ঢাকাশনিবার, ০৫ এপ্রিল ২০২৫, ২২ চৈত্র ১৪৩১

২৫ মার্চকে আন্তর্জাতিক গণহত্যা দিবস হিসেবে স্বীকৃতির দাবি 

আরটিভি নিউজ

সোমবার, ২৫ মার্চ ২০২৪ , ০৭:৩৪ পিএম


loading/img

জাতীয় প্রেস ক্লাবের উদ্যোগে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় ২৫ মার্চ জাতীয় গণহত্যা দিবস দিনটিকে ‘আন্তর্জাতিক গণহত্যা দিবস’ স্বীকৃতি প্রদানের দাবি জানিয়েছেন বক্তারা। 

বিজ্ঞাপন

সোমবার (২৫ মার্চ) অনুষ্ঠিত এ আলোচনা সভায় বক্তারা বলেন, ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ পাকিস্তানী সামরিক বাহিনী তাদের দেশীয় দোসরদের প্রত্যক্ষ সহযোগিতায় ‘অপারেশন সার্র্চলাইট’ নামে যে গণহত্যা চালিয়েছিল তা আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইনের সরাসরি লংঘন। এ নৃশংস গণহত্যার চিত্র দেশীয় ও আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে প্রকাশিত ও প্রচারিত হয়েছিল। এছাড়া নানা দালিলিক প্রমাণ দ্বারা এ গণহত্যা প্রমাণিত। কিন্তু স্বাধীনতার অর্ধশতাব্দীর বেশি পার হয়ে গেলেও আনুষ্ঠানিকভাবে একাত্তরের সেই ভয়াল গণহত্যার স্বীকৃতি মেলেনি, যা আন্তর্জাতিক আইন ও মানবাধিকারের প্রতি বিশ্ব সম্প্রদায়ের অবজ্ঞা হিসেবে চিহ্নিত করেন বক্তারা।

‘১৯৭১ এর গণহত্যা ও বিশ্ব স্বীকৃতি’ শীর্ষক এ গোলটেবিল আলোচনায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতির মন্ডলীর সদস্য ও মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা শাহজাহান খান এমপি এবং বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক আআমস আরেফিন সিদ্দিক। 

বিজ্ঞাপন

জাতীয় প্রেস ক্লাবের সভাপতি ফরিদা ইয়াসমিন এমপি’র সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত গোলটেবিল বৈঠকে আরো বক্তব্য রাখেন জাতীয় প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক শ্যামল দত্ত, বিএফইউজের সাবেক সভাপতি মঞ্জুরুল আহসান বুলবুল, দৈনিক যুগান্তরের সম্পাদক সাইফুল আলম, বিএফইউজের সভাপতি ওমর ফারুক, সাবেক মহাসচিব আবদুল জলিল ভূইয়া, ডিইউজের সাবেক সভাপতি কুদ্দুস আফ্রাদসহ ক্লাবের সিনিয়র নেতৃবৃন্দ। স্বাগত বক্তব্য প্রদান করেন জাতীয় প্রেস ক্লাবের যুগ্ম সম্পাদক আইয়ুব ভুঁইয়া এবং অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন সেমিনার, মিট দ্য প্রেস ও আন্তর্জাতিক লিয়াঁজো উপ-কমিটির আহবায়ক জুলহাস আলম।

প্রধান অতিথি শাহজাহান খান বলেন, ২৫ মার্চের গণহত্যা জাতীয় স্বীকৃতি পেতে ৪৭ বছর লেগেছে, যা অত্যন্ত দু:খজনক। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের পরে দীর্ঘদিন যেসব সরকার ক্ষমতায় ছিল তারা বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসকে মুছে ফেলার চেষ্টা করেছে। তারা সুপরিকল্পিতভাবে ২৫ মার্চের কালরাতে সংঘটিত হওয়া গণহত্যার ইতিহাসকেও মুছে ফেলতে চেয়েছে। তিনি বলেন, গণহত্যার জাতীয় স্বীকৃতি মিললেও আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি মেলেনি। সেজন্য দেশের সাংবাদিক সমাজকে মুক্তিযুদ্ধের সময়ের গণহত্যার ইতিহাসকে আরো বেশি করে তুলে ধরতে হবে।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে আরেফিন সিদ্দিক বলেন, ২৫ মার্চের আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি আদায়ের জন্য তথ্য উপাত্তসহ  নতুন প্রজন্মের কাছে জোরালোভাবে তুলে ধরতে হবে। তিনি বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ সারাদেশে যে সব বধ্যভ‚মি রয়েছে সেগুলোর তথ্য উপাত্তসহ আন্তর্জাতিক মহলের কাছে রাষ্ট্রীয় উদ্যোগে উপস্থাপন করতে হবে।

বিজ্ঞাপন

সভাপতি ফরিদা ইয়াসমিন এমপি বলেন, ২৫ মার্চের গণহত্যার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি আদায়ে জাতীয় প্রেস ক্লাব প্রতি বছর এ ধরণের আয়োজন করে আসছে। তিনি বলেন, আন্তর্জাতিকভাবে গণহত্যাকে যেভাবে সংজ্ঞায়িত করা হয় তার প্রতিটি মানদÐে ২৫ মার্চের গণহত্যা আন্তর্জাতিক স্বীকৃতির দাবি রাখে। এ দাবির সঙ্গে সাংবাদিক সমাজ একাত্মতা প্রকাশ করছে।  

সাধারণ সম্পাদক শ্যামল দত্ত বলেন, দেশের বধ্যভ‚মিগুলোর করুণ অবস্থা এবং রাষ্ট্রীয় উদ্যোগে এখনও কোনো জেনোসাইড মিউজিয়াম স্থাপন করা যায়নি, যা অত্যন্ত দু:খজনক। তিনি আরো বলেন, আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি আদায়ের জন্য জাতীয় পর্যায়ে আরো বেশি করে উদ্যোগ নিতে হবে। আরও বক্তব্য রাখেন প্রেস ক্লাব সদস্য চপল বাশার, মাহফুজা জেসমিন প্রমুখ।

আলোচনায় আরও উপস্থিত ছিলেন প্রেস ক্লাব ব্যবস্থাপনা কমিটির যুগ্ম সম্পাদক মো: আশরাফ আলী,  কোষাধ্যক্ষ শাহেদ চৌধুরী, সদস্য কাজী রওনাক হোসেন ও কল্যাণ সাহা।
 

আরটিভি খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

বিজ্ঞাপন


© স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৬-২০২৫ | RTV Online |