হলে ফিরছেন ঢাবি শিক্ষার্থীরা
শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) সব আবাসিক হল খুলে দেওয়া হয়েছে।
মঙ্গলবার (৬ আগস্ট) দুপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সভায় বিশ্ববিদ্যালয় খোলার ঘোষণা দেওয়ার পর সন্ধ্যা থেকেই হলে আসতে শুরু করেন শিক্ষার্থীরা।
বুধবার (৭ আগস্ট) দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন হল ঘুরে দেখা যায়, জিয়াউর রহমান হল, মুহসীন হল, সূর্যসেন হলে, বিজয় ৭১, জিয়া হল, বঙ্গবন্ধু হল, জসিমউদদীন, রোকেয়া হলসহ সব হলেই শিক্ষার্থী রয়েছে।
তারা জানান, বহুদিন পর একটি স্বাধীন ক্যাম্পাস পেয়েছি। এখন আর কেউ আমাদের নির্যাতন করতে পারবে না। কথা বলার স্বাধীনতা হরণ করতে পারবে না। জোর করে মিছিল-মিটিংয়ে নিয়ে যাবে না।
ইসলামের স্টাডিস বিভাগের শিক্ষার্থী তোফায়েল জানান, সরকার পতনের কথা শুনে সোমবার কুমিল্লা থেকে ঢাকায় চলে আসি। রাতেই হলে ওঠতে পেরেছি। আমরা নতুন করে কনো রাজনৈতিক দলের অধীনে থাকতে চাই না।
সমাজবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী শরিফুল ইসলাম বলেন, অবশেষে স্বৈরাচারের হাত থেকে বাংলাদেশের মুক্তি মিলেছে। আমরাও হলে ফিরে আসতে পেরেছি।
এদিকে, ঢাবি খোলার পর আবাসিক হল ও হোস্টেলগুলোয় শিক্ষার্থী ওঠানোর বিষয়ে নতুন নির্দেশনা দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
ঢাবির ওয়েবসাইটে প্রকাশিত নির্দেশনায় বলা হয়, বিশ্ববিদ্যালয় খোলার সিদ্ধান্তের প্রেক্ষিতে পর্যায়ক্রমে শিক্ষার্থীদের আবাসিক হল ও হোস্টেলে ওঠানো হবে।
মেয়াদোত্তীর্ণ অথবা নানা কারণে ছাত্রত্ব নেই মাস্টার্স চূড়ান্ত পরীক্ষা শেষ করেছে অথবা স্নাতক সম্মান পাস করেছে কিন্তু নিয়মিত ব্যাচের সঙ্গে মাস্টার্সে ভর্তি হননি এমন শিক্ষার্থী হলে বা হোস্টেলে উঠতে পারবে না। এসব শিক্ষার্থীদের জিনিসপত্র যদি হলে বা হোস্টেলে থাকে তাহলে হল বা হোস্টেলের সব পাওনা পরিশোধ করে বিশ্ববিদ্যালয় ঘোষিত নির্ধারিত তারিখের মধ্য দিয়ে যেতে হবে। তা না হলে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ তাদের কক্ষ থেকে জিনিসপত্র সরিয়ে নেবে। এসব জিনিসের দায় সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ নেবে না।
নির্দেশনা অনুসারে, হল বা হোস্টেলে থাকা সব আবাসিক ও দ্বৈতাবাসিক শিক্ষার্থী ঢাবি ওয়েবসাইটে তাদের নিজ নিজ ড্যাশবোর্ডে নির্ধারিত ফরম পূরণ করবে। হলে বা হোস্টেলে ওঠার দিন ওই পূরণ করা ফরমের কপি, হলের হালনাগাদ আইডি কার্ড অথবা ভর্তির হালনাগাদ পে-স্লিপ ও প্রযোজ্য ক্ষেত্রে হল বা হোস্টেলের নির্ধারিত ফি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে জমা দিয়ে হল বা হোস্টেলে ওঠার প্রক্রিয়া শেষ করবে।
ঢাবির নির্দেশনায় আবাসিক হল বা হোস্টেলের আসন বণ্টনের নীতিমালায় বলা হয়েছে, হলে বা হোস্টেলে সংযুক্ত নিয়মিত শিক্ষার্থীরা আবাসিক হওয়ার জন্য আবেদন করতে পারবে। তবে ঢাকা শহরসহ যেসব জায়গায় শিক্ষার্থীদের যাতায়াতের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়মিত পরিবহন সুবিধা আছে সে সব জায়গায় থাকা শিক্ষার্থীরা হলে ও হোস্টেলে আবাসিক হওয়ার জন্য আবেদন করতে পারবে না।
এমফিল, পিএইচডি বা সমমানের ডিগ্রি ও নিয়মিত মাস্টার্স প্রোগ্রামে ভর্তি পরীক্ষার মাধ্যমে নতুন করে ভর্তি হওয়া, প্রফেশনাল মাস্টার্স, ইভনিং মাস্টার্স, ডিপ্লোমা ও সার্টিফিকেট কোর্সের শিক্ষার্থীদের হলে বা হোস্টেলে আসন বরাদ্দ হবে না। তবে স্বতন্ত্র নীতিমালার ভিত্তিতে শুধু এমফিল ও পিএইচডির নারী গবেষকদের নবাব ফয়জুন্নেসা চৌধুরানী ছাত্রীনিবাসে আসন বরাদ্দ দেওয়া হবে।
মন্তব্য করুন