ছাত্রলীগ নিষিদ্ধ হওয়ায় নোবিপ্রবিতে আনন্দমিছিল
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের নির্দেশে আওয়ামী লীগের ভ্রাতৃপ্রতীম ছাত্রসংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধের ঘোষণায় আনন্দ মিছিল করছে নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (নোবিপ্রবি) শিক্ষার্থীরা।
বুধবার (২৩ অক্টোবর) রাত সাড়ে ৯টার দিকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগ থেকে একটি প্রজ্ঞাপন জারির মাধ্যমে ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধের খবর প্রকাশিত হলে বিশ্ববিদ্যালয়ের সালাম হলের সামনে থেকে রাত ১১টার দিকে মিছিল বের করেন শিক্ষার্থীরা। এ সময় মিছিলটি ভাষা শহীদ আবদুস সালাম হল থেকে শুরু হয়ে বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুল মালেক মালেক হল ঘুরে পুনরায় সালাম হলের সামনে এসে শেষ হয়।
এ সময় শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন ধরনের স্লোগান দিতে থাকে ‘এই মুহূর্তে খবর এল—ছাত্রলীগ নিষিদ্ধ হলো’, ছাত্রলীগের ঠিকানা, এই ক্যাম্পাসে হবে না, 'নাইম শুভ'র ঠিকানা, এই ক্যাম্পাসে হবে না 'ছাত্রলীগ জঙ্গি, খুনি হাসিনার সঙ্গী, একটু আগে খবর এলো টোকাই লীগ নিষিদ্ধ হলো ইত্যাদি।
এর আগে গতকাল কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধসহ পাঁচ দফা দাবি তুলে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। অবশেষে তাদের একটা দাবি পূরণ করল অন্তর্বর্তী সরকার। তারই প্রেক্ষিতে আনন্দ মিছিল করে নোবিপ্রবি শিক্ষার্থীরা।
তারা বলেন, ছাত্রলীগ একটি “জঙ্গি” সংগঠন। এমন কোনো হীন কর্মকাণ্ড নেই, যা তারা করেনি। আমাদের দাবি ছিল, সরকার প্রজ্ঞাপন জারি করেছে, শিক্ষার্থীদের প্রাণের দাবি মেনে নেওয়ায় সরকারের প্রতি কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করছি।
এর আগে বুধবার রাত ৯টার দিকে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ভাতৃপ্রতীম সংগঠন ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধ করে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। সিনিয়র সচিব ড. মোহাম্মদ আবদুল মোমেন স্বাক্ষরিত প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে বিষয়টি জানা গেছে।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, বাংলাদেশের স্বাধীনতা-পরবর্তী বিভিন্ন সময়ে বিশেষ করে গত ১৫ বছরের স্বৈরাচারী শাসনামলে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগ হত্যা, নির্যাতন, গণরুমকেন্দ্রিক নিপীড়ন, ছাত্রাবাসে সিট বাণিজ্য, টেন্ডারবাজি, ধর্ষণ ও যৌন নিপীড়নসহ নানা ধরনের জননিরাপত্তা বিঘ্নকারী কর্মকাণ্ডে জড়িত ছিল এবং এ সম্পর্কিত প্রামাণ্য তথ্য দেশের সব প্রধান গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে এবং কিছু সন্ত্রাসী ঘটনায় সংগঠনটির নেতাকর্মীদের অপরাধ আদালতেও প্রমাণিত হয়েছে।
এতে আরও উল্লেখ করা হয়, গত ১৫ জুলাই থেকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা আন্দোলনরত ছাত্র-ছাত্রী ও সাধারণ জনগণকে উন্মত্ত ও বেপরোয়া সশস্ত্র আক্রমণ করে শতশত নিরপরাধ শিক্ষার্থী ও ব্যক্তিকে হত্যা করেছে এবং আরও অসংখ্য মানুষের জীবন বিপন্ন করেছে। সরকারের কাছে যথেষ্ট তথ্য-প্রমাণ রয়েছে যে, গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পরও বাংলাদেশ ছাত্রলীগ রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রমূলক, ধ্বংসাত্মক ও উসকানিমূলক কর্মকাণ্ড এবং বিভিন্ন সন্ত্রাসী কাজে জড়িত আছে।
এই অবস্থায় সরকার 'সন্ত্রাস বিরোধী আইন, ২০০৯' এর ধারা ১৮ এর উপ-ধারা (১) এ প্রদত্ত ক্ষমতাবলে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠন 'বাংলাদেশ ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করল এবং ওই আইনের তফসিল-২ এ 'বাংলাদেশ ছাত্রলীগ' নামীয় ছাত্র সংগঠনকে নিষিদ্ধ সত্ত্বা হিসেবে তালিকাভুক্ত করল বলে প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়। এ আদেশ অবিলম্বে কার্যকর হবে বলে প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়।
আরটিভি/এফআই
মন্তব্য করুন