত খেজুর দিয়েই ইফতার শুরু করার অভ্যাস প্রায় সবারই আছে। বিশেষ করে বিষয়টি সুন্নত হিসেবেই পালন করে থাকেন রোজাদাররা। পবিত্র হাদিসেও খেজুর দিয়ে ইফতার করার কথা বলা আছে।

বিজ্ঞাপন

খেজুর এনার্জি বাড়ায়-
 
রোজা রাখলে শরীর ক্লান্ত ও দুর্বল হয়ে পড়ে। খেজুর শারীরিক ক্লান্তি দূর করে এনার্জি জোগাতে সাহায্য করে। বিশেষজ্ঞদের মতানুসারে, খেজুরে প্রচুর পরিমাণে শর্করা যেমন গ্লুকোজ, ফ্রুক্টোজ এবং সুক্রোজ রয়েছে। এতে সুগারের পরিমাণ এতটাই বেশি, যে এক কামড়েই অনেকটা এনার্জি পাওয়া যায়। ফলে দীর্ঘক্ষণ উপবাসের পর শরীরে তাৎক্ষণিক শক্তি বৃদ্ধি করে খেজুরের এই সব গুণ। এ ছাড়া খেজুরে থাকা ডায়েটারি ফাইবারও আমাদের শরীরে দীর্ঘ সময় এনার্জি বজায় রাখে।

খেজুর ইফতারের বিশেষ অনুষঙ্গ-

বিজ্ঞাপন

খেজুরের পুষ্টিগুণের কারণে এ ফলটি অনেক জনপ্রিয়। এটি স্বাস্থ্যসম্মত ভিটামিন সমৃদ্ধ একটি খাবার। হাদিস শরিফেও খেজুর দিয়ে ইফতার করার নির্দেশ রয়েছে। হজরত সালমান ইবনে আমির রাদিয়াল্লাহু আনহু সূত্রে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, ‘যখন তোমাদের কেউ ইফতার করে, সে যেন খেজুর দ্বারা ইফতার করে। কেননা, তাতে বরকত ও কল্যাণ রয়েছে।’ (মেশকাত ১৮৯৩)

আরেকটি হাদিসে রয়েছে, আনাস বিন মালেক (রা.) রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেছেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম নামাজের আগে কয়েকটি কাঁচা খেজুর খেয়ে ইফতার করতেন। যদি কাঁচা খেজুর না থাকত, তাহলে শুকনো খেজুর দিয়ে। যদি শুকনো খেজুরও না থাকত, তাহলে কয়েক ঢোক পানি দিয়ে।’ (তিরমিজি ৬৩২)

কিন্তু জানেন কি, রোজা ভাঙতে কেন খাওয়া হয় খেজুর? খেজুরে রয়েছে কোন কোন পুষ্টিগুণ? চলুন জেনে নেয়া যাক খেজুরের স্বাস্থ্য উপকারিতা সম্পর্কে।

বিজ্ঞাপন

রাজধানীর জামিয়া ইউসুফ বানুরীর মুহতামিম ও মাহমুদ নগর জামে মসজিদের খতিব মুফতি আতাউল করিম মাকসুদ বলেছেন, রাসূল সা. কিছু কিছু কাজ করেছেন নবী হিসেবে- তা উম্মতের জন্য পালন করা আবশ্যক। আবার তিনি কিছু কাজ করেছেন মানুষ বা ব্যক্তি হিসেবে— আল্লাহর রাসূল ব্যক্তি হিসেবে যেসব কাজ করেছেন, তা পালন করা উম্মতের ওপর আবশ্যক নয়, তবে মেনে চলা ও অনুসরণের অনেক বরকত ও ফজিলত রয়েছে।

বিজ্ঞাপন

উদাহরণ হিসেবে তিনি বলেন, আল্লাহর রাসূল সাদা কাপড় পরতে পছন্দ করতেন। সাদা কাপড় তার ব্যক্তিগত পছন্দ ছিল, তাই তিনি পোশাকের ক্ষেত্রে সাদা কাপড় প্রাধান্য দিতেন, শরীয়তের বিধান হিসেবে কখনো তিনি সাদা কাপড় পরেননি। আমরা সাদা কাপড় পরলে বরকত আছে তবে না পরলে কোনো গুনাহ হবে না। ঠিক তেমনি আল্লাহর রাসূল পুষ্টিগুণ এবং তৎকালীন মদিনার প্রধান খাবার হিসেবে খেজুর খেতেন। শরীয়তের বিধান হিসেবে খেজুর খেতেন না।

খেজুর খাওয়া বরকতের কারণ-

আল্লাহর রাসূলের সুন্নতের অনুসরণে ইফতারে খেজুর খাওয়া বরকতের কারণ। তবে কেউ বিশেষ কোনো অসুস্থতা বা দাম বৃদ্ধি এবং এ জাতীয় কারণে খেজুর খেতে না পারলে তাকে এ কথা বলার অবকাশ নেই যে, সে সুন্নত ছেড়ে দিয়েছে, সুন্নতের ওপর আমল করেনি- বলেন মাওলানা আতাউল করিম মাকসুদ।

তিনি বলেন, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির বাজারে ইফতার সামগ্রী ও খেজুর কেনা কষ্টসাধ্য হলে, বরকত লাভের জন্য পরিমাণ করিয়ে দেওয়া যেতে পারে। যেমন, কেউ আগে তিনটা খেজুর খেত, এখন একটা খাওয়া যেতে পারে।

সত্যবাদী ও আমানতদার ব্যবসায়ী-

তিনি বলেন, বর্তমানে রমজানে মূল্যবৃদ্ধি একটি জাতীয় সমস্যা। এ কারণে পবিত্র মাসে ইবাদত পালনের আগে খাবার-দাবার নিয়ে আলাদা করে ভাবতে হয়। অনেকে খাবারের তালিকা কাটছাট করার চেষ্টা করেন। ব্যবসায়ীদের উচিত অধিক মূনাফা লাভের আশা না করে রমজানে মানুষের ইবাদত পালনের বিষয়টি সহজিকরণে সহযোগিতা করা।

আল্লাহর রাসূল সা. সত্যবাদী ও আমানতদার ব্যবসায়ীদের জন্য পুরস্কার ঘোষণা করেছেন।

অযাচিতভাবে নিত্য প্রয়োজনীয় খাবার ও খেজুরের মূল্য বৃদ্ধি না করে ব্যবসায়ীদের আল্লাহর রাসূলের বর্ণিত পুরস্কার অর্জনে প্রতিযোগীতা করা উচিত।

আরটিভি খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

বিজ্ঞাপন
Advertisement
Advertisement


© স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৬-২০২৫ | RTV Online |