• ঢাকা রোববার, ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ২৪ ভাদ্র ১৪৩১
logo

হজে গিয়ে বাংলাদেশিদের মৃত্যুর নেপথ্যে কী?

আরটিভি নিউজ

  ২৮ জুন ২০২৪, ০৫:৩৬
ছবি: সংগৃহীত

ইসলাম একটি সুন্দর ও ভারসাম্যপূর্ণ জীবন ব্যবস্থা। মানুষের সহজাত ও জীবনঘনিষ্ঠ ধর্ম। ইসলামের ইবাদতগুলো কোনোটা আর্থিক এবং কোনোটা শারীরিক। সালাত শারীরিক। জাকাত আর্থিক। হজ এমন একটি ইবাদত, যা উভয়টিকে একত্রিত করেছে। এ কারণে হজের ফজিলতও অনেক বেশি। এমনকি জিহাদের মতো ফজিলত বর্ণনা করা হয়েছে। আর্থিক ও শারীরিকভাবে সামর্থ্যবান লোকদের ওপর হজ ফরজ হয়।

যুবক অবস্থায় কারও ওপর হজ ফরজ হওয়ার পর যদি সে নিয়ত করে বৃদ্ধ অবস্থায় হজ করবে, আর বৃদ্ধ হওয়ার আগেই যদি মারা যায় তাহলে ফরজ হজ আদায় না করার কারণে গুনাহগার হতে হবে।

প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘যে ব্যক্তির বায়তুল্লাহর হজ করার মতো পাথেয় ও যানবাহন আছে অথচ হজ পালন করল না, সে ইহুদি কিংবা খ্রিস্টান হয়ে মারা গেল কি না, তা বলা যায় না।’ (তিরমিজি)

রাসুল (সা.) ‘কার ভাগ্যে কি আছে’ বলে এ মর্মে সতর্ক করেছেন যে, মৃত্যু বা শারীরিক অক্ষমতা আসার আগেই বা স্বচ্ছলতা থাকতেই সামর্থবান ব্যক্তিদের দ্রুত হজ পালন করা জরুরি।

কিন্তু বাংলাদেশে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই দেখা যায়, যুবক অবস্থায় তাদের ওপর হজ ফরজ হলেও হজ পালন করে বৃদ্ধাবস্থায়। আবার কারো কারো দৃষ্টিভঙ্গি হলো, আজীবন যত পাপ ও গুনাহের কাজ সংগঠিত হবে, শেষ জীবনে হজ করে সেসব গুনাহ থেকে মুক্ত হয়ে পরবর্তীতে ধর্মীয় কাজ করে জীবনের শেষ দিনগুলো অতিবাহিত করবেন। এমন চিন্তা-ভাবনা মোটেও ভালো নয়। এমন নিয়তে হজ করলে তা পরকালের জন্য ভালো ফল বয়ে আনবে না বরং এটা হলো পরকালের ক্ষতি।

এছাড়া বয়স্কজনিত কারণে হজের কঠিন কিছু কাজ সম্পাদন করতে গিয়ে নানা বিপর্যয়ের সম্মুখীন হতে হয়। হজ পালনের জন্য শারীরিক যে সক্ষমতা প্রয়োজন তা বৃদ্ধাবস্থায় খুব বেশি থাকে না। অথচ হজের অন্যতম শর্ত হলো শারীরিকভাবে সক্ষমতা থাকা। হজে গিয়ে প্রচণ্ড গরমের কারণেও অনেক সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়। যা বয়স্কদের জন্য সহনীয় পর্যায়ে থাকে না। ফলে মৃত্যুসহ নানা ধরণের অসুখে আক্রান্ত হতে হয়। দেরিতে হজ করার ফলে ইহকালের এসব ক্ষতি হয়।

বয়স্করা হজে যাওয়ায় প্রতি বছরেই বার্ধক্যজনিত কারণে বাংলাদেশি হাজিদের মৃত্যু হয়। চলতি সর্বশেষ ২৪ জুন পর্যন্ত ৪৪ বাংলাদেশি হাজির মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে পঞ্চাশোর্ধ্বই ৪০ জন। আর পঞ্চাশের নিচে চারজন। এই সমীকরণ থেকেও বিষয়টি স্পষ্ট যে, বয়সের ভারই বাংলাদেশি হজ যাত্রীদের মৃত্যুর অন্যতম কারণ। তাই হজ ফরজ হলে শেষ জীবনের আশায় না থেকে যুবক অবস্থাতেই হজ করা বাঞ্ছনীয়।

ইসলামি স্কলারদের পরামর্শ হলো- হজ এমন একটি ইবাদত যা পূর্ণ করার জন্য আর্থিক সামর্থ্য ও শারীরিক সামর্থ্য দুটোই একসাথে দরকার হয়। আর এ দুটো সামর্থ্যই প্রায় প্রত্যেকটি মানুষ তার যুবক বয়সেই অর্জন করার যোগ্যতা রাখে। বেশির ভাগ মানুষই তরুণ বয়সে অর্থ উপার্জন করে থাকে। অতএব তরুণ বয়সেই হজ করা উত্তম। এছাড়া সৌদি আরবের উত্তপ্ত আবহাওয়াও বয়স্কদের জন্য সহনীয় পর্যায়ের নয়।

প্রথম যে ব্যক্তি তরুণ বয়সে কাবাঘর তাওয়াফ করেছিলেন, তিনি হজরত আদম (আ.)। হজরত ইব্রাহিম (আ.) তিনিও তরুণ বয়সে কাবা প্রদক্ষিণ করেছিলেন। তরুণ বয়সের হাজি ছিলেন হজরত ইসমাইল (আ.)। এক সন্তানের জননী ইসমাইল মাতা হজরত হাজেরা সাফা-মারওয়া দৌড়ে হজ সম্পাদন করেছিলেন। তাঁরা প্রত্যেকেই বয়সের ভারে নুয়ে পড়ার আগেই কাবা তাওয়াফ করেছিলেন।

মন্তব্য করুন

Radhuni
  • অন্যান্য এর পাঠক প্রিয়
আরও পড়ুন
দেশে ফিরেছেন আমিরাতে ক্ষমা পাওয়া ১৪ বাংলাদেশি
মালয়েশিয়ায় ২৪২ বাংলাদেশি অভিবাসী আটক
আমিরাতে ক্ষমা পাওয়া ১৪ বাংলাদেশি দেশে ফিরবেন সন্ধ্যায়
চুক্তি নবায়ন ছাড়া হজ কার্যক্রম করতে পারবে না এজেন্সিগুলো