মাংকিপক্সকে ‘বৈশ্বিক জরুরি স্বাস্থ্য অবস্থা’ ঘোষণা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার
আফ্রিকার কয়েকটি দেশে মারাত্মভাবে ছড়িয়ে পড়েছে মাংকিপক্স বা এমপক্সের প্রাদুর্ভাব। ফলে রোগটিকে ‘বৈশ্বিক জরুরি স্বাস্থ্য অবস্থা’ বা পিএইচইআইসি ঘোষণা করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)।
বুধবার (১৪ আগস্ট) একটি জরুরি কমিটির সঙ্গে আলোচনা করে এই ঘোষণা দেন সংস্থাটি। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি এক প্রতিবেদনে তথ্যটি জানিয়েছে। এ নিয়ে দুই বছরের মধ্যে দ্বিতীয়বারের মতো এমপক্সকে বৈশ্বিক জরুরি স্বাস্থ্য অবস্থা ঘোষণা করলে ডব্লিউএইচও।
পিএইচইআইসি অবস্থা হলো বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সর্বোচ্চ স্তরের সতর্কতা। কোনো একটি রোগকে নিয়ন্ত্রণের জন্য গবেষণা, তহবিল ও বিশ্বব্যাপী জনস্বাস্থ্য পদক্ষেপে গতি আনার জন্য এই সতর্কতা জারি করা হয়।
এর আগে, মাংকিপক্স হিসেবে পরিচিত এই রোগের প্রাথমিক প্রাদুর্ভাব চলাকালে ডেমোক্র্যাটিক রিপাবলিক অব কঙ্গোতে (ডিআরসি) মারা যান অন্তত ৪৫০ জন। ডিআর কঙ্গোর পর এখন মধ্য ও পূর্ব আফ্রিকার বিভিন্ন অংশে ছড়িয়ে পড়েছে রোগটি। এমপক্স সংক্রমণে উচ্চমৃত্যুহারের ঝুঁকি রয়েছে বলে জানা গেছে। তাই এটি দ্রুত ছড়িয়ে পড়ায় উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছেন বিজ্ঞানীরা।
এ প্রসঙ্গে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রধান টেড্রোস আডানম গেব্রিয়াসিস বলেন, এই প্রাদুর্ভাব প্রতিরোধ ও জীবন রক্ষার করতে একটি সমন্বিত আন্তর্জাতিক উদ্যোগ প্রয়োজন।
ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, এমপক্স আক্রান্ত ব্যক্তির সঙ্গে যৌন সম্পর্ক, স্পর্শ ও অপর ব্যক্তির খুব কাছে গিয়ে কথা বলা বা নিশ্বাস নেওয়ার মতো ঘনিষ্ঠ সংস্পর্শের মাধ্যমে ছড়ায়। এই রোগের সংক্রমণে মানুষের শরীরে জ্বরের মতো লক্ষণ দেখা দেয় ও চামড়ায় ক্ষত তৈরি হয়। এতে মৃত্যুও হতে পারে। এই রোগে আক্রান্ত প্রতি ১০০ জনের মধ্যে অন্তত চারজনের মৃত্যু হয়।
ভ্যাকসিনের মাধ্যমে এমপক্সের সংক্রমণ প্রতিরোধ করে এর প্রাদুর্ভাব নিয়ন্ত্রণ করা যেতে পারে। তবে এগুলো শুধু ঝুঁকিপূর্ণ ব্যক্তিদের জন্য বা যারা সংক্রামিত ব্যক্তির সঙ্গে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ করেন তাদের জন্য।
এমপক্সের দুইটি ধরন রয়েছে ক্লেইড-১ ও ক্লেইড-২।
এর আগে, ২০২২ সালে ক্লেইড ২ এর তুলনামূলক মৃদু সংক্রমণ চলাকালে জনস্বাস্থ্যের জন্য জরুরি অবস্থা ঘোষণা করা হয়েছিল। তবে এবারের ধরনটি আরও বেশি প্রাণঘাতী। এবার ক্লেইড ১ এর প্রাদুর্ভাব শুরু হয়েছে। তাই এমপক্সের নতুন এই ধরনটিকে ‘এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বিপজ্জন’বলে অভিহিত করেছেন এক বিজ্ঞানী।
মন্তব্য করুন