বিপদ মানুষকে আল্লাহর দিকে ধাবিত করে। বান্দার ওপর যখন বিপদ আসে তখন সে আল্লাহর কাছে ফিরে আসে। তাই আল্লাহ বান্দাকে ছোট-বড় বিপদ দিয়ে পরীক্ষা করে থাকেন। আল্লাহ তাআলা পবিত্র কোরআনে বলেন, ‘যারা তাদের ওপর বিপদ এলে বলে, আমরা তো আল্লাহরই। আর নিশ্চয়ই আমরা তার দিকেই প্রত্যাবর্তনকারী।’
পবিত্র কুরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘হে মুমিনগণ! তোমরা ধৈর্য ও নামাজের মাধ্যমে সাহায্য প্রার্থনা কর। নিশ্চয়ই আল্লাহ ধৈর্যশীলদের সঙ্গে রয়েছেন।’ (সূরা বাকারা, আয়াত: ১৫৩)
বিপদে ধৈর্য ধারণ করার প্রতিদান
কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘যারা তাদের রবের সন্তুষ্টি লাভের উদ্দেশ্যে সবর করে, সালাত কায়েম করে এবং আমি তাদের যে রিজিক প্রদান করেছি, তা থেকে গোপনে ও প্রকাশ্যে ব্যয় করে এবং ভালো কাজের মাধ্যমে মন্দকে দূর করে, তাদের জন্যই রয়েছে আখিরাতের শুভ পরিণাম। স্থায়ী জান্নাতসমূহ, যাতে তারা এবং তাদের পিতৃপুরুষগণ, তাদের স্ত্রীগণ ও তাদের সন্তানদের মধ্যে যারা সৎ ছিল তারা প্রবেশ করবে। আর ফেরেশতারা প্রতিটি দরজা দিয়ে তাদের নিকট প্রবেশ করবে। তোমাদের প্রতি শান্তি বর্ষিত হোক, কারণ তোমরা ধৈর্য ধারণ করেছিলে। কতই না উত্তম পরকালের এই ঘর!’ (সুরা আর-রাদ, আয়াত ২২-২৪)
আনাস ইবনু মালিক (রা.) বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, প্রকৃত ধৈর্য ধারণ করা হলো বিপদ-আপদের প্রথম মুহূর্তে। (সহিহ মুসলিম, হাদিস: ২০১১)
আবু সাঈদ খুদরি (রা.) থেকে বর্ণিত, কিছুসংখ্যক আনসার সাহাবি রাসুলুল্লাহর (সা.) নিকট কিছু চাইলে তিনি তাদের দিলেন। পুনরায় তারা চাইলে রাসুল (সা.) তাদের আবারও দিলেন। এমনকি তার (রাসুল সা.) নিকট যা ছিল সবই শেষ হয়ে গেল। এরপর তিনি বললেন, আমার নিকট যে মাল থাকে তা তোমাদের না দিয়ে আমার নিকট জমা রাখি না। তবে যে যাঞ্চা (প্রার্থনা, যাচনা) থেকে বিরত থাকে, আল্লাহ তাকে বাঁচিয়ে রাখেন। আর যে পরমুখাপেক্ষী না হয়, আল্লাহ তাকে অভাবমুক্ত রাখেন। যে ব্যক্তি ধৈর্য ধারণ করে আল্লাহ তাকে সবর দান করেন। সবরের চাইতে উত্তম ও ব্যাপক কোনো নিয়ামত কাউকে দেওয়া হয়নি। (সহিহ বুখারি, হাদিস: ১৩৮৪)
আবু সাঈদ খুদরি ও আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, মুসলিম ব্যক্তির ওপর যেসব যাতনা, রোগ-ব্যাধি, উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা, দুশ্চিন্তা, কষ্ট ও পেরেশানি আপতিত হয়, এমনকি যে কাটা তার দেহে বিদ্ধ হয়- এসবের দ্বারা আল্লাহ তার গুনাহসমূহ ক্ষমা করে দেন। (সহিহ বুখারি, হাদিস: ৫২৩৯)