এখন থেকে নিউ ইয়র্ক স্টেটে প্রতি বছরের ২৫ সেপ্টেম্বর ‘বাংলাদেশি ইমিগ্র্যান্ট ডে’ হিসেবে পালিত হবে। গত ২৭ ফেব্রুয়ারি নিউ ইয়র্ক স্টেটের রাজধানী আলবেনিতে অনুষ্ঠিত সিনেট অধিবেশনে ‘বাংলাদেশি ইমিগ্র্যান্ট ডে’ বিলটি উত্থাপিত হলে সেদিন সর্বসম্মতিক্রমে ২৫ সেপ্টেম্বর ‘বাংলাদেশি ইমিগ্র্যান্ট ডে’ হিসেবে অনুমোদন করা হয় এবং তারিখটিকে স্টেট ক্যালেন্ডারের অন্তর্ভুক্ত করা হয়। রেজ্যুলেশন নং হলো ৩২২।
সিনেট রেজ্যুলেশনে উল্লিখিত হয়েছে যে, যেহেতু ২৫ সেপ্টেম্বর ১৯৭৪ সালে জাতিসংঘের অধিবেশনে প্রথমবারের মত বাংলাদেশের স্থপতি শেখ মুজিবুর রহমান বাংলায় ভাষণ দিয়েছিলেন সেজন্য এই দিনটি নিউইয়র্কের বাংলাদেশি অভিবাসীদের কাছে অনেক গুরুত্বপূর্ণ। মুক্তধারা ফাউন্ডেশনের বিশ্বজিত সাহা ২৫ সেপ্টেম্বরকে বাংলাদেশ ইমিগ্র্যান্ট ডে ঘোষণার জন্য যে প্রস্তাব করেছেন তাতে জাতিসংঘের অধিবেশনে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক বাংলায় ভাষণের কথা সবচেয়ে গুরুত্বের সঙ্গে উল্লিখিত হয়েছে।
দিনটিকে বাংলাদেশি ইমিগ্র্যান্ট ডে ঘোষণা করার লক্ষ্যে বিশ্বজিত সাহা ২০১৬ সালের ১২ ডিসেম্বর প্রথম সিনেটর টবি অ্যান স্ট্যাভিস্কির কাছে আবেদন করেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে ২০১৭ সালের জানুযারি মাসে সিনেট অধিবেশনে এই প্রস্তাব উত্থাপিত হলে রিপাবলিকান সিনেটরদের বিরোধিতার মুখে বাতিল হয়ে যায়।
হতোদ্যম না হয়ে বিশ্বজিত সাহা ২০১৭ সালের ২০ জানুয়ারি সিনেটর হোজে পেরাল্টার সঙ্গে দেখা করে বিষয়টি তাকে জানান। সিনেটর আশ্বাস দেন এই বিষয় নিয়ে তিনি কাজ করবেন। ২০১৮ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর হোজে পেরাল্টা প্রকলেমেশনে ২৫ সেপ্টেম্বরকে ‘বাংলাদেশি ইমিগ্র্যান্ট ডে’ হিসাবে ঘোষণা করেন এবং এটি মুক্তধারা ফাউন্ডেশন আয়োজিত এন আর বি গ্লোবাল কনভেনশনে ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যানের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
----------------------------------------------------------------
আরও পড়ুন : দেশজুড়ে ভোট দিচ্ছেন ক্ষুদে শিক্ষার্থীরা
----------------------------------------------------------------
২০১৮ সালের শেষ সিনেট নির্বাচনে হোজে পেরাল্টা পরাজিত হলে এবং তার অকাল মৃত্যু ঘটলে বিশ্বজিত সাহা হতাশ হয়ে পড়েন। কারণ ইতোপূর্বে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের রেজ্যুলেশনটিও সিনেটর হোজে পেরাল্টার প্রস্তাবনায় নিউ ইয়র্কে স্টেটে পাশ হয়েছিল এবং তা স্টেট ক্যালেন্ডারের অন্তর্ভুক্ত হয়েছিল।
বিশ্বজিত সাহা হতাশ হলেও হতোদ্যম না হয়ে এরপর আরও কয়েকজন সিনেটরের সঙ্গে যোগাযোগ অব্যাহত রাখেন। এরই ধারাবাহিকতায় তিনি সিনেটর টবি অ্যান স্ট্যাভিস্কির নিকট পাঠানো হয় প্রস্তাবনাটি। এই পরিপ্রেক্ষিতে সিনেটর টবি অ্যান স্ট্যাভিস্কি ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ তারিখে আলবেনিতে অনুষ্ঠিত সিনেট অধিবেশনে এই বিলটি উত্থাপন করলে সর্বসম্মতিক্রমে ২৫ সেপ্টেম্বর তারিখটি ‘বাংলাদেশি ইমিগ্র্যান্ট ডে’ হিসেবে অনুমোদিত ও স্টেট ক্যালেন্ডারে অন্তর্ভুক্ত হয়। সেই সূত্রে এখন থেকে প্রতিবছর নিউইয়র্ক স্টেটে দিনটি পালিত হবে।
সিনেটে এই রেজ্যুলেশনটি পাসের পর তা ১২ মার্চ নিউ ইয়র্ক স্টেট গভর্নর অ্যান্ড্রু ক্যুমো ও মুক্তধারা ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা বিশ্বজিত সাহার কাছে পাঠিয়ে দেয়া হয়।
১৭ মার্চ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৯৯ তম জন্মবার্ষিকীর লগ্নে জাতির জনকের প্রতি মুক্তধারা ফাউন্ডেশনের বিনম্র শ্রদ্ধা বলে উল্লেখ করেন এর প্রস্তাবক বিশ্বজিত সাহা। তিনি আরও বলেন, আগামী ২০২১ সালে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের শত জন্মবার্ষিকী। তার আগে ২৫ সেপ্টেম্বরকে বাংলাদেশ রাষ্ট্রীয়ভাবে ‘বাংলাদেশি ইমিগ্র্যান্ট ডে’ ঘোষণা করে জাতির জনককে শ্রদ্ধা জানাবার গৌরবতম অধ্যায় হিসেবে বিবেচিত হবে বলে আমি মনে করি। বহির্বিশ্বে বসবাসরত হাজার হাজার বাঙালি ‘বাংলাদেশি ইমিগ্র্যান্ট ডে’ পালনের মধ্য দিয়ে জাতির জনক কর্তৃক বিশ্ব পরিমণ্ডলে বাংলাদেশকে তুলে ধরার ঐতিহাসিক দিনটির গুরুত্বও বহন করবে বলে ‘বাংলাদেশি ইমিগ্র্যান্ট ডে’ জানান দিবসটির উদ্ভাবক বিশ্বজিত সাহা।
উল্লেখ্য, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মদিন উপলক্ষে মুক্তধারা ফাউন্ডেশন বিগত ৩ বছর ধরে শিশু-কিশোর মেলা আয়োজন করে আসছে। আগামী ১৭ মার্চ নিউ ইয়র্কে অনুষ্ঠিতব্য শিশু-কিশোর মেলায় এই রেজ্যুলেশনটি প্রদর্শিত হবে।
আরও পড়ুন
- চার দাবিতে আমরণ অনশনে রোকেয়া হলের পাঁচ শিক্ষার্থী
- মাঝরাতে আন্দোলনরত ছাত্রীদের হেনস্থা, বহিষ্কারের হুমকি রাব্বানীর
এ