শ্রীকৃষ্ণ ধরাধামে আসেন শান্তির বার্তা নিয়ে
জন্মাষ্টমী হলো ভগবান শ্রীকৃষ্ণের শুভ জন্মতিথি। ভাদ্র মাসের কৃষ্ণপক্ষের অষ্টমী তিথিতে রোহিণী নক্ষত্রযোগে ভগবান শ্রীকৃষ্ণ মধুরায় কংসের কারাগারে মাতা দেবকীর অষ্টম সন্তান হিসেবে জন্মগ্রহণ করেন। তার এই জন্মদিনকে জন্মাষ্টমী বলা হয়। সনাতন ধর্বাবলম্বীরা দিনটিকে বিভিন্ন আনন্দ-উৎসবের মধ্যে দিয়ে পালন করে থাকেন।
সনাতন ধর্ম অনুযায়ী, যখনই পৃথিবীতে অধর্ম বেড়ে গিয়ে ধার্মিক ও সাধারণের জীবন দুর্বিষহ হয়ে ওঠে, তখনই দুষ্টের দমন ও শিষ্টের পালনের মাধ্যমে ধর্মের রক্ষার জন্য ভগবান শ্রীকৃষ্ণ অবতাররূপে ধরায় নেমে আসেন।
হিন্দু পঞ্জিকা মতে, সৌর ভাদ্র মাসের কৃষ্ণপক্ষের অষ্টমী তিথিতে যখন রোহিণী নক্ষত্রের প্রাধান্য হয়, তখন পালিত হয় এ জন্মাষ্টমী। উৎসবটি গ্রেগরিয়ান ক্যালেন্ডার অনুসারে, প্রতি বছর মধ্য আগস্ট থেকে মধ্য সেপ্টেম্বরের মধ্যে কোনো এক সময়ে পড়ে।
জানা যায়, খ্রিষ্টপূর্ব ৩ হাজার ২২৮ অব্দে শ্রীকৃষ্ণ জন্মগ্রহণ করেন, তবে তার জন্মতিথি নিয়ে মতান্তরও আছে। মতান্তর যাই থাক না কেন, শ্রীকৃষ্ণের জন্ম তার ভক্তদের কাছে ‘জন্মাষ্টমী’ নামে যুগ যুগ ধরে বিশ্বব্যাপী পালিত হয়ে আসছে।
পৌরাণিক কাহিনিমতে, দ্বাপর যুগে ভাদ্র মাসের কৃষ্ণপক্ষের অষ্টমী তিথির রোহিণী নক্ষত্রে বাসুদেব-দেবকীর কোলে কংসের কারাগারে জন্মগ্রহণ করেন শ্রীকৃষ্ণ। অষ্টমী তিথিতে দেবকীর অষ্টম গর্ভে আবির্ভূত হয়েছিলেন বলে এই জন্মতিথির নাম জন্মাষ্টমী তিথি। শ্রীকৃষ্ণ কংসের কারাগারে যখন আবির্ভূত হয়েছিলেন তখন দুরাচারী কংসের অত্যাচারে অতিষ্ঠ সবাই। পৃথিবী থেকে দুরাচারী দুষ্টদের দমন আর সজ্জনদের রক্ষার জন্যই তাদের মহাবতার এই দিনে পৃথিবীতে আগমন করেছিলেন। পাশবিক শক্তি যখন সত্য, সুন্দর ও পবিত্রতাকে গ্রাস করতে উদ্যত হয়েছিল, তখন সেই অসুন্দরকে দমন করে জাতিকে রক্ষা এবং শুভশক্তিকে প্রতিষ্ঠার জন্য ভগবান শ্রীকৃষ্ণের আবির্ভাব ঘটে।
শ্রীমদ্ভগবতগীতায় বলা হয়, যে যেভাবে আমায় আরাধনা করে, আমি সেইভাবে তাকে কৃপা করি। এ বিশ্বাসেই মহাকাল ও মহাজগৎ ব্যাপ্ত শ্রীকৃষ্ণের আরাধনায় মত্ত বিশ্বের সনাতন ধর্মাবলম্বীরা।
মন্তব্য করুন