জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে নারী দিবসে প্রীতি সম্মিলন অনুষ্ঠিত
বর্ণাঢ্য আয়োজনে আন্তর্জাতিক নারী দিবস-২০২৪ উদযাপন করেছে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়।
শুক্রবার (৮ মার্চ) বিকেল ৪টায় রাজধানীর ধানমন্ডিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের নগর কার্যালয়ে শান্তির পায়রা ও বেলুন উড়িয়ে প্রীতি সম্মিলনের উদ্বোধন করা হয়। এ ছাড়া রাতে নারী জাগরণের গান পরিবেশন করে মোমবাতি প্রজ্জ্বলন করা হয়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. মশিউর রহমানের সভাপতিত্বে প্রীতি সম্মিলনে বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী জাহাঙ্গীর কবির নানক, সমাজকল্যাণ মন্ত্রী ডা. দীপু মনি, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী রুমানা আলী, ঢাকা-১০ আসনের সংসদ সদস্য ফেরদৌস আহমেদসহ বিভিন্ন পেশায় প্রতিষ্ঠিত নারীরা উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানে জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেন, আমাদের সকল বিজয়ের পেছনে নারীদের অবদান অনস্বীকার্য। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ৭ মার্চে যে ঐতিহাসিক ভাষণ দিয়েছেন তার পেছনেও রয়েছেন তার সহধর্মিনীর অনুপ্রেরণা। ওই সময় অনেকেই অনেক পরামর্শ দিয়েছেন বিভিন্ন রকমের বক্তব্য দেওয়ার জন্য। কিন্তু বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন নেছা মুজিব যেটি বলেছেন তিনি সেটিই করেছেন। আজকে সমাজে নারীরা অনেক এগিয়ে রয়েছেন। বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার হাত ধরে নারী আজ সাফল্যের শীর্ষে রয়েছেন।
ডা. দীপু মনি বলেন, নারীরা আজ সকল ক্ষেত্রে সাফল্য দেখাচ্ছেন। পাইলট থেকে শুরু করে রাষ্ট্রের সকল ক্ষেত্রে নারীরা এগিয়ে যাচ্ছেন। এখন সমাজে নারীদের সঙ্গে সমঝোতা করে এগোতে হয়। তারা আর পিছিয়ে নেই। বঙ্গবন্ধুকন্যার হাত ধরে নারীরা এগিয়ে যাচ্ছেন। পৃথিবীতে এমন কোনো কিছু নেই যেটা নারী ছাড়া হয়। আমাদের নারীদেরকে হাত ধরে এগিয়ে দিয়েছেন একজন শেখ হাসিনা। এখন আমাদের কাজটা করে যেতে হবে। ছোট বেলা থেকে আমাদের চারপাশে শক্ত-পোক্ত যে দেয়ালগুলো তৈরি করা হয়েছে, সেগুলো ভেঙে চুড়ে বের হয়ে আসতে হবে। প্রযুক্তি নারীকে শিখতেই হবে। কারণ এই বিশ্বটাতেও নারীকে নিজের জায়গা করে নিতে হবে। নারী-পুরুষ সকল মানুষের বৈষম্য দূর করতে চেয়েছিলেন বঙ্গবন্ধু। বঞ্চনাহীন, শোষণহীন একটি বাংলাদেশ তৈরি করতে চেয়েছিলেন তিনি। তার প্রতি এই নারী দিবসে শ্রদ্ধা।
প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী রুমানা আলী বলেন, নারী-পুরুষের সমান অধিকারের বিষয়টি পরিবার থেকেই শিখাতে হবে। পারিবারিক শিক্ষালয়ে যদি আমরা এ বিষয়ে যুক্ত করতে পারি তাহলে সকলের মধ্যে এই ধারণা ছোট বেলা থেকেই তৈরি হবে যে, কোনো বৈষম্য নয়। সকলে মিলে আমরা এই সমাজকে গড়ে তুলব। সহযোগিতার মনোভাব নিয়ে আমরা এগিয়ে যাব।
সভাপতির বক্তব্যে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. মশিউর রহমান বলেন, সামাজিক অনুশাসনের বহু কিছু যখন ভেঙে পড়ে, তখন নারী শাসন-স্নেহের সমাজের অগ্রসরতা ও উন্নয়নের পথ দেখায়। সুতরাং নারীর ভূমিকা যে শুধু মাতৃত্বে সেটি নয়। নারীর ভূমিকা আজ নেতৃত্বে, সৃজনশীলতায় ও দক্ষতায় সুপ্রতিষ্ঠিত। আমাদের নারী দিবসের বার্তা হবে সমভাবে ক্ষমতায়ন নয়, বরং নারী যেন আরও অধিক ক্ষমতায়িত হয়। তাহলে সমাজ আরও বেশি অগ্রসর হবে। আমরা নারী-পুরুষ ভেদাভেদের মধ্যদিয়ে নয় বরং মানুষ হিসেবে সহযাত্রীর পথকে অবারিত করে যেন মুক্ত পৃথিবী, আধুনিক বাংলাদেশ, অগ্রসর সমাজ তৈরি করতে পারি।
নারী দিবসের আয়োজনে অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন সংসদ সদস্য সানজিদা খানম, কোহেলী কুদ্দুস মুক্তি, অপরাজিতা হক, বাংলাদেশ পাবলিক সার্ভিস কমিশনের চেয়ারম্যান মো. সোহরাব হোসাইন, বিশিষ্ট সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব রামেন্দু মজুমদার, বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের সদস্য অধ্যাপক ড. হাসিনা খান, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. ফারজানা ইসলাম, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেমোরিয়াল ট্রাস্টের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মাশুরা হোসেন, একাত্তর টেলিভিশনের প্রধান সম্পাদক মোজাম্মেল বাবু, আমাদের অর্থনীতির ও আমাদের নতুন সময় পত্রিকার সম্পাদক নাসিমা খান মন্টি, অধ্যাপক ডা. নুজহাত চৌধুরী, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য মারুফা আক্তার পপি, রাজনৈতিক বিশ্লেষক সুভাষ সিংহ রায়, বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য প্রফেসর ড. নাসিমা বানু, উপ-উপাচার্য প্রফেসর ড. মাহবুবা নাসরিনসহ দেশের বিভিন্ন পেশায় প্রতিষ্ঠিত নারী নেতৃত্ব।
এছাড়া জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন অনুষদের ডিন, দফতর প্রধান, শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারীবৃন্দ এ আয়োজনে উপস্থিত ছিলেন।
মন্তব্য করুন