• ঢাকা শুক্রবার, ১৮ অক্টোবর ২০২৪, ৩ কার্তিক ১৪৩১
logo

‘চরমপত্র’র কথক ও লেখক এম আর আখতার মুকুলের মৃত্যুবার্ষিকী আজ

আরটিভি নিউজ

  ২৬ জুন ২০২৪, ১১:২৬
এম আর আখতার মুুকুল

আজ ২৬ জুন, সাংবাদিক, লেখক, সম্পাদক এবং মুক্তিযুদ্ধের সময় স্বাধীনবাংলা বেতারকেন্দ্র থেকে প্রচারিত সাড়া জাগানো অনুষ্ঠান ‘চরমপত্র’-এর কথক ও লেখক এম আর আখতার মুকুলের ২০তম মৃত্যুবার্ষিকী। দীর্ঘদিন ক্যানসারের সঙ্গে যুদ্ধ করে ২০০৪ সালের ২৬ জুন তিনি ইহলোক ত্যাগ করেন।

এম আর আখতার মুকুলের জন্ম ১৯৩০ সালের ৯ আগস্ট বগুড়া জেলার মহাস্থানগড়ের অন্তর্গত চিংগাসপুর গ্রামে। পুরো নাম মুস্তাফা রওশন আখতার মুকুল। পিতা বিশিষ্ট সাহিত্যিক সা’দত আলি আখন্দ, মাতা রাবেয়া খাতুন। ছাত্রজীবন থেকেই তিনি সক্রিয় রাজনীতিতে জড়িত ছিলেন এবং এ কারণে তাঁকে একাধিকবার জেল খাটতে হয়েছে।
১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের সময় প্রচারিত স্বাধীন বাংলা বেতারকেন্দ্রের তার রচনা ও কণ্ঠ প্রদান করা ‘চরমপত্র’ অনুষ্ঠানটির মাধ্যমে মুক্তিযোদ্ধাদের ব্যাপক সাহস, উৎসাহ-উদ্দীপনা ও অনুপ্রেরণা জুগিয়েছিল৷

সাংবাদিকতা ক্ষেত্রে অসামান্য অবদানের জন্য ২০০১ সালে তিনি বাংলাদেশ সরকার থেকে স্বাধীনতা দিবস পুরস্কার লাভ করেন। তিনি একজন কলামিস্ট৷ তার প্রকাশিত গ্রন্থের সংখ্যা ৩৫টি৷


এম আর আখতার মুকুলের শিক্ষাজীবন শুরু হয় ময়মনসিংহে। তিনি সপ্তম শ্রেণি পর্যন্ত ময়মনসিংহ জিলা স্কুলে পড়েন। তার বাবা সরকারি চাকরি করার কারণে তারা দিনাজপুর চলে আসেন এবং ১৯৪৫ সালে দিনাজপুর মহারাজা হাইস্কুল থেকে ম্যাট্রিক পাস করেন। মুকুল দিনাজপুর রিপন কলেজ (ব্রাঞ্চ) থেকে আইএ পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন ১৯৪৭ সালে৷ ছাত্রজীবনেই রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়ায় তিনি ১৯৪৮ সালে জননিরাপত্তা আইনে কারাগারে নিক্ষিপ্ত হন এবং ১৯৪৯ সালে জেলখানা থেকে সাজাপ্রাপ্ত আসামি হিসেবে পরীক্ষা দিয়ে স্নাতক পরীক্ষায় সাফল্য অর্জন করেন৷

১৯৫০ সালে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আইন ক্লাসে ভর্তি হন এবং ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলনে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেন৷ ১৯৫২ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি রাত ১২টার আন্দোলনের সিদ্ধান্ত নেওয়ার বৈঠকের সময় যে ১১ জন ছাত্রনেতা উপস্থিত হন তাদের মধ্যে তিনি অন্যতম ছিলেন। অন্যরা ছিলেন ভাষাসৈনিক গাজীউল হক, মুহম্মদ হাবিবুর রহমান, মোহাম্মদ সুলতানা, জিল্লুর রহমান, আবদুল মোমিন, এস এ বারী এটি, সৈয়দ কামরুদ্দীন হোসেইন শহুদ, আনোয়ারুল হক খান, মঞ্জুর হোসেন ও আনোয়ার হোসেন।


ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সময় এম আর আখতার মুকুল সাংবাদিকতা পেশায় যোগদান করেন৷ সাপ্তাহিক ‘নও বেলাল’, ‘পাকিস্তান টুডে’, ‘দৈনিক আমার দেশ’ ও ‘দৈনিক সংবাদ’ ইত্যাদি পত্রিকায় তিনি কাজ করেন। ১৯৫৩ সালের ২৫ ডিসেম্বর ইত্তেফাকের জন্মলগ্ন থেকে ১৯৬০ সালের জুলাই পর্যন্ত এই পত্রিকায় রিপোর্টার হিসেবে কাজ করেন৷ ১৯৬১ সালের শেষের দিক থেকে শুরু করে ১৯৭১ সালের এপ্রিল পর্যন্ত এম আর আখতার মুকুল আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থা ইউডিআই-এর ঢাকাস্থ সংবাদদাতার দায়িত্ব পালন করেন৷

একইসঙ্গে তিনি ১৯৬৭ সাল পর্যন্ত দৈনিক পত্রিকায় এবং পরে দৈনিক পূর্বদেশেও চাকুরি করেন৷ এম আর আখতার মুকুল ১৯৭১ সালে প্রবাসী গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারে যোগদান করে তথ্য ও প্রচার দপ্তরের পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন৷ ১৯৭২ সালের জুলাই মাসে তিনি বাংলাদেশ বেতারের মহাপরিচালকের দায়িত্ব পান৷ ১৯৭৫ সালের ১ জানুয়রি তিনি লন্ডনে বাংলাদেশ হাইকমিশনে প্রেস কাউন্সিলর হিসেবে যোগ দেন৷ ১৯৭৯ সালের শেষের দিকে এমআর আখতার মুকুল দেশে ফিরে আসেন এবং বাংলাদেশ সরকারের কৃষি মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব হিসেবে যোগদান করেন৷ ১৯৮৭ সালের আগস্ট মাসে তিনি সরকারি চাকুরি থেকে অবসর গ্রহণ করেন৷

মন্তব্য করুন

Radhuni
  • অন্যান্য এর পাঠক প্রিয়