• ঢাকা বুধবার, ০৩ জুলাই ২০২৪, ১৯ আষাঢ় ১৪৩১
logo

রাসেলস ভাইপার

আতঙ্কের কিছু নেই, দেশের প্রতিটি হাসপাতালে এন্টিভেনম আছে: স্বাস্থ্যমন্ত্রী 

আরটিভি নিউজ

  ২৭ জুন ২০২৪, ১৮:৫৬
ছবি : সংগৃহীত

স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী ডা. সামন্ত লাল সেন বলেছেন, জনগণের কাছে এ বার্তা পৌঁছে দিতে হবে যে, রাসেলস ভাইপার নিয়ে আতঙ্কের কিছু নেই। আমি সংসদ সদস্যদের রোগীকে চিকিৎসকের কাছে দ্রুত নিয়ে আসার ব্যবস্থা করার আহ্বান করেছি। আমি সবাইকে আশ্বস্ত করতে চাই, আমাদের এন্টিভেনমের সংকট নেই।

বৃহস্পতিবার (২৭ জুন) দুপুরে রাজধানীর শাহবাগের বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব কনভেনশন হলে ‘রাসেলস ভাইপার : ফেরার ভার্সেস ফ্যাক্ট’ শীর্ষক আলোচনাসভায় এসব কথা বলেন তিনি।

সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, সাংবাদিক ভাই-বোনেরা, বাংলাদেশের মেডিসিনের আজকে যারা কর্ণধার, তাদের মুখেই শুনলেন, রাসেলস ভাইপারে আক্রান্ত হলে কী করণীয় আর কী করণীয় নয়। আপনারা এ মেসেজগুলো আমাদের জনগণের কাছে পৌঁছে দেন। আপনারাই কিন্তু পারেন জনগণের কাছে রাসেলস ভাইপারে আতঙ্কিত না হওয়ার বার্তাটা পৌঁছে দিতে।

তিনি বলেন, করোনাকালে আমরা শুনেছিলাম, ঢাকার রাস্তায় মানুষের লাশ পড়ে থাকবে। চিকিৎসকদের কল্যাণে তা হয়নি। এবারও সবার চেষ্টায় এ সমস্যা থেকে আমার উত্তরণ করতে পারব।

এ সময় স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী ডা. রোকেয়া সুলতানা বলেন, বাংলাদেশে সবাই ডাক্তার। এটি একটি বড় সমস্যা। আমাদের এখানে যেকোনো রোগে মানুষ নিজেরা সিদ্ধান্ত নিয়ে ওষুধ খায়। এমনকি এন্টিবায়োটিকও খায়। সাপের কামড় খেলে ওঝাদের কাছে না গিয়ে চিকিৎসকের কাছে যেতে হবে। সাপের বিষয়ে আমরা সচেতনতা তৈরির চেষ্টা করছি। এ বিষয়ে গণমাধ্যমের সহযোগিতা চাই।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ) উপাচার্য অধ্যাপক ডা. দীন মো. নূরুল হক বলেন, দেশে ৬৬৫ জনকে প্রতিদিন কুকুরে কামড়ায়। ডুবেও অনেকসংখ্যক মানুষ মারা যায়। রাসেলস ভাইপারে কামড়ের সংখ্যা আরও অনেক কম। এ বিষয়ে আতঙ্ক তৈরি না করে সচেতন হতে হবে। ভয় তৈরি করা যাবে না।

স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তারের মহাপরিচালক ও বাংলাদেশ সোসাইটি অব মেডিসিনের প্রেসিডেন্ট অধ্যাপক ডা. টিটো মিয়া বলেন, সাপে কাটা রোগী যদি হাসপাতালে এসে মৃত্যুবরণ করে, তার দায় আমাদের। আমাদের প্রতিটি হাসপাতালে এন্টিভেনম পৌঁছানো হয়েছে। আমাদের চিকিৎসকরা এ বিষয়ে প্রশিক্ষিত। তবে ওঝাসহ নানান কারণে রোগী হাসপাতালে আসতে দেরি করায় মৃত্যু বাড়ে। দেরিতে হাসপাতালে আসায় রোগীরা অন্তত ক্রিটিক্যাল অবস্থায় চলে যায়। ওই অবস্থায় তাদের ইনটেনসিভ কেয়ার সেন্টারের প্রয়োজন। হাসপাতালে এ ক্রিটিক্যাল রোগীদের মৃত্যু অনেকটার রোধ করা সম্ভব যদি ইনটেনসিভ সেবা নিশ্চিত করা যায়।

সেমিনারে বক্তারা বলেন, দেশের ২৭ জেলায় বহুল আলোচিত রাসেলস ভাইপার সাপ পাওয়া গেছে। এর মানে এ নয় যে, এসব এলাকার মানুষ ঘর থেকে বের হবে না। এ সাপ নিয়ে অনেক বেশি গুজব ছড়ানো হয়েছে। রাসেলস ভাইপার সাপ কখনও তেড়ে এসে মানুষকে কামড়ায় না। সে বিপদের পড়লে কিংবা ঝুঁকি দেখলেই আত্মরক্ষার্থেই শুধু কামড় দেয়।

২০১৩ সালে প্রথববার সাপটির কামড়ে রোগী পাওয়া যায়। এ সাপের দংশনে ৭০ শতাংশ রোগী সুস্থ হচ্ছে। বাকি ৩০ শতাংশ মৃত্যুর জন্য দায়ী দেরিতে হাসপাতালে আসা। বর্তমানে দেশে এর এন্টিভেনম রয়েছে। প্রতিটি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এর এন্টিভেনম পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি দেশেও এ সাপের এন্টিভেনম তৈরি কাজ চলমান আছে।

সেমিনারে আরও বলা হয়, সরকারি মেডিকেল হাসপাতাল, অনেক উপজেলা হাসপাতালেও সাপে কাটা রোগীর সফল চিকিৎসা হয়, তাই সাপে কাটা রোগীকে ওঝা বা কোনো কবিরাজের কাছে না নিয়ে যতদ্রুত সম্ভব সরকারি হাসপাতালে নিতে হবে। সাপ কামড় দেওয়ার ১০০ মিনিটের মধ্যে হাসপাতালে নিয়ে চিকিৎসা দেওয়া সম্ভব হলে রোগীর মৃত্যুর সম্ভাবনা কমে যায়। পাশাপাশি যারা মাঠে কৃষিকাজ করেন তাদের গামবুট পড়ে কাজ করার পরামর্শও দেওয়া হয় সেমিনার থেকে।

সম্প্রতি বহুল আলোচিত রাসেলস ভাইপার (চন্দ্রবোড়া) সাপটি সারাবিশ্বের ১০টি বিষধর সাপের তালিকার মধ্যে নেই বলেও জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।

মন্তব্য করুন

  • অন্যান্য এর পাঠক প্রিয়
আরও পড়ুন
দেশে ভেজাল ওষুধের ঝুঁকি মোকাবিলা বিরাট চ্যালেঞ্জ: স্বাস্থ্যমন্ত্রী
সরকারি হাসপাতালে সবকিছু বিনামূল্যে হবে: স্বাস্থ্যমন্ত্রী
সব হাসপাতালে অ্যাম্বুলেন্সের ঘাটতি কমানোর আশ্বাস স্বাস্থ্যমন্ত্রীর
স্বাস্থ্যসেবা-স্বাস্থ্য শিক্ষায় নজরদারি অব্যাহত থাকবে: স্বাস্থ্যমন্ত্রী