জুয়ার বিজ্ঞাপনে ডিপফেকের শিকার ড. ইউনূস ও শাকিব খান!
একুশ শতকের দ্বিতীয় যুগকে বলা হচ্ছে প্রযুক্তির যুগ। প্রযুক্তি যেমন মানুষের উপকার করছে, তেমনি কিছু প্রযুক্তি মানুষের চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এর মধ্যে অন্যতম একটি প্রযুক্তি হলো ডিপফেক প্রযুক্তি বা ডিপফেক ইন্টেলিজেন্সি। আর এই কৃত্তিম বুদ্ধিমত্তা ব্যবহার করে অপপ্রচারের শিকার অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মো. ইউনুস। কয়েকদিন থেকেই সামাজিকমাধ্যমে তার একটি ডিপফেক ভিডিও দেখা যাচ্ছে।
ছড়িয়ে পড়া সেই ভিডিওতে জুয়ার সাইটে বলতে শোনা যায়, আমি আপনাদের জন্য একটি নতুন অ্যাপ্লিকেশন তৈরি করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি, ক্রেজি টাইম একটি নিরাপদ, যা সহজ নিবন্ধনের জন্য কাজ করে। প্রথম দিনেই মাত্র ৫ টাকা বিনিয়োগ করে আপনি এক লাখ টাকা পর্যন্ত আয় করতে পারেন।
উদ্বেগের বিষয় হলো সাধারষত ডিপফেক ভিডিওগুলো অনেক সময় খালি চোখেও দেখে শনাক্ত করা যায় কিন্ত এই ভিডিওতে প্রযুক্তিকে এমনভাবে ব্যবহার করা হয়েছে, আপাতদৃষ্টিতে বোঝা মুশকিল যে ভিডিওটি নকল।
এদিকে, ইনফোসেক বুলেটিনের প্রতিবেদন বলছে, বাংলাদেশের দর্শকপ্রিয় নায়ক শাকিব খানেরও একটি ডিপফেক ভিডিও সামাজিকমাধ্যমে ছড়িয়েছে। যেখানে তাকে ক্রেজি টাইম গেইম খেলতে আহ্বান করতে দেখা গেছে। বিষয়টি নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে ফ্যাক্টচেকিং সংস্থা ডিসমিসল্যাব। বাংলাদেশের প্রচলিত আইনে জুয়ার বিজ্ঞাপন প্রচার নিষিদ্ধ।
এ ছাড়া মেটার পলিসি বলছে, যেসব দেশের আইনে জুয়া নিষিদ্ধ, সেসব দেশে বিজ্ঞাপন চালাবে না মেটা। কিন্তু মেটার অ্যাড রিভিউ সিস্টেমের দূর্বলতাকে ব্যবহার করে দেদারছে চলছে এসব বিজ্ঞাপন। গত সেপ্টেম্বর থেকে এমন ৯ টি ভিডিও সনাক্ত করেছে ডিসমিসল্যাব নামের একটি প্রতিষ্ঠান।
ডিসমিল্যাবের গবেষণা বিভাগের প্রধান মিনহাজ আমান বলেন, এবারের ভিডিওর ক্ষেত্রে কেবল অডিওই নয়, ভিডিও ব্যবহার করা হয়েছে। আমরা মনে করি আগের ভিডিওর থেকেও অত্যন্ত সুনিপুন। এসব বিজ্ঞাপন ছড়িয়ে দেওয়ার জন্য আমরা আরও ১৩০ টি সাইট পাই, এর অর্থ কেউ এর পেছনে অর্থ যোগাচ্ছে। এই জাতীয় প্রচার বেশিরভাগ দেশের বাইরে চলে যায়। আমার আগের অভিজ্ঞতা থেকে, আমি বলতে চাই যে এই জাতীয় বিজ্ঞাপন প্রচার ভিয়েতনাম এবং কম্বোডিয়া থেকে পরিচালিত হতে পারে।
তথ্য প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞরা বলছেন, যতই দিন যাচ্ছে ততই আর্টিফিসিয়াল ইন্টেলিজেন্স (এআই) এর দৌরাত্ব বাড়ছে। এর শিকার হচ্ছে রাজনীতিবিদ, খেলোয়ার, গ্ল্যামার জগতসহ অনেকেই।
এসব ডিপফেক ভিডিও চিনতে অঙ্গভঙ্গি, লিপসিং বা কথা বলার সাথে ঠোঁটের মিল এবং ভিডিওটির প্রেক্ষাপটের দিকে নজর দেওয়া যেতে পারে।
আরটিভি/এএ-টি
মন্তব্য করুন