উপদেষ্টারা সাহস দেখান, দৃষ্টান্ত সৃষ্টি করুন
আর্থিক খাতের লুটপাট, সরকারি সম্পদ তছরুপের বেসামাল কাণ্ডে যুক্তদের বিরুদ্ধে এ মুহূর্তেই কঠোর ব্যবস্থা দরকার। শুধু আইনি বেড়াজালে তাদের ঘোরানো ফেরানোর দৃশ্যপট দেখতে চাই না, দীর্ঘসূত্রিতার বিচার ব্যবস্থার আগেই তাদের অর্থ সম্পদ রাষ্ট্রের অনুকূলে না হোক, বিচারে কেউ দোষমুক্ত হলে তখন তাদের পাওনা বুঝিয়ে দেওয়া যেতে পারে। রাষ্ট্রীয় সম্পদ লুটপাটের টাকায় তারা আয়েশ করবেন, আইনি লড়াই চালাবেন, সুযোগে বাকি টাকাও বিদেশে পাচার করবেন- তা হবে না, তা হবে না। এগুলো না করে নানা প্রক্রিয়া খুঁজে সময় হারালে আপনাদেরও জাতি ক্ষমা করবে না।
১. দেশের ২০০০ পুলিশ অফিসারের অর্থবিত্তের পরিমাণ আড়াই লাখ কোটি টাকা। এরমধ্যে বিদেশে পাচার হয়েছে এক লাখ কোটি টাকা। দেশে থাকা তাদের স্থাবর, অস্থাবর, নামে বেনামের সকল সম্পদ সরকারের অনুকূলে জব্দ করা হোক।
২. এই দেশের চালিকা শক্তি বলে গর্ব করা গার্মেন্টস মালিকদের মধ্যে ৮০০ জন কাঁচা পণ্য সামগ্রী আমদানির নামে গত এক যুগেরও বেশি সময় ধরে বিভিন্ন জনের হাজার হাজার কোটি টাকা বিদেশে পাচারের অপকর্ম চালিয়ে আসছেন।
গত দুই বছরে নিজেদের উৎপাদিত পণ্য পাঠিয়ে তার মূল্য বাবদ ৫০ হাজার কোটি টাকা তারা দেশেও আনেননি। এসব গার্মেন্ট মালিকের এদেশে থাকা মিলকারখানা, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, বাড়ি, জমি সবকিছু নিলামে তোলা হোক।
৩. বিশ কোটি টাকার ঊর্ধ্বে ব্যাংক ঋণ খেলাপির সংখ্যা ৬ হাজার জনের বেশি। তারা আটকে রেখেছেন এক লাখ বিরাশি হাজার কোটি টাকা। অথচ তাদের অন্যান্য শিল্প বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান লাভজনক ভাবে সচল রয়েছে। ঋণ খেলাপিদের সেসব প্রতিষ্ঠান জব্দের মাধ্যমে ব্যাংকের টাকা আদায় করে নেয়া হোক।
৪. দেশের ৩০ হাজার কোটিপতির মধ্যে ২২ হাজার কোটিপতির আয়ের বৈধ উৎস নেই। তারা দলীয় প্রভাব খাটিয়ে দখলবাজি, চাঁদাবাজি, তদবিরবাজির মাধ্যমে রাতারাতি কোটি কোটি টাকার মালিক বনেছেন। ট্যাক্স পরিশোধিত বৈধ আয় ব্যতীত তাদের বাকি সম্পদ সরকারিভাবে জব্দ করে নিলামে তোলা হোক।
৫. বিগত বিশ বছরের সকল মন্ত্রী, এমপিদের সহায় সম্পদের পূর্ণাঙ্গ অনুসন্ধান করে দেখা হোক।
৬. গত দেড় দশকে দুদক যাদের দুর্নীতির অভিযোগ থেকে ছাড়পত্র (দায়মুক্তি) দিয়েছে তারাই দেশের বড় লুটেরা। দায়মুক্তদের বিরুদ্ধে সাড়ে তিন লাখ কোটি টাকা লুটপাট ও সরকারি সম্পদ তছরুপের অভিযোগ রয়েছে।
লেখক: সিনিয়র সাংবাদিক
মন্তব্য করুন