তুরস্কের নারী বেলুন পাইলট ওজদেম
তুরস্কের কাপাডোকিয়ায় হট এয়ার বেলুনে চড়া পর্যটকদের কাছে অন্যতম আকর্ষণীয় এক বিষয়। ১০ বছর ধরে এমন বেলুনের পাইলট হিসেবে কাজ করছেন মেলতেম ওজদেম। তরুণীদের কাছে তিনি এখন একজন রোল মডেল।
প্রতিদিন সকালে সূর্য ওঠার আগে কাপাডোকিয়ার পাহাড়গুলো পর্যটকদের কোলাহলে পূর্ণ থাকে। কয়েক ডজন রঙিন বেলুন ধীরে ধীরে ফুলতে থাকে। আর তখনই মেলতেম ওজদেমের কাজ শুরু হয়। তুরস্কে হট এয়ার বেলুন পাইলট হিসেবে কাজ করা গুটিকয়েক নারীর একজন তিনি। যখন দিনের প্রথম সূর্যের রশ্মিগুলো দেখা যায়, তখন কাপাডোকিয়ার আকাশে এক অপূর্ব সুন্দর দৃশ্য তৈরি হয়। মেলতেম ওজদেম তার বেলুনকে অদ্ভুত পাহাড়গুলোর উপর দিয়ে উড়িয়ে নিয়ে যান। এই সময় রেডিও সাহায্যে তিনি কন্ট্রোল সেন্টারের সঙ্গে যোগাযোগ রাখেন।
১০ বছরের বেশি সময় ধরে তিনি বেলুন পাইলট হিসেবে কাজ করছেন। তিনি কখনো বিপদে পড়েননি বলে জানান। ওজদেমের জীবনের পুরোটা জুড়ে এখন বেলুন। প্রায়ই তিনি স্থানীয় বেলুন ওয়ার্কশপে ঢুঁ মেরে তার অর্ডার করা বেলুনের রং আর প্যাটার্ন দেখেন। পূর্ব-মধ্য আনাতোলিয়ার অন্য নারীদের কাছে রোল মডেলও হয়ে উঠতে চান তিনি।
ওজদেম বলেন, আমরা গৃহিণীদের অন্তত কয়েক ঘণ্টা এখানে কাজ করানোর চেষ্টা করি। এভাবে তারা সংসারেও কিছু অর্থের সংস্থান করতে পারেন। এছাড়া তাদের ব্যক্তিগত উন্নয়নেও কাজে লাগাতে পারে।
কাজের প্রতি ওজদেমের ভালোবাসা ও অভিজ্ঞতার ভালো মূল্যায়ন করেন তার পুরুষ সহকর্মীরা। বর্তমানে নারী বেলুন পাইলট ছাড়া কাপাডোকিয়ার পর্যটন খাতের কথা ভাবাই যায় না।
হট এয়ার বেলুন প্রস্ততকারক মেহমেত হালিস আয়দোয়ান বলেন, বেলুন পাইলটদের ধৈর্য এবং সহানুভূতি থাকা দরকার। কারণ, আমাদের পর্যটকদের নিয়ে কাজ করতে হয়, যাদের অনেক প্রশ্ন থাকে। এই জায়গায় মেলতেমের মতো নারীরা আমাদের চেয়ে এগিয়ে আছেন। পর্যটকেরা তার বেলুনে চড়ে খুব খুশি হন।
ওজদেম যখন তার শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কাজ করেন তখনও অনেক ধৈর্যের প্রয়োজন হয়। তিনি তুরস্ক ও বাইরের দেশ থেকে আসা শিক্ষার্থীদের বেলুন পাইলটিং করা শেখান। কয়েকজনের শুরুটা বেশ টলমল হয়ে থাকে। দিনের কাজ শেষেও তিনি পরবর্তী প্রজন্মকে সময় দেন৷ কারণ, অনেক তরুণের কাছে তিনি একজন রোল মডেল।
এক তরুণী বললেন, তিনি আমাদের নারীদের জন্য গর্ব৷ তার সমর্থনের কারণে আমি আমার বেলুন পাইলট হওয়ার স্বপ্ন পূরণ করতে পারছি।
ওজদেম বলেন, যখন আমি তাদের বড় ঝুড়িসহ বেলুন ওড়াতে দেখি এবং যখন তারা উপর থেকে আমার দিকে হাতে নাড়ে তখন আমার খুব ভালো লাগে, গর্ব হয়।
ওজদেমের সহায়তা নিয়ে ভবিষ্যতে আরও অনেক নারী কাপাডোকিয়ার আকাশে উড়ে বেড়াবে বলে আশা করা যায়।
আরটিভি/এএইচ
মন্তব্য করুন