বিড়ালের উপদ্রবে অতিষ্ঠ নোবিপ্রবির বঙ্গমাতা হলের ছাত্রীরা
বিড়ালের আক্রমণ ও উপদ্রবে আতঙ্কিত হয়ে দিন পার করছে বলে অভিযোগ নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (নোবিপ্রবি) বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলের আবাসিক শিক্ষার্থীদের।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, সম্প্রতি হলের একাধিক শিক্ষার্থী বিড়ালের কামড়ের শিকার হয়েছেন। বিড়াল গুলো ভ্যাকসিনেটেড না হওয়ায় টিকা নিতে হয়েছে কামড় ও আছড়ের শিকার হওয়া শিক্ষার্থীদের। বিড়াল রেবিস ভাইরাসের বাহক হওয়ার সম্ভাবনা থাকাই বাকি শিক্ষার্থীরাও আতঙ্কে দিন পার করছেন।
শিক্ষার্থীরা জানায়, পোষা প্রাণীর মধ্যে বিড়াল অন্যতম। বিড়ালের বন্ধুসুলভ আচরণ ও বিভিন্ন উপকারিতার কারণে অনেকেই বিড়াল পোষেন শিক্ষার্থীরা। আবার অনেকে শখ করে আদর-যত্ন দিয়ে বিড়াল লালন-পালন করেন। তবে নোবিপ্রবির বঙ্গমাতা হলে বিড়ালের উৎপাতে নানান যন্ত্রণা পোহাতে হচ্ছে বলে জানান শিক্ষার্থীরা।
খোঁজ নিয়ে আরও জানা যায়, গত দু-সপ্তাহ ধরে বিড়ালের অত্যাচার অসহনীয় হয়ে উঠেছে। কোন সময় খাবারে মুখ দিয়ে খাবার নষ্ট করে আবার কোন সময় বিছানার ওপর মলমূত্র ত্যাগ করে। এছাড়াও গায়ের ওপর দিয়ে চলে যাওয়া, বাজার-তরকারি নষ্ট করা, প্রার্থনা কক্ষ নোংরা করা সহ আরও নানান সমস্যার সৃষ্টি করেছে। যা নিয়ে হলের শিক্ষার্থীদের মাঝে চরম অসন্তোষ কাজ করছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক শিক্ষার্থী তাদের এই অসন্তোষের কথা জানিয়েছে। হলটির এক শিক্ষার্থী বলেন, রাতে আমি ঘুমাচ্ছিলাম। গরমের কারণে জানালা একটু খোলা ছিল। হঠাৎ ঘুম ভেঙে দেখি বিড়াল ঠিক আমার গায়ের উপরে। যেহেতু আমি ঘুমে ছিলাম আমি ভয় পেয়ে হাত নাড়া দেই। তাতে বিড়াল আমাকে আঁচড় ও কামড় দিয়ে চলে যায়। এখন ভ্যাক্সিন দিতে হবে। বিড়ালের কামড়ে ৬টা ভ্যাক্সিন নিতে হয়। এক সপ্তাহ আগে রুমমেট আপুর বিড়ালের কামড়ে ভ্যাক্সিন নিতে হয়েছে। আমারা আরও কিছু ফ্রেন্ড এই হলেরই ক-দিনের মধ্যেই এই বিড়ালের কারণে ভ্যাক্সিন নিয়েছে। একটার পর একটা ল্যাব, সিটি দিতে হচ্ছে। যেহেতু সেমিস্টারের আগের মাস। এর মধ্যে বিড়ালের কামড়ের জন্য এখন আমাকে ভুগতে হচ্ছে।
বিড়ালের এই ভোগান্তি থেকে বাঁচতে তারা হল প্রশাসনের নিকট অনুরোধ করেছেন। শিক্ষার্থীরা জানায় দ্রুত এই সমস্যার সমাধান না হলে বিড়ালগুলো আরও বেশি ক্ষতি করতে পারে। তাই বিড়ালগুলোকে হল থেকে অন্যত্র স্থানান্তরের দাবি জানান তারা।
এ বিষয়ে বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলের প্রভোস্ট ড. মোহাম্মদ মহিনুজ্জামান বলেন, বিড়াল আগে আমাদের হলের অনেক মেয়েরা পালতো, বিষয়টি জানার পর আমি নোটিশ দিয়েছিলাম কেউ পোষা কোনো প্রাণী পালতে পারবে না। এরপরও কেউ কেউ পালতো। তবে সম্প্রতি ঘটনাগুলোর কারণে আমি ইতোমধ্যে নোটিশ দিয়েছি। কারও কাছে কোনো পোষা প্রাণী যদি পাওয়া যায় আমরা তার বিরুদ্ধে আইনত ব্যবস্থা নেব। যেহেতু আগের বিড়ালগুলো অনেকগুলো বাচ্চা দিয়েছে তাই আমি স্টাফদের বলেছি বিড়ালগুলো ধরে নিয়ে গিয়ে অনেকদূরে কোথাও রেখে আসতে। সেটার অভিযান শুরু হয়েছে। আশা করছি আমাকে কয়েকদিন সময় দিলে আমরা বিড়ালগুলোকে হল থেকে বের করতে পারবো।
মন্তব্য করুন