পাঠ্যবইয়ে অন্তর্বাসের ওয়েবসাইট, যা জানালেন এনসিটিবি চেয়ারম্যান
দেশে স্কুলের পাঠ্যবই নিয়ে কয়েকবছর ধরে বিভিন্ন শ্রেণির বইয়ে ভুলসহ বিভিন্ন বিষয় ধরা পড়ছে, যা নিয়ে সমালোচনার শেষ নেই। এবার নবম শ্রেণির ‘জীবন ও জীবিকা’ বইয়ে অন্তর্বাস বিক্রির ওয়েবসাইটের ঠিকানাযুক্ত কিউআর কোড সংযুক্ত থাকায় বিষয়টি নিয়ে সমালোচনা শুরু হয়েছে। তবে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের (এনসিটিবি) চেয়ারম্যান জানিয়েছেন, বিষয়টি আমাদেরও নজরে এসেছে। এটি আগামী বছর ঠিক করা হবে।
মঙ্গলবার (২৫ জুন) এনসিটিবি চেয়ারম্যান ড. ফরহাদুল ইসলাম গণমাধ্যমে এ তথ্য জানান।
এনসিটিবি চেয়ারম্যান বলেন, ‘বিষয়টি আমাদেরও নজরে এসেছে। যেহেতু বইয়ে কিউআর কোডটি বসানো হয়েছে, তাই আর সংশোধন করার সুযোগ নেই। বই প্রস্তুত করার সময় কিউআর কোডটি সার্চ করে খেলাধুলার পোশাক সামগ্রীর ছবি পাওয়া যেত। কিন্তু এখন খেলাধুলার পোশাকের পরিবর্তে অন্যকিছু আসছে। আগামী বছর থেকে আমরা একটি ফলস কিউআর কোড তৈরি করে বইয়ে সংযোজন করব।’
বইটির ৩৮ নম্বর পেজে দেখা গেছে, ‘ধাপ-৬: ব্যবসার ব্র্যান্ডিং, মার্কেটিং বা বিপণন পরিকল্পনা’ শিরোনামে উদ্যোক্তা হিসেবে কীভাবে ব্যবসা শুরু করতে হয় সেটি উল্লেখ করা হয়েছে। ওই পেজের ‘চিত্র ২.১: বিভিন্ন মাধ্যমে পণ্যের বিজ্ঞাপনের নমুনার চিত্র তুলে ধরে সেখানে নিত্যদিন স্টোরের একটি ছবি দেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের আইকন দেওয়া হয়েছে। তবে এগুলোর মাঝে একটি কিউআর কোড সংযুক্ত করা হয়েছে। কোডটি স্ক্যান করলে ট্রাক্স (Trucss) নামক পর্তুগিজ একটি নারীদের অন্তর্বাস বিক্রির ওয়েবসাইটে নিয়ে যাচ্ছে। যেখানে এডাল্ট নারী মডেলরা অন্তর্বাস পরে সেটা বিক্রির জন্য বিজ্ঞাপন দেখানো হচ্ছে।
নবম শ্রেণির ‘জীবন ও জীবিকা’ বই থেকে জানা গেছে, বইটি রচনা ও সম্পাদনা করেছেন মো. মুরশীদ আকতার, মোসাম্মৎ খাদিজা ইয়াসমিন, হাসান তারেক খাঁন, মোহাম্মদ কবীর হোসেন, মো. সিফাতুল ইসলাম, মো. রুহুল আমিন, মো. তৌহিদুর রহমান, মো. মুস্তাফিজুর রহমান, মোহাম্মদ আবুল খায়ের ভূঁঞা। বইটির শিল্পনির্দেশনা মঞ্জুর আহমদ, চিত্রণ সুবীর মন্ডল, প্রচ্ছদ পরিকল্পনা মঞ্জুর আহমদ, প্রচ্ছদ প্রথমেশ দাশ পুলক, গ্রাফিক্স নূর-ই-ইলাহী ও কে. এম. ইউসুফ আলী।
এর আগে, চলতি বছরে শিক্ষার্থীরা নতুন বই হাতে পাওয়ার পর থেকে বিভিন্ন বিতর্ক শুরু হয়। এর মধ্যে সপ্তম শ্রেণির ইতিহাস ও সামাজিক বিজ্ঞান বইয়ের ‘মানুষে মানুষে সাদৃশ্য ও ভিন্নতা’ অধ্যায়ের ‘শরীফার গল্প’ নিয়ে আপত্তি তোলে একটি পক্ষ। মূলত শিক্ষক আসিফ মাহতাব একটি অনুষ্ঠানে বই থেকে ওই গল্পের পৃষ্ঠা ছিঁড়ে ফেলেন এবং অন্যদেরও ছেড়ার আহ্বান জানান।
মাহতাবের বই ছেড়ার সেই ভিডিও মুহূর্তেই ভাইরাল হয়ে পড়ে। শুরু হয় তুমুল আলোচনা-সমালোচনা। পরিস্থিতি সামাল দিতে ‘শরীফার গল্প’র বিষয়ে বিশেষজ্ঞ কমিটি করে দেয় শিক্ষা মন্ত্রণালয়। সম্প্রতি বিশেষজ্ঞ কমিটির দেওয়া প্রতিবেদন ও সুপারিশের ভিত্তিতে গল্পটি পাঠ্য বই থেকে বাদ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে মন্ত্রণালয়।
মন্তব্য করুন