বইমেলায় ফরিদুল ইসলাম নির্জনের উপন্যাস ‘আগুনজনম’
এবারের বইমেলায় প্রকাশিত হতে যাচ্ছে কথাসাহিত্যিক ফরিদুল ইসলাম নির্জনের উপন্যাস আগুনজনম। বিভিন্ন প্রেক্ষাপটে চিত্রায়ন করা হয়েছে উপন্যাসটি।
চোখের সামনে প্রিয়তমের লাশ জলে ভাসিয়ে দেওয়া হচ্ছে, অন্তঃসত্ত্বা নারীকে নিয়ে ছোটাছুটি নৌকায়, সাপ-ব্যাঙ, মুরগি একই ঘরের চালে। গ্রামে ছনের ঘর, পাটখড়ির ঘের সব তছনছ হয়ে গেছে। একটু আশ্রয়ের খোঁজে বিশ্বরোডে ছোট ছোট খুপড়িতে সবাই, কেউ জলের ওপর নৌকাতে, খাবারের জন্য অপেক্ষা, ঘরের ভেতর বাঁশের মাচাতে এমন অসংখ্য দৃশ্য। ১৯৮৮ সালের বন্যা বাংলাদেশের ইতিহাসে অন্যতম বেদনাদায়ক অধ্যায়। শহর-গ্রাম সবখানে জলের অভরায়ণ্য।
তারপর নব্বই দশক। বাংলাদেশের ইতিহাসে এক অবিস্মরণীয় আনন্দময় অধ্যায়। আবহমান সংস্কৃতি, ব্যান্ডসংগীত, সিনেমা, নাটক, যাত্রাপালা, খেলাধুলা, ক্যাসেট প্লেয়ারে গান শোনা, পালকিতে বিয়ে, ঢেকিতে ধান ভানা, টিউবয়েলের পানি নিতে ভোরের লাইন, আরবি শিখতে মক্তবে যাওয়ার স্মৃতিসহ অসংখ্য গল্প রয়েছে। পারস্পরিক সম্প্রতিসহ সংস্কৃতির উত্থান। গ্রাম ও শহরের দুটি পরিবারকে উপজীব্য করে এবং তার চারপাশের মানুষের গল্প নিয়ে সাজানো হয়েছে উপন্যাসটি। গ্রামের গৃহিণী সুফিয়ার স্বামী ৮৮’র বন্যায় মারা যায়। শুরু হয় জীবনপাঠে নতুন অধ্যায়, যেখানে লড়াই সংগ্রামে নিজেকে এগিয়ে নেওয়ার দৃঢ় প্রত্যয়! স্বামীহীন সংসারে দুই কন্যা নিয়ে জীবন,পরবর্তীতে কি পারে, সুফিয়া তার গন্তব্যে পৌঁছাতে?
বইটি সম্পর্কে ইত্যাদি গ্রন্থ প্রকাশ এর প্রকাশক আদিত্য অন্তর বলেন, ‘আগুনজনম এর মাধ্যমে বর্তমান প্রজন্ম অনেক কিছু জানতে পারবে। হারিয়ে যাওয়া শৈশব, নব্বই দশকের প্রেম, মানুষের জীবনযাপন সহ অসংখ্য বিষয় উঠে এসেছে। তরুণ প্রজন্মকে নতুন করে ভাবতে শেখাবে বইটি।’
বইটি সম্পর্কে লেখক বলেন, ‘আমি কথাসাহিত্যর মাধ্যমে নিজের দেশের মা-মাটিকে ধারণ করি। এই বইটির মাধ্যমে অনেক অজানা অধ্যায় তুলে এনেছি। নতুন প্রজন্মকে নতুন করে ভাবিয়ে তুলবে। বইটির মাধ্যমে হারিয়ে যাওয়া অনেক স্মৃতি চোখের সামনে ভাসবে। তাছাড়া বর্তমান সময়ে অনেক কিছু তুলে আনার চেষ্টা করেছি। বইটি নিয়ে ভীষণ আশাবাদী।’
বর্তমান সময়ের তরুণ প্রতিশ্রুতিশীল লেখক ফরিদুল ইসলাম নির্জন জন্ম ১০ অক্টোবর, ১৯৮৭ সিরাজগঞ্জ জেলায় উল্লাপাড়ায়। সরকারি বাঙলা কলেজ থেকে হিসাববিজ্ঞানে স্নাতকোত্তর শেষে আইসিএমএবিতে সিএমএ কোর্সে অধ্যয়নরত। জাতীয় দৈনিকের পাশাপাশি দেশে-বিদেশে অনলাইনেও লিখছেন সরব।
বর্তমানে দৈনিক সমকাল এর পাঠক সংগঠন সমকাল সুহৃদ সমাবেশ কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সচিব হিসেবে দায়িত্বরত। সাহিত্য বিষয়ক কাগজ ‘সুহৃদ বন্ধন’ সম্পাদনা করেছেন।
দৈনিক সমকালের পাঠক সংগঠন সমকাল সুহৃদ সমাবেশ বগুড়া জেলা সাংগঠনিক সম্পাদক থাকা অবস্থায় দেশের সেরা সংগঠন পুরস্কার-২০১১, সমকাল সুহৃদ সমাবেশ থেকে দেশের সেরা সুহৃদ একাদশ (সৃজনে) পঞ্চম স্থান, আত্মবিকাশ পাঠচক্র রচনা প্রতিযোগিতায় প্রথম স্থান, বাংলাদেশ নারী লেখক সোসাইটি থেকে গ্রন্থ সম্মাননা হিসেবে শুভেচ্ছা স্মারক-২০২২, বাসপ সাহিত্য পুরস্কার-২০২৩,অনুপ্রাণন পাণ্ডুলিপি পুরস্কার ২০২৪ (গল্প বিভাগ), বুকওয়ার্ম লেখক সম্মাননা ২০২৫ অর্জন করেন।
প্রকাশিত হয়েছে শিশু-কিশোর গল্পগন্থ ‘স্কুল মাঠে ভূতের মেলা’, রম্য গল্পের বই ‘প্রেমের নাম হাসপাতাল’ ও বড়দের ‘সে শুধু আড়ালে থাক’, উপন্যাস ‘আজো খুঁজি তারে’, ‘আশ্রয়’, ‘আপনজন’, ‘জীবনবিলাস’ এবং ‘আগুনজনম’। দৈনিক মানবকণ্ঠ ঈদসংখ্যা ’২৪-এ প্রকাশিত হয় উপন্যাস ‘পরীতমা’।
মন্তব্য করুন