দাড়ি ছেঁড়ার ঘটনায় ছাত্রলীগ নেতাকে হল থেকে বহিষ্কার
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) মাস্টারদা সূর্যসেন হলের ক্যানটিন মালিক বকেয়া টাকা পরিশোধ করতে বলায় তাকে মারধর করে দাড়ি ছিঁড়ে ফেলার ঘটনায় শাখা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আরাফাত হোসাইন অভিকে হল থেকে বহিষ্কার করেছে হল প্রশাসন। তিন সদস্যবিশিষ্ট তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনের সুপারিশের ভিত্তিতে এই বহিষ্কারের নোটিশ প্রদান করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২২ ফেব্রুয়ারি) হল প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. জাকির হোসেন ভূঁইয়া স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য নিশ্চিত করা হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত ১২ ফেব্রুয়ারি আনুমানিক দুপুর ১টা ৩০ মিনিটে আপনি ক্যান্টিনে যেয়ে দুপুরের খাবার নিয়ে চলে যাওয়ার সময় বাকি খাতায় লিখে রাখতে বলেন। এ সময় ক্যান্টিনের ক্যাটারার মো. ফাহিম আপনার নিকট পূর্বের বাকি ২ হাজার ৬৫০ টাকা চাওয়ায় আপনি পরে পরিশোধ করবেন বলে জানান।
পরে ক্যান্টিনের ক্যাটারার তার ম্যানেজারকে বলে পরবর্তীতে আপনাকে আর বাকি খাবার না দিতে। এতে আপনি মেজাজ হারিয়ে ফাহিমের কলার চেপে ধরে অকথ্য ভাষায় গালাগালি করেন এবং চর থাপ্পড় দেন। এক পর্যায়ে আপনি ফাহিমের শার্টের কলার এবং দাড়ি ছিঁড়ে ফেলেন। ছাত্ররা আপনাদের দুইজনকে আলাদা করে দিলে আপনি পরবর্তীতে ফাহিমকে ডেকে নিয়ে শাসান এবং এই ঘটনা নিয়ে কোনোরূপ বাড়াবাড়ি না করতে বলেন।
এ ঘটনায় ক্যান্টিন ক্যাটারারের লিখিত অভিযোগের প্রেক্ষিতে গঠিত তদন্ত কমিটির প্রদত্ত রিপোর্টে ও সকল সাক্ষ্য-প্রমাণ, সিসিটিভি ফুটেজ থেকে প্রাপ্ত তথ্যাদির ভিত্তিতে আপনি দোষী হিসেবে প্রমাণিত।
এ ছাড়া গত ২০২১ সালের বিএ (সম্মান) পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ায় এবং এমএ শ্রেণিতে ভর্তি না হওয়ায় বর্তমানে আপনার ছাত্রত্বও নেই, তথাপি আপনি হলে অবৈধভাবে অবস্থান করছেন। এ ধরনের ঘটনা ঘটানো ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিধি লঙ্ঘন, মর্যাদা ও আইনের পরিপন্থি। উল্লেখিত ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে আপনার বরাদ্দকৃত সিট বাতিলসহ আগামী ২৩ ফেব্রুয়ারির মধ্যে আপনাকে হল ত্যাগের নির্দেশ প্রদান করা হলো। ভবিষ্যতে আপনাকে হলে অবস্থান করতে দেখা গেলে আপনার বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিধি মোতাবেক যথাযথ আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
আরাফাত হোসেন অভি ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের ২০১৭-১৮ সেশনের শিক্ষার্থী এবং মাস্টারদা সূর্যসেন হলে দ্বৈতাবাসিক ১৭৯ নম্বর কক্ষে থাকতেন। তিনি চুয়াডাঙ্গা জেলার দামুরহুদা থানার আরামডাঙ্গা গ্রামের মো. জুলফিকার আলীর ছেলে। অভি হল ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন। একই ঘটনার প্রেক্ষিতে তাকে ছাত্রলীগ থেকেও সাময়িক বহিষ্কার করা হয়।
মন্তব্য করুন