১৭ বছরের মধ্যে সবচেয়ে প্রশান্তিময় হতে যাচ্ছে ২০২৬ সালের হজ
ইতিহাসের অন্যতম উষ্ণ হজ মৌসুম গেছে এবার। সৌদি আরবে তীব্র তাপদাহের শিকার হয়ে এখন পর্যন্ত এক হাজার ৮১ জন হজযাত্রীর মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে, যা গতবারের হজ মৌসুমের তুলনায় পাঁচগুণেরও বেশি। তবে, বিশ্বের মুসল্লিদের জন্য সুখবর; পবিত্র হজ পালনের সময় মৃত্যু অনেক কমে যাবে সামনের বছরগুলোতে। চলতি সপ্তাহে বেশ কয়েকটি প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, পরের বছর ২০২৫ সালের হজটি হতে যাচ্ছে গ্রীষ্মকালীন তীব্র গরমের মধ্যে অনুষ্ঠিত শেষ হজ।
মধ্যপ্রাচ্যের সংবাদমাধ্যম গালফ নিউজের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সারা বিশ্ব থেকে মুসল্লিরা আগামী বছর ২০২৫ সালে গ্রীষ্মকালীন শেষ হজ পালন করতে যাচ্ছেন। এরপরের বছর ২০২৬ সালে জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বসন্ত ঋতুতে হতে যাচ্ছে হজের আনুষ্ঠানিকতা। এর ফলে বিগত ১৭ বছরের মধ্যে সবচেয়ে প্রশান্তিময় হজ মৌসুম এসে হাজির হচ্ছে ২০২৬ সালে।
রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম সৌদি গেজেটকে সৌদি আরবের জাতীয় আবহাওয়া কেন্দ্রের (এনএমসি) মুখপাত্র হুসেইন আল-কাহতানি বলেন, আমরা ১৭ বছর পর বসন্তকালে হজ পেতে যাচ্ছি। হজের সময় এই প্রশান্তিময় ঋতু বিরাজ করবে আগামী আট বছর।
অন্য একটি প্রতিবেদনে শূরা কাউন্সিলের সদস্য এবং জলবায়ু পরিবর্তনবিষয়ক গবেষক ডঃ মনসুর আল মাজরুই বলেন, হজের মৌসুম আগামী বছরের (২০২৫ সাল) গ্রীষ্ম মৌসুমের সঙ্গে মিলে যাবে। পরবর্তী আট বছর হজ পালিত হবে বসন্তকালে। এরপর শীতকালে চলে যাবে।
ইসলামে চন্দ্রমাসের হিসেবে, হজ আরামদায়ক বসন্ত ও শীত ঋতুতে চলে যাবে। প্রতিবেদনে বলা হয়, ন্যাশনাল মেটিওরোলজিক্যাল সেন্টারের সরকারি মুখপাত্র হুসেন আল কাহতানিকে উদ্ধৃত করে বলা হয়, ঋতুকালীন সময়ের উল্লেখযোগ্য পরিবর্তনের ফলে ইসলামিক চন্দ্রমাসের ক্যালেন্ডার অনুযায়ী হজের তারিখ প্রতি বছর প্রায় ১০ দিন করে পিছিয়ে যায়। হজ যাত্রার সময় পরিবর্তিত হলে, এটি হজযাত্রীদের প্রচণ্ড গরম থেকে বড় স্বস্তি দেবে।
চলতি বছর হজ করতে গিয়ে এখন পর্যন্ত ৩১ বাংলাদেশির মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে ২৫ জন পুরুষ ও ছয়জন নারী। বৃহস্পতিবার (২০ জুন) রাতে ধর্ম মন্ত্রণালয়ের হজবিষয়ক প্রতিদিনের বুলেটিনে এ তথ্য জানানো হয়েছে। হজ পালনে গিয়ে মক্কায় মৃত্যু হয়েছে ২৪ বাংলাদেশির। এছাড়া মদিনায় চার, জেদ্দায় এক ও মিনায় দুইজনের মৃত্যু হয়েছে।
এদিকে, হজের সময় বিভিন্ন দেশের এল হাজার ৮১ জনের মৃত্যু হয়েছে। এছাড়াও নিখোঁজ রয়েছেন অনেক হজযাত্রী। এদের মধ্যে অধিকাংশের মৃত্যু হয়েছে তীব্র গরমের কারণে।
সৌদি আরবের জাতীয় আবহাওয়া কেন্দ্র জানিয়েছে, চলতি সপ্তাহে মক্কার মসজিদুল হারামে তাপমাত্রা ৫১ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত উঠে যায়। তীব্র গরমের কারণেই এবার এতজনের মৃত্যু হয়েছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
আরব কূটনীতিকরা ফরাসি বার্তাসংস্থা এএফপিকে জানিয়েছেন, তীব্র গরমে এখন পর্যন্ত মিশরের মোট ৬৫৮ জন মারা গেছেন। এদের মধ্যে ৬৩০ জনই অনিবন্ধিত ছিলেন। মিশর থেকে এ বছর ৫০ হাজার ৭৫২ জন নিবন্ধিত হয়ে হজ করেছেন।
মন্তব্য করুন