• ঢাকা রোববার, ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ২৪ ভাদ্র ১৪৩১
logo

জঙ্গীদের নাশকতা ঠেকাতে পুলিশের ভূমিকা

সাঈদুর রহমান রিমন

  ২৫ জুলাই ২০২৪, ১৩:২২
লেখক : সাঈদুর রহমান রিমন
লেখক : সাঈদুর রহমান রিমন

কয়েক বছর ধরে বিশেষায়িত বাহিনীগুলো দেশে জঙ্গী নেই, জঙ্গী নেই বলে ধোয়া তুলে সরকারকে ঘুম পাড়িয়ে রাখার পর কী দেখতে পেলো দেশবাসী? দেখতে পেলো ৭২ ঘন্টাব্যাপী নজিরবিহীন তাণ্ডব। এ তাণ্ডব কোনভাবেই ছাত্রদের নয়। পুরোটাই ভয়ঙ্কর জঙ্গীদের নির্মম ধ্বংসযজ্ঞ। সরকারকে দিশেহারা বানাতে, রাষ্ট্রকে পঙ্গু করে দিতে যা যা দরকার সেগুলোই তারা করেছে, পরিকল্পিতভাবে।

এবারের ভযাবহ নাশকতায় জামায়াত শিবিরের সম্পৃক্ততা নিয়েও প্রশ্ন রয়েছে। কারণ দল দুটি সরকার বিরোধী যুৎসই আন্দোলন করার সক্ষমতা আরো আগেই হারিয়েছে। ২০১৩-১৪ সালের অসহযোগ আন্দোলনের পর গত একদশকেও তারা মেরুদণ্ড দাঁড় করে আর কোনো আন্দোলন জমিয়ে তুলতে পারেনি। বরং আন্দোলনের নামে আচমকা কিছু অরাজকতা ঘটিয়ে পরক্ষণেই লাপাত্তা হতে দেখা গেছে। বর্তমানে দল দুটির অবস্থা আরো করুণ। একটা ককটেল ফুটলেও আশপাশের কয়েক মহল্লার বিএনপি জামায়াত ঢাকা ছেড়ে পালিয়ে যায়। সুতরাং ছাত্র আন্দোলনের সঙ্গে তাল মিলিয়ে তারা ৭২ ঘণ্টা ধরে একের পর এক নাশকতা চালাবে- এমন সক্ষমতা অর্জন অবিশ্বাস্যই বটে।

নাশকতার ফুটেজ এবং প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাতে হামলাগুলোতে বিএনপি জামায়াত শিবিরের পরিচিত মুখের বর্ণনা শোনা যায়নি এখনও। আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের বরাবরই প্রধান রাস্তার নির্দ্দিষ্ট গন্ডিতে জমায়েত হয়ে দিনভর স্লোগানসহ নানাবিধ বার্তা প্রচার করতে দেখা গেছে। বিক্ষুব্ধ মিছিল নিয়ে তারা এদিক সেদিক প্রদক্ষিণ করেনি বললেই চলে।

তাহলে এরইমধ্যে কারা সংঘবদ্ধ মিছিল নিয়ে বিভিন্ন স্থাপনায় হামলা চালালো? মেট্রো রেলে কারা আগুন জ্বালালো? সেখানকার ভিডিও ফুটেজসমূহে প্রথম সারির হামলাকারীদের চেহারা অবশ্যই রয়েছে। গুলিতে হতাহত শিক্ষার্থীদের কারো চেহারার সঙ্গে কোনো মিল কি খুঁজে পাওয়া গেল?

এসব কারণেই সংঘটিত নাশকতাসমূহে জঙ্গীদের অংশ গ্রহণের বিষয়টি বারবার সামনে আসছে। একটু পর্যবেক্ষণ করলেই দেখা যায়, দলগুলো জ্বালাও পোড়াও ভাংচুর চালায় নিজ নিজ সংগঠনের শক্তিমত্তা দেখাতে। কিন্তু জঙ্গীরা যাবতীয় নাশকতা ঘটায় যুদ্ধ স্টাইলে, চমকে যাওয়ার মতো অভাবনীয়তায়। যেমন হঠাৎ করেই নরসিংদী কারাগার দখলের মাধ্যমে বন্দী থাকা জঙ্গীদের ছিনিয়ে নেয়ার ঘটনা। এতটাই চমকে দিলো তারা যা ঘটনার পূর্ব মুহূর্ত পর্যন্ত কারো কল্পনাতেও ছিল না।

একইভাবে ছাত্র আন্দোলনের 'সাইড স্টোরি'র মতো সিরিজ ঘটনাগুলোও ঘটেছে চমকানোর মতো নাশকতায়। নিরাপত্তা বেষ্টনীর মেট্রো রেলে হামলা, ভাংচুর ও জ্বালিয়ে দেয়া, একের পর এক অধিদপ্তর ভবনে আগুন লাগানো, ভবনগুলোর সুরক্ষিত পার্কিং লটে ঢুকে শত শত সরকারি গাড়ি পুড়িয়ে কয়লায় পরিণত করা। কঠিন নিরাপত্তা বলয়কে তুচ্ছ করে বিটিআরসি ভবনের ১১ তলায় উঠে কেন্দ্রীয় সার্ভার স্টেশন ধ্বংসের প্ল্যানিং যোগ্যতাও নেই আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী কিংবা ন্যুব্জ থাকা দলগুলোর। এসব নাশকতা দেশকে পঙ্গু করাসহ সরকারকে চরম বেকায়দায় ফেলার জঘন্য যুদ্ধ কৌশলই বটে।

নাশকতার সিরিজ ঘটনার মধ্যেই রয়েছে পুলিশের স্থাপনাগুলো গুড়িয়ে দেয়াসহ নরসিংদী কারাগার দখল করার ঘটনা। সেখানে বন্দী থাকা শীর্ষ ৯ জঙ্গী ছিনিয়ে নেওয়া হয়েছে এবং বাকী ৮২৬ কারাবন্দীকে ছেড়েও দেওয়ার ঘটনাও ঘটেছে। প্রশিক্ষিত জানবাজ জঙ্গী ছাড়া এসব তান্ডব চালানোর দুঃসাহস কোনো দল বা গোষ্ঠীর আছে বলে মনে করি না।

বিভিন্ন মহলের মত অভিমত অনুযায়ী রাজধানী জুড়ে ভয়ঙ্কর তান্ডবলীলা চালানোর ঘটনাসমূহে কয়েকশ জঙ্গীর প্রত্যক্ষ অংশগ্রহণ ছিল বলে ধারণা করা হয়। অথচ জঙ্গী না থাকার ধোয়া তুলে কয়েক বছর ধরেই বিশেষায়িত বাহিনীগুলো ছিল নির্জিব ভূমিকায়।

যখন জানা গেল, কুকিচিন আর মিয়ানমারের গোপন আস্তানাগুলোতে ১০/১২টি ব্যাচে কয়েকশ’ জঙ্গী উচ্চতর প্রশিক্ষণ নিয়েছে, দক্ষতা অর্জন করেছে ভারি অস্ত্রশস্ত্র চালানোতেও। তারাই তো ছড়িয়ে আছে দেশে। সেই প্রশিক্ষিত জঙ্গীদের অবস্থান, গতিবিধি, পরিকল্পনার কোনো কিছুই সরকার জানতে পারলো না। জঙ্গীদের ব্যাপারে গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর ডাটা ব্যাংক খুব বেশি সবল নয়। এসব ব্যর্থতায় কোনো সংস্থার মধ্যে উদ্বেগ উৎকন্ঠাও নেই।

কারা বেশি লাভবান?

অপরাধ বিজ্ঞানের বহুল প্রচলিত সংজ্ঞা হচ্ছে, যে অপরাধ থেকে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে যে বা যারা লাভবান হয় তারাই কোনো না কোনোভাবে সে অপরাধে সম্পৃক্ত থাকে- এটাই প্রাথমিক সূত্র হিসেবে পরিচিত। তাহলে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনকে ঘিরে যা কিছু ঘটে গেল সেগুলো থেকে সবচেয়ে লাভবান হলো কে বা কারা?

একটু মনে করিয়ে দিতে চাই, কোটা কেন্দ্রীক আন্দোলনের পূর্ব সময় পর্যন্ত দেশে দুর্নীতি-লুটপাট বিরোধী বিরতিহীন কলমযুদ্ধ চলছিল। সে যুদ্ধে ১৬ পুলিশ কর্মকর্তাসহ বিভিন্ন সেক্টরের অর্ধ শতাধিক কর্তার ভেদ কাহিনীও ফাঁস হয়। এই ধারা অব্যাহত থাকলে শত কোটিপতি বনে যাওয়া হয়তো হাজার খানেক কর্তার মুখোশ উন্মোচন হতে পারতো।

কিন্তু শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের কারণে লুটপাটের তথ্য উদঘাটন ও প্রকাশের ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় বিচ্যুতি ঘটেছে। এতে আলাদীন চেরাগের মালিক বনে যাওয়া শত শত কোটি টাকা আর বেশুমার সম্পদধারী লুটেরাগণ সবচেয়ে লাভবান হয়েছেন। এক্ষেত্রে জঙ্গীরা কতটুকু লাভবান হলেন সেটি অবশ্য অভিজ্ঞ মহলের বিশ্লেষণের ব্যাপার।

লুটেরা গোষ্ঠী আর উগ্রবাদী জঙ্গীদের মধ্যে একটি জায়গায় খুব মিল রয়েছে, তারা কেউ দেশের মঙ্গল চায় না বরং উভয় গোষ্ঠীই দেশ ধ্বংসের তৎপরতায় লিপ্ত। দেশের প্রতি বিন্দুমাত্র আস্থা, মায়া, ভালোবাসা নাই- তারাই ভয়ংকর নাশকতা চালানোর নেপথ্য কারিগর। জঙ্গীদের ভয়ঙ্কর সিরিজ নাশকতার পেছনে লুটেরাদের অর্থায়ন থাকার অভিযোগ উঠলেও তাতে অবাক হওয়ার কিছু নেই।

মেট্রো রেল, বন ভবন, ত্রাণ ভবন, স্বাস্থ্য ভবন, বিটিআরসি ভবন জ্বালিয়ে পুড়িয়ে যে অরাজকতা ঘটানো হয়েছে তা নজিরবিহীন। শত শত সরকারি গাড়ি পুড়িয়ে কয়লা বানানো হয়েছে। এমন পৈশাচিকতা মেনে নেয়া যায় না। রাষ্ট্রকে পঙ্গু বানানোর এ কেমন ধ্বংসযজ্ঞ? এসব স্থাপনায় সিসিটিভি ফুটেজে হামলাকারীরা চিহ্নিত, তাদের ব্যাপারে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হোক।

অভিযোগ উঠেছে, স্বার্থান্বেষী মহলের পরিকল্পিত ধ্বংসযজ্ঞের সব দায় আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের উপর চাপিয়ে দেয়ার চেষ্টা হয়েছে। চেষ্টা হয়েছে এই কারণে, যাতে তাদের উপর নিপীড়ন ও হত্যার মতো অতিমাত্রার ক্ষমতা প্রয়োগ করা যায়। হেলিকপ্টার থেকে শিক্ষার্থী জমায়েতের স্থানসমূহে টিয়ার শেল ও মুহূর্মুহু গলিবর্ষণের ঘটনা অতিমাত্রায় ক্ষমতা ব্যবহারের কথাটি মনে করিয়ে দেয়। অবশ্য র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র‌্যাব) মহাপরিচালক (ডিজি), অতিরিক্ত আইজিপি মো. হারুন অর রশিদ বলেছেন, সহিংসতা ঠেকাতে র‌্যাব হেলিকপ্টার থেকে কোনো গুলি করেনি। এগুলো প্রপাগান্ডা।

অনুসন্ধানে অন্য কিছু

আন্তর্জাতিক পর্যায়ের জঙ্গী বিষয়ক রিপোর্টিংয়ে বিশেষজ্ঞ হয়ে ওঠা অগ্রজ সাংবাদিকদের মুখে শুনেছিলাম নানা চাঞ্চল্যকর কাহিনী। নানা পরিকল্পনা ও যুদ্ধ কৌশলে দক্ষ জঙ্গীরা ঘটনার কয়েক ধাপ পর্যন্ত নিজেরাই সম্পৃক্ত থাকে।

সংশ্লিষ্ট সাংবাদিকরা উদাহরণ দিয়ে জানান, কোথায়ও জঙ্গীদের শক্তিশালী বোমা হামলায় হয়তো ১০ জন ঘটনাস্থলেই মারা গেলেন, আহত হলেন অপর ৩০ জন। দ্বিতীয় ধাপে আহতদের নিয়ে হাসপাতালে দিকে রওনা দেয়া এ্যাম্বুলেন্সগুলোকে পথে আটকে আগুনে পুড়িয়ে দিবে আরেক গ্রুপ। বিভিন্ন পথে কিছু আহতকে নিয়ে হাসপাতালে হয়তো পৌঁছানো হলো। কিন্তু তাদের চিকিৎসা শুরু হতে না হতে তৃতীয় গ্রুপটি হাসপাতালেই বোমা হামলা চালিয়ে বাকিদের মৃত্যু নিশ্চিত করে ফেলবে।

শিক্ষার্থীদের আন্দোলন চলাকালে সংঘটিত বেশ কয়েকটি নাশকতার কথা সবাই জানি। কিন্তু শিক্ষার্থীরা আন্দোলন ছাড়ার ২৪ ঘণ্টা পর পুলিশের সোয়াত টিমের সদস্যরা যা ঘটিয়েছে তাতো জঙ্গীদের কয়েক ধাপের ভয়াবহতার বিষয়টি বারবার মনে করিয়ে দিচ্ছে। সেখানে মাত্র দুই ঘন্টার ব্যবধানে ছয় জন পথচারী নিহত হওয়ার ঘটনা ঘটে।

বারিধারা বসুন্ধরা গেটে ২০ জুলাই কারফিউ ভঙ্গ করে সন্ধ্যা অবধি শিক্ষার্থী জমায়েত চলে। আন্দোলনের পরবর্তী কোনো কর্মসূচি না জানিয়েই শিক্ষার্থীরা রাত ৯ টার মধ্যে স্থানটি ছেড়ে চলে যায়। পরদিন ২১ জুলাই দুপুর পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের কোনো তৎপরতা ছিল না। তবে দুপুর একটার পর ভাটারার দিক থেকে পুলিশ ভ্যানে থাকা সোয়াত টিমের সদস্যরা নির্বিচারে গুলি চালাতে চালাতে বসুন্ধরা গেট এলাকায় আসে। সেখানে গাড়ি থেকে নেমেও তারা দুই পাশের ফুটপাতে পথচারীদের দিকে অস্ত্র উঁচিয়ে শতাধিক রাউন্ড গুলি চালায়। এতে ওভারব্রিজের অদূরেই ফুটপাতে গুলিবিদ্ধ হয়ে আনুমানিক ৫০ বছর বয়সী এক ব্যক্তি ঘটনাস্থলেই মারা যান।

এরপর পুলিশ দলটি বসুন্ধরা গেট থেকে কুটুর গলি পর্যন্ত ২০০ গজ দীর্ঘ রাস্তায় বাজার, দোকানপাট, ফুটপাত লক্ষ্য করে মুহুর্মুহু গুলি চালাতে থাকে। একপর্যায়ে অপ্রশস্ত কুটুর গলিতে ঢুকেও দুই পাশের ঘনঘিঞ্জি বাসা, বাড়ি, বস্তি সাদৃশ্য ঘরগুলোর দিকে আরো প্রায় ৫০ রাউন্ড গুলি ছুঁড়ে পুলিশ দলটি আজিজ রোডের দিকে চলে যায়। এরপর সন্ধ্যা পর্যন্ত আজিজ রোড, হারেজ রোড, মসজিদ রোড, জে ব্লকের অলিগলি এবং প্রগতি সরণির দুই কিলোমিটার রাস্তা জুড়ে পুলিশের বৃষ্টির মতো গুলিবর্ষণ ছিল নজিরবিহীন।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, জে ব্লকের গির্জা গেট থেকে যমুনার গেট পর্যন্ত প্রগতি সরণির দুই কিলোমিটার রাস্তা ও আশপাশের গলিতে অন্তত ৫০০ রাউন্ড গুলি ছোঁড়া হয়েছে। টার্গেট ছিল রাস্তা ও ফুটপাতের পথচারী, সাধারণ মানুষ। সন্ধ্যার সময়ই আচমকা সোয়াত সদস্যরা আবারও গুলি চালাতে চালাতেই ঢুকে পড়ে ঘনবসতিপূর্ণ আজিজ রোডে। গলির মোড়েই গুলিতে মারা যায় মাছ ব্যবসায়ি আমজাদ (৪৫) নামে একজন। তার লাশ ময়নাতদন্ত ছাড়াই ছোট ভাই ইনতাজুর রহমানের কাছে হস্তান্তর করেছে পুলিশ। মাথায় গুলিবিদ্ধ অবস্থায় মৃত্যু যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছে বেলাল নামে এক শ্রমিক। এসময় গলির দুই’শ গজ ভিতরে মসজিদের সামনে পাশাপাশি চার জন পথচারী গুলিবিদ্ধ হন এবং ঘটনাস্থলেই তারা মারা যান। ভয়ানক আতঙ্কে গোটা এলাকার রাস্তা, গলি জনশূন্য হয়ে পড়ে।

চার লাশ ফেলা গাড়িটি ফেরার সময় এক সবজি বিক্রেতা জোড় হাত তুলে জানতে চান, স্যার লাশগুলো কি করবো? ভ্যানের সামনের আসনে থাকা এক কর্মকর্তা তাকে বলেন, সিটি কর্পোরেশনের ময়লার গাড়িতে লাশ ফেলে দিও। অবশ্য ঘন্টা দেড়েক পর আজিজ রোডস্থ সোসাইটির কর্মকর্তারা ভ্যানে তুলে লাশ চারটি নিয়ে যায় বলে খবর পাওয়া গেছে। কোনো লাশের ময়নাতদন্ত হয়নি। অভিন্ন স্টাইলেই লাশ পড়েছে গুলশানের শাহজাদপুরসহ মিরপুরের বিভিন্ন এলাকাতেও।

নির্বিচারে সাধারণ পথচারী, দোকানপাট লক্ষ্য করে শত শত রাউন্ড গুলিবর্ষণ, একই এলাকায় দুই ঘণ্টার ব্যবধানে ছয় জন খেটে খাওয়া মানুষ হত্যা, লাশ না নিয়ে উন্মুক্ত প্রদর্শনীর মাধ্যমে ভীতসন্ত্রস্ত করে তোলা নিয়ে নানা প্রশ্ন উঠেছে। পুলিশের বিশেষায়িত বাহিনীটির এ আচরণ কি কারফিউ ভঙ্গের শাস্তি, নাকি সর্ব সাধারণের মাঝে সরকার বিরোধী অসন্তোষ সৃষ্টি? নাকি জঙ্গীদের সিরিজ নাশকতা ঠেকাতে পাল্টা পুলিশি তান্ডব?

যদি বলা হয়, কারফিউ ভঙ্গের বিরুদ্ধে পুলিশ কঠোর ভূমিকা নিয়েছে, তাহলে কারফিউ জারির প্রথম দিন (২০ জুলাই) পুলিশ কোথায় ছিল? সেদিন সকাল থেকে রাত ৯ টা পর্যন্ত প্রধান সড়কে ব্যারিকেড দিয়ে কারফিউ ভঙ্গ করে প্রকাশ্য ছাত্র জমায়েত হয়েছে, কিন্তু পুলিশের কোনো সদস্য ভুলেও সেখানে যাননি কেন? কারফিউর মর্যাদা রক্ষায় কেন তারা ভূমিকা নেননি? পরদিন শত শত রাউন্ড গুলিবর্ষণকারীরা তো পুলিশই ছিল, নাকি অন্য কেউ?

লেখক: সিনিয়র সাংবাদিক

মন্তব্য করুন

Radhuni
  • অন্যান্য এর পাঠক প্রিয়
আরও পড়ুন
যে কারণে পল্লী বিদ্যুতের সব স্থাপনায় নিরাপত্তা জোরদার
সচিবালয়ে নাশকতা: কারাগারে শতাধিক আনসার
ডা. দীপু মনি ও তার ভাইয়ের নামে নাশকতা মামলা
নাশকতার বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে হবে: লে. কর্নেল নাহিদ